প্রতি বছর নভেম্বর মাসের তৃতীয় বুধবার পালন করা হয় বিশ্ব সিওপিডি দিবস। এই দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য হল সিওপিডি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা। ২০২৪ সালে বিশ্ব সিওপিডি দিবস পালন করা হচ্ছে ২০ নভেম্বর। ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি ফুসফুসের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুতর রোগ যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। এই রোগটি প্রধানত দুটি অবস্থার কারণে হয় - এমফিসেমা এবং ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস। এমফিসেমায় ফুসফুসের অ্যালভিওলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। অন্যদিকে দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিসে, ফুসফুসের টিউবগুলি স্ফীত হয় এবং ক্রমাগত শ্লেষ্মা তৈরি হয়।
২০০২ সাল থেকে পালন করা শুরু হয় বিশ্ব সিওপিডি দিবস। বিশ্বব্যাপী চিকিৎসক এবং সিওপিডি রোগীদের সহযোগিতায় দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগের জন্য গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ দ্বারা চালু করা হয় এই দিনটি। সিওপিডি প্রতিরোধ করা সম্ভব, তবে এর জন্য এই রোগের ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিওপিডি-এর পুরো নাম ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসের টিউবগুলি ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হয়ে যায়। এতে ফুসফুসে বাতাসের চলাচল কমে যায়, যার কারণে শ্বাসকষ্ট, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। সিওপিডি-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের দৈনন্দিন কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
সিওপিডি-র লক্ষণগুলো হল শ্বাসকষ্ট, ক্রমাগত কাশি, কফ, ক্লান্তি এবং ওজন কমে যাওয়া। সিগারেট খাওয়া সিওপিডি-র সবচেয়ে বড় কারণ। দূষিত বায়ুতে দীর্ঘক্ষণ শ্বাস নেওয়ার ফলেও হতে পারে সিওপিডি। কিছু রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসার কারণে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়া পারিবারিক ইতিহাসের কারণে সিওপিডি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। সিওপিডির কোনও নিরাময় নেই, তবে কিছু পদ্ধতি এই রোগের উপসর্গ কমাতে পারে এবং রোগের অগ্রগতি রোধ করতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ নেওয়া যেতে পারে।
সিওপিডির গুরুতর ক্ষেত্রে, অক্সিজেন থেরাপি অবলম্বন করতে হতে পারে। পালমোনারি পুনর্বাসন একটি ব্যায়াম, যা শ্বাস নিতে এবং শারীরিক কার্যকলাপ সহ্য করতে সহায়তা করে। কিছু ক্ষেত্রে, এই রোগের চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। সিওপিডি প্রতিরোধ করতে কিছু বিষয়ের যত্ন নেওয়া যেতে পারে। সিওপিডি প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায় হল ধূমপান ত্যাগ করা। এছাড়া যতটা সম্ভব দূষিত বাতাসে শ্বাস নেওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবারও ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে খুবই সহায়ক হতে পারে। ফুসফুসকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত ব্যায়ামও করা যেতে পারে।