অ্যান্টিবায়োটিক(antibiotic), ডাক্তারের কাছে গিয়ে এটুকু শুনতে পেলেই আমরা কেমন যেন নিশ্চিন্ত বোধ করি। মনে হয়, বেশ তো এই ওষুধ খাব আর সুস্থ হয়ে যাব। অফিস কামাই করা দরকার পড়বে না। ছুটিটাও বেঁচে যাবে। দুদিনের জ্বরে বাড়িতে থেকে সুস্থ হওয়ার কথা আমরা আজ আর ভাবতেই পারি না। আর এই ঘটনাই ডেকে আনছে মৃত্যুকে। কেটে গিয়ে ইনফেকশন হয়েছে। চটজলদি ডাক্তারবাবুকে দেখিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে নিন। মুহূর্তে ব্যাথা গায়েব আপনি সুস্থ হয়ে গেলেন। অথচ বুঝতেই পারলেন না, একের পর এক এই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েই কীভাবে মৃত্যুকে কাছে ডাকছেন।
গবেষণা বলছে, এখন আর ৭০ শতাংশ ব্যকটেরিয়া ঘটিত রোগ সারে না অ্যান্টিবায়োটিকে। অথচ ব্যাকটিরিয়া থেকে সংক্রমণ হলে তো অন্য কোনও উপায়ও নেই। তখন ওই সংক্রমণটিই চরম আকার ধারণ করছে। অ্যান্টিবায়োটিক থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে চলা ব্যাকটিরিয়ারা মোট পাঁচ ধরণের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে মত চিকিৎসকদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি থেকে রোগী আক্রান্ত হন হাসপাতালের ভিতরে। এমন অনেক সংক্রমণ রয়েছে যেখানে অ্যান্টিবায়োটিকই শেষ কথা, সুপারবাগ(Super Bag) সেই অ্যান্টিবায়োটিককে নিস্ক্রিয় করে দিচ্ছে।
এই সুপার বাগ একদিন আপনাকে আমাকেও খেয়ে ফেলবে। সেদিন চেষ্টা করেও আর অ্যান্টিবায়োটিকে রোগ সারবে না। তখন কী ভয়ানক বিপদ আমদের জন্য অপেক্ষা করবে বুঝতে পারছেন তো। সোজা কথায় ব্যাখ্যা করলে বলা যায়, অবৈজ্ঞানিক ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে শরীর হারাচ্ছে জীবাণুর সঙ্গে যুঝে যাওয়ার ক্ষমতা। তাই আজকাল ভাইরাল ফিভার থেকে শুরু করে একটু অচেনা ব্যাকটিরিয়ার হানা রুখতে পারছে না শরীর, মৃত্যু পর্যন্ত ঘটছে।
‘ল্যান্সেট ম্যাগাজিন ইনফেকশস ডিজিজেস’ নামে একটি রিপোর্টে জানাচ্ছে যক্ষ্মা বা এইচআইভি-এর থেকে কিছু কম ভয়ঙ্কর নয় এই রোগ। এবং শুধু ইউরোপ নয়, সারা বিশ্বেই ধীরে ধীরে থাবা বসাচ্ছে এই রোগ। ভারতেও প্রায় প্রতি বছরই এমন কিছু ব্যাকটিরিয়াঘটিত অসুখের দেখা মেলে, যা প্রায় কোনও অ্যান্টিবায়োটিকেই আয়ত্তে আসে না। এই সুপারবাগ ডেকে আনতে পারে বিপদ।