দুধ দৈনন্দিন খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় এটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক, যেকোনও বয়সের মানুষের জন্য খুবই উপকারী। দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি হাড় মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধারণত গরুর দুধ না মহিষের দুধ কোনটি বেশি ভালো তা নিয়ে বিভ্রান্তি হয়। কেন্দ্রীয় পশুপালন মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, বেশিরভাগ মানুষ গরুর দুধ পছন্দ করে, এর কারণ হচ্ছে গরুর দুধ হালকা এবং এতে চর্বি কম থাকে, যা সহজে হজম হয়। অন্যদিকে মহিষের দুধ ঘন এবং প্রায়ই চা বা কফিতে ব্যবহৃত হয়।
গরু এবং মহিষ উভয় প্রাণীর দুধ পান করার জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে এই দুটি দুধের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। মহিষের দুধ এবং গরুর দুধে প্রোটিন পাওয়া যায়। তবে গরুর দুধের তুলনায় মহিষের দুধে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। গরুর দুধে জলের পরিমাণ বেশি থাকায় তা পাতলা, যেখানে মহিষের দুধ ঘন ও ক্রিমি। গরুর দুধের চেয়ে মহিষের দুধে বেশি চর্বি থাকে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়ামের মতো পুষ্টির একটি ভালো উৎস মহিষের দুধ। একই সময়ে, গরুর দুধ ভিটামিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস।
রঙের দিক থেকে গরুর দুধ সামান্য হলুদ-সাদা এবং মহিষের দুধ ক্রিমি সাদা হয়। গরু ও মহিষ উভয়ের দুধেই প্রচুর পুষ্টি থাকে। প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উভয় ধরনের দুধেই পাওয়া যায়, তবে পরিমাণে সামান্য পার্থক্য থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ১০০ মিলি গরুর দুধে প্রায় ৩.২ গ্রাম প্রোটিন, ৪.৪ গ্রাম চর্বি, ৪.৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১১৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে এবং মহিষের দুধে ৩.৬ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৬ গ্রাম চর্বি, ৮.৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১২১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
উভয় ধরনের দুধেই ল্যাকটোজ থাকে, গরুর দুধে ৪.২৮ গ্রাম এবং মহিষের দুধে ৪.১২ গ্রাম। মহিষের দুধে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ল্যাক্টোগ্লোবুলিন এবং পটাসিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া গরুর দুধের তুলনায় মহিষের দুধে কম কোলেস্টেরল থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা এবং স্থূলতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প। তবে গরুর দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা হাড়কে মজবুত করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।