পিন্ডজ প্রভাররুধা চন্ডকোপাস্ত্রকৈরুতা।

প্রসাদম তনুতে মহ্যম চন্দ্রঘণ্টেতি বিশ্রুতা।

আজ শারদ নবরাত্রির তৃতীয় দিন,  নবরাত্রির নয় দিন ধরে মা দুর্গার বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। নবরাত্রির তৃতীয় দিনে আজ পূজিত হবেন দেবী চন্দ্রঘণ্টা। দেবীর নয়টি রূপের মধ্যে, মায়ের এই রূপটি ভদ্রতা এবং শান্তির প্রতীক। চন্দ্রের মতো মায়ের এই রূপের মধ্যে দিব্য সুগন্ধি ও দিব্য ধ্বনি অনুভূত হয়। মা চন্দ্রঘণ্টার রূপ অত্যন্ত শান্তিময় ও কল্যাণকর। মা চন্দ্রঘণ্টার পুজো -অর্চনা করলে আধ্যাত্মিক শক্তি পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়।

মা চন্দ্রঘণ্টার এই রূপ অত্যন্ত শান্তিময় ও শুভ। সিংহ তাঁর বাহন। দেবীর কপালে একটি বালিঘড়ি আকৃতির অর্ধচন্দ্র শোভা পাচ্ছে। তাই তাঁকে চন্দ্রঘণ্টা বলা হয়। এই দেবী দশ হাতে সুশোভিত এবং খড়্গ, ত্রিশূল, ধনুক, গদা এবং অন্যান্য অস্ত্রে বিভূষিত। ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, মা চন্দ্রঘণ্টা অসুরদের বধ করার জন্য অবতারণ করেছিলেন। তার মধ্যে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ এই তিন দেবতার শক্তি অন্তর্ভুক্ত।

 

পুরাণকথা অনুসারে, রম্ভাসুরের ছেলে মহিষাসুরের অত্যচারে যখন ত্রিভুবন কম্পিত তখন দেবতারা ছুটে গেলেন ত্রিদেব, মানে ব্রহ্মা, বিষ্ণু মহেশ্বরের কাছে। তাদের শরীরের তেজ থেকে জন্ম নিলেন দশবাহু বিশিষ্ট এক অপরূপা দেবী। ইনিই আদ্যাশক্তি মহামায়া। দেবীকে যুদ্ধের সাজে সাজিয়ে তুললেন দেবতারা। কেউ দিলেন বস্ত্র, কেউ দিলেন অলংকার, কেউ দিলেন অস্ত্র, আবার কেউ দিলেন বাহন। দেবতাদের রাজা ইন্দ্র তাঁর হাতে তুলে দিলেন ঐরাবতের ঘ্ণটা। যুদ্ধের প্রাকমুহূর্তে দেবীর হাতে ভীষণ শব্দে বেজে উঠল সেই ঘণ্টা। প্রলয়ের আহ্বানের মতো সেই ঘণ্টাধ্বনি শুনে রক্ত জল হয়ে গেল অসুরকুলের। অত্যাচারী দানব দল ভয়ে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পালাতে লাগল। দুর্গার এই বিশেষ রূপই পূজিতা হন দেবী চন্দ্রঘণ্টা নামে। (Devi Chandraghanta)

এটা বিশ্বাস করা হয় যে দেবী চন্দ্রঘণ্টা সোনালি বা হলুদ রং পছন্দ করেন। তাই এই দিনে ভক্তরা সাধারণত এই রঙের পোশাক দিয়ে মায়ের মূর্তি সাজান। এর পাশাপাশি মা চন্দ্রঘণ্টার পুজো করার সময় সোনালি বা হলুদ রঙের পোশাক পরা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। মা চন্দ্রঘণ্টাকে দুধ, ক্ষীর ও মাখনের তৈরি মিষ্টি নিবেদন করা যেতে পারে। মা চন্দ্রঘণ্টাকে সাদা পদ্ম ও হলুদ গোলাপের মালা অর্পণ করা শুভ বলে মনে করা হয়। এতে মা প্রসন্ন হন এবং সমস্ত দুঃখের বিনাশ করেন।