তামিল সম্প্রদায়ের দ্বারা পালিত একটি উৎসব হল থাইপুসাম। এই উৎসব যুদ্ধ ও বিজয়ের হিন্দু দেবতা ভগবান মুরুগান (ভগবান কার্তিক) কে উৎসর্গীকৃত। এই উৎসবে সাধারণত প্রচুর জনসমাগম হয়, যা ঐক্য এবং শান্তির পরিবেশ তৈরি করে। এই উৎসবটি মন্দের উপর ভালোর জয়ের প্রতীক, যা একটি শক্তিশালী অসুরের উপর মুরুগানের বিজয়ের প্রতীক। 'থাইপুসাম' শব্দটি দুটি শব্দের সংমিশ্রণ, 'থাই' হল তামিল মাসের নাম এবং 'পুসাম' হল নক্ষত্রের নাম। তামিল থাই মাসে পুসাম নক্ষত্রটি সর্বোচ্চ স্থানে থাকার কারণে পালন করা হয় থাইপুসাম।
প্রতি বছর হিন্দু চন্দ্র ক্যালেন্ডারের তামিল মাস 'থাই'-এর পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় থাইপুসাম উৎসব। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জানুয়ারির শেষের দিকে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে পালন করা হয় থাইপুসাম। ২০২৫ সালে থাইপুসাম পালন করা হবে ১১ ফেব্রুয়ারি। থাইপুসাম উৎসব উৎসর্গ করা হয় ভগবান শিব এবং দেবী পার্বতীর পুত্র ভগবান মুরুগানকে। এই দিনে নেতিবাচক শক্তির উপর ঈশ্বরের জয়কে সম্মান করা হয়। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মরিশাস এবং শ্রীলঙ্কা বা দক্ষিণ আফ্রিকার আশেপাশের তামিলভাষী সম্প্রদায় উৎসাহের সঙ্গে পালন করে থাইপুসাম উৎসব।
থাইপুসাম উৎসবের পেছনে রয়েছে আকর্ষণীয় ইতিহাস। হিন্দু পৌরাণিক গ্রন্থ 'স্কন্দ পুরাণ'-এ সূর্যপদ্মন নামে এক অসুরের কথা উল্লেখ আছে। তিনি এতটাই শক্তিশালী ছিলেন যে সমস্ত দেবতাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার পরেও কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারত না। তিনি তার শক্তিশালী শক্তি দিয়ে ভগবান মুরুগানকে আক্রমণ করেছিলেন। তবে দেবী পার্বতীর দেওয়া ঐশ্বরিক বর্শা দিয়ে মন্দকে পরাজিত করেছিলেন ভগবান মুরুগান। এরপর ময়ূরে চড়ে ভক্তদের সামনে হাজির হন তিনি। অসুরের মৃত্যুর সঙ্গে ব্রহ্মাণ্ডে শান্তি লাভ করেন দেবতারা। তারপর থেকে মানুষ পালন করা শুরু করে থাইপুসাম উৎসব।