
ভারত কেবল দেবতাদেরই নয়, সাধু-ঋষিদেরও ভূমি, এমনই একজন মহান সাধক ছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংস, যাকে মা কালীর পরম ভক্ত বলা হয়। স্বামী বিবেকানন্দেরও গুরু ছিলেন তিনি। স্বামী রামকৃষ্ণ সর্বদা নিরাকার ঈশ্বরের উপাসনার উপর জোর দিতেন। তিনি আধ্যাত্মিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক সংস্কার সম্পর্কিত অনেক উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। রামকৃষ্ণ পরমহংসের জন্ম হয় ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার কামারপুকুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম ছিল ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং মাতার নাম ছিল চন্দ্রমণি দেবী। তাঁর আসল নাম ছিল গদাধর চট্টোপাধ্যায়।
১৮৩৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, গদাধর চট্টোপাধ্যায় নামে জন্মগ্রহণকারী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস ছিলেন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক নেতা। তবে হিন্দু চন্দ্র পঞ্জিকা অনুসারে, ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালন করা হয় তাঁর জন্মবার্ষিকী। তিথি অনুযায়ী ২০২৫ সালে তাঁর জন্মবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে ০১ মার্চ। শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস বিশ্বাস করতেন যে মানবতার সেবা করা ঈশ্বরের উপাসনার সমান এবং শিক্ষা দিয়েছিলেন যে মানব জীবনের লক্ষ্য হল ঈশ্বরকে উপলব্ধি করা। রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিক্ষা বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, মানুষকে বিশ্বাস, নম্রতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে বেঁচে থাকার কথা মনে করিয়ে দেয়।
শ্রী রামকৃষ্ণের প্রেম, ভক্তি এবং আত্ম-উপলব্ধির উপর বিশ্বাস করেতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে সকল ধর্ম একই পরম সত্যের দিকে পরিচালিত করে এবং মানুষকে বিভিন্ন ধর্মীয় ঐতিহ্যকে সম্মান করতে এবং শিক্ষা নিতে উৎসাহিত করে। তিনি বাংলায় হিন্দু ধর্মের পুনরুজ্জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং স্বামী বিবেকানন্দ সহ অনেক অনুসারীকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, যিনি পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী তাঁর শিক্ষা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মিশন বিশ্বব্যাপী আধ্যাত্মিক নির্দেশনা এবং মানবিক সেবা প্রদান করে চলেছে। বইয়ের জ্ঞানের সঙ্গে আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতায় বিশ্বাস করতেন তিনি। ১৮৮৬ সালের ১৬ আগস্ট গলার ক্যান্সারের কারণে ৫০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় রামকৃষ্ণ পরমহংসের।