মুসলমানদের একটি জাতি হল বোহরা মুসলমান, যারা অনুসরণ করে শিয়া সম্প্রদায়ের আদর্শ। এই সম্প্রদায়ের মানুষ সাধারণত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকে। ভারতে বোহরা মুসলমানদের জনসংখ্যা ২০ লক্ষেরও বেশি, যার মধ্যে ১৫ লক্ষ হল দাউদি বোহরা। ১১ শতকে, মুস্তালি সম্প্রদায় ধর্মীয় প্রচারকদের মাধ্যমে বোহরা জাতির আগমন হয় ভারতে। ১৫৩৯ সালের পর ভারতে এই সম্প্রদায় বড় হয়ে ওঠে, তখন এই সম্প্রদায়ের সদর দপ্তর ইয়েমেন থেকে স্থানান্তরিত হয় ভারতের সিধপুরে। এরপর ১৫৮৮ সালে দাউদ বিন কুতুব শাহ ও সুলেমানের অনুসারীদের কারণে বিভক্ত হয়ে যায় বোহরা সম্প্রদায়, তবে তাদের ধর্মীয় নীতিতে কোনও উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আসে না।
দাউদি বোহরা অনুসরণ করে শিয়াদের আদর্শ। দাউদি বোহরা প্রথম আসে মুম্বাইয়ে। বর্তমানে তারা ছড়িয়ে রয়েছে মুম্বাই, পুনে, মহারাষ্ট্রের নাগপুর, উদয়পুর, রাজস্থানের ভিলওয়ারা, সুরাট, রাজকোট, আহমেদাবাদ, জামনগর, গুজরাটের দাহোদ, মধ্যপ্রদেশের উজ্জাইন, ইন্দোর, শাজাপুরের মতো শহরে। বোহরা সম্প্রদায় একটি সাধারণ রান্নাঘর চালায়, সেখানে তৈরি খাবার একবেলার জন্য প্রত্যেক বোহরা সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। মুসলমানদের এই সম্প্রদায়টি বেশ সমৃদ্ধ এবং শিক্ষিত হয়। বোহরা সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ ব্যবসা করে অথবা কৃষিকাজ করে।
দশম থেকে দ্বাদশ শতকের সময়কালে ইসলাম তার শাসনকালে জ্ঞান, বিজ্ঞান, স্থাপত্য, শিল্প, সাহিত্য অর্জন করে ইসলাম ধর্মকে সমৃদ্ধ করেছে, বর্তমান যুগে যা মানব সভ্যতার মূল্যবান সম্পদ। সর্বদা ইমামদের নির্দেশ পালন করে দাউদি বোহরা। বোহরা সম্প্রদায়ের ২১ তম এবং শেষ ইমাম ছিলেন তৈয়ব আবুল কাসিম। এরপর ১১৩২ সাল থেকে আধ্যাত্মিক গুরুদের ঐতিহ্য শুরু হয়, সুফি ও মাজারের প্রতি অটুট বিশ্বাস রয়েছে বোহরা সম্প্রদায়ের মানুষের। ইসমাইলি শিয়া সম্প্রদায়ের একটি উপ-সম্প্রদায় হল দাউদি বোহরা সম্প্রদায়। খুবই শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির হয় দাউদি বোহরা সম্প্রদায়।