Durga Puja 2019: নবপত্রিকা সম্পর্কে আপনি যা জানতেন সব মিথ্যে; গণেশের স্ত্রী নন, কলা বৌ আসলে গজাননের মা
(Photo Credits: wikimedia commons)

সনাতন দুর্গা (Maa Durga) প্রতিমার সঙ্গে গণেশ (Lord Ganesha) মূর্তির ডান পাশে থাকে লাল পাড়-সাদা শাড়িতে ঢাকা একটি কলা গাছ (Banana Tree)। যা কলা বৌ (Kola Bou) নামে পরিচিত। সাধারণভাবে আমরা এটিকে গজাননের স্ত্রী (wife) হিসেবেই জানি। একে নবপত্রিকাও (Nabapatrika) বলা হয়। দুর্গা পূজোর প্রথম দিন সপ্তমী (Saptami)। এদিন সকালে পুরোহিত নবপত্রিকা সঙ্গে নিয়ে নদী (River) বা পুকুরে (Pond) স্নান (Bath) করাতে নিয়ে যান। সঙ্গে যান মহিলারা। তাঁরা উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি করতে করতে এবং ঢাকিরা ঢাক বাজাতে বাজাতে সঙ্গে যান। তবে জানেন কী এই কলা বৌ আদতে গণেশের স্ত্রী নন। বরং জানলে অবাক হবেন, ইনি স্বয়ং মা দুর্গা। অর্থাৎ গণেশের জননী। গণেশের স্ত্রীর নাম রিদ্ধি ও সিদ্ধি (Riddhi and Siddhi)।

শ্রী সমীরেশ্বর ব্রহ্মচারীর (Sri Samireswar Brahmachari) কথা অনুযায়ী, কলা গাছে অধিষ্ঠান করেন দেবী ব্রহ্মাণী (Devi Brahmvani)। তিনি সৃষ্টির শক্তি। কলা গাছও সৃজনশীল। কারণ কলা গাছ কেটে ফেললেও পরের দিন দেখা যায়, সে আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। আর দেবী ব্রহ্মাণী হলেন মা দুর্গার আরেক রূপ। তাই হিসেব মত কলা বৌ হলেন গণেশের মা দেবী দুর্গা। কলা বৌ বা নবপত্রিকা স্নানের জন্য লাগে তেল-হলুদ, অষ্টকলস, পঞ্চরত্নের জল, পঞ্চ অমৃত, পঞ্চ শস্য, পঞ্চ গব্য, পঞ্চ কষায়, বৃষ্টির জল, ডাবের জল, শিশির, সমুদ্রের জল, তীর্থের জল, আখের রস, বরাহদন্ত মাটি , বেশ্যাদ্বার মাটি , সর্ব ঔষধি, মহা ঔষধি, চতুষ্পদ মাটি , পদ্মরেণু, চন্দন। শাস্ত্রবিধি অনুযায়ী, স্নান করানোর পর নবপত্রিকাকে নতুন শাড়ি পরানো হয়। তারপর পুজো মণ্ডপে নিয়ে এসে দেবীর ডান দিকে একটি কাঠের সিংহাসনে স্থাপন করা হয়। মণ্ডপে নবপত্রিকা প্রবেশের মাধ্যমে প্রথাগতভাবে দুর্গা পুজোর মূল অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। এরপর বাকি দিনগুলিতে নবপত্রিকা অন্য দেবদেবীদের সঙ্গেই পূজিতা হতে থাকেন। আরও পড়ুন- Durga Puja 2019: আজ মহাষষ্ঠী; জানেন এই দিনটির তাৎপর্য ? জানা না থাকলে ষষ্ঠীর সকালেই জেনে নিন এক ক্লিকে

(Photo Credits: wikimedia commons)

নবপত্রিকার আক্ষরিক অর্থ হল ৯টি পাতা (9 Leaves)। ৯টি উদ্ভিদের (9 Tree) থেকে ৯ রকম পাতা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। কলা গাছ, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান প্রভৃতি ৯ রকম উদ্ভিদের পাতা সংগ্রহ করে নবপত্রিকা বানানো হয়। এই ৯টি উদ্ভিদ মা দুর্গার ৯টি শক্তির প্রতীক। একটি সপত্র কলাগাছের সঙ্গে অন্য ৮টি সপত্র উদ্ভিদ ও ২টি বেল এক সাথে সাদা অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লাল পাড় সাদা শাড়ি পড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে বধূর আকার দেওয়া হয়। তারপর তাতে সিঁদুর দিয়ে দুর্গার ডান পাশে রাখা হয়। এই ৯টি গাছে ৯ দেবী অধিষ্ঠান করেন। তাঁরা হলেন- কলা গাছে দেবী ব্রহ্মাণী, কচু গাছে দেবী কালিকা, হলুদ গাছে দেবী উমা, জয়ন্তী গাছে দেবী কার্ত্তিকী, বিল্ব গাছে দেবী শিবা, দালিম গাছে দেবী রক্তদন্তিকা, অশোক গাছে দেবী শোকরহিতা, মান গাছে দেবী চামুন্ডা ও ধান গাছে দেবী লক্ষ্মী।