
বেঙ্গালুরু, ১ জুনঃ নির্ধারিত সময়ের আগেই বর্ষা এসে হাজির হয়েছে কেরলে (Kerala)। ভারতের মধ্যে দক্ষিণের এই রাজ্যেই সবার আগে বর্ষার আগমন ঘটে। কেরলে বর্ষা ঢুকতেই কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, সিকিম, অসম-সব ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঝেপে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত রাজ্যের মানুষেরা। প্রাক বর্ষার বৃষ্টিতে প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah) জানান, এপ্রিল থেকে রাজ্যে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে ৭১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সংখ্যাটা নেহাতই কম নয়।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে মে মাসে কর্ণাটকে প্রাক বর্ষায় যে সাংঘাতিক পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে তা গত ১২৫ বছরে দেখা যায়নি। ২০২৫ সালের মে মাসের বৃষ্টিকে কর্ণাটকে সর্বোচ্চ বলা চলে। রাজ্যে সাধারণত মে মাসে ৭৪ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। সেখানে চলতি বছর প্রাক বর্ষার মরসুমে ২১৯ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। যা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের চেয়ে ১৯৭ শতাংশ বেশি। বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে বজ্রপাত এবং ঝোড়ো হাওয়াও পাল্লা দিয়ে চলেছে। যার ফলে প্রাণহানি ঘটেছে অনেক বেশি।
মুখ্যমন্ত্রী দফতর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়কালে কর্ণাটকে বজ্রপাতে ৪৮ জন মারা গিয়েছেন। গাছ পড়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাড়ি ধসে ৫ জন মারা গিয়েছেন। জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। ভূমিধসের কারণে ৪ জন মারা যান এছাড়াও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মাত্র দু মাসে সেই সংখ্যাটা পৌঁছে গিয়েছে ৭১-এ। নিহতদের পরিবারের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী দফতরের তরফে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যজুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে সাধারণ মানুষ তো বটেই, ক্ষতির মুখে পড়েছে জীবজন্তুরাও। জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ৭০২টি পশু ক্ষতির মুখে পড়েছে। কর্ণাটকের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেখা দিয়েছে ভূমিধস। প্রায় ২,০৬৮টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৭৫টি বাড়ি বৃষ্টির জেরে পুরোপুরি ধসে গিয়েছে।
বৃষ্টিতে বেহাল দশা উত্তর সিকিমের। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে ভূমিধস। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে তিস্তা নদী। বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। লাগাতার বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে অসম (Assam Rain)। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এখনও অবধি ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।