মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিত শাহ(Photo Credit: IANS)

দিল্লি, ১৯ সেপ্টেম্বর:  রক্ষাকবচ শেষ হতেই রাজীব কুমার হঠাৎ উধাও হয়েছেন। তাঁর খোঁজে তোলপাড় শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টুইটারে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠিয়ে দিল্লি চলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হলুদ গোলাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন তিনি, কে না জানে হলুদ গোলাপ বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে আসে। তাহলে কী ফের নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সখ্যতায় যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এ লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে মোদি মমতা বৈঠকের পরেই দিদি বলেছিলেন, এনআরসি অসমের ব্যাপার। তবে কি এতদিনের এনআরসি বিরোধী প্রতিবাদ থেকে সরে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

শাহ মমতা বৈঠক সেভাবে কোনওদিনই হয়নি। একবার কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদকে মাঝখানে রেখে মহত্মা গান্ধীর সার্ধ শতবর্ষ উদযাপনের আলোচনায় দুজন এক বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। বাকিটা শুধু তিক্ততায় ভরা। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে যতবার অমিত শাহ বাংলায় এসেছেন ততবার রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করার একটা সুযোগও ছাড়েননি। ইমামভাতা থেকে শুরু করে বিভইন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করে গিয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অমিত শাহ সম্পর্কে তৃণমূল শিবিরেও বিরুদ্ধতা দানা বেঁধেছে। গত মে মাসে কলকাতায় অমিত শাহর সভার পরেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনা ঘটে। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, অমিত শাহর (Amit Shah) সভায় যোগ দিতে আসা বিজেপি কর্মীরাই ডান্ডা নিয়ে বিদ্যাসাগর কলেজে চড়াও হয়ে মূর্তি ভেঙেছে। এরপর পরস্পরের বিরুদ্ধে শুধু বিষোদ্গার উগরে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই ঘটেনি। মাওবাদী এলাকা থেকে আধাসেনা সরানো বা সারদা মামলায় পুলিশকর্তা রাজীব কুমারকে সিবিআই তলব নিয়ে। আর সম্প্রতি এনআরসি নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে তিক্ততা। কলকাতার রাস্তায় মিছিল করে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে এক জনের গায়েও হাত দিতে দেবেন না তিনি। আগামিকাল শাহ-মমতা বৈঠক হলে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকছে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন-নরেন্দ্র মোদির পর অমিত শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাইলে কাল বৈঠক হবে, নরম সুরে জানালেন মমতা ব্যানার্জি

এদিকে গতকালই অমিত শাহ বলেছেন, ভারতীয়রা যদি অন্য রাষ্ট্রে থাকার সুযোগ না পান, তাহলে অন্যরাই কেন ভারতে থাকার সুযোগ পাবেন। এনআসি যে হবে, তা শাহর এই বক্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকে তৃণমূল যতই সৌজন্য বলে চালাতে চেষ্টা করুক না কেন, রাজনৈতিক অনুষঙ্গ তো থেকেই যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, দেশের ও রাজ্যের ভালর জন্যেই এই বৈঠক। তাই আজ সময় পেলে অমিত শাহর সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন তিনি।