দূষণের দিল্লি (ছবিঃX)

Delhi Pollution Crisis: দূষণ দৈত্য রুখতে কোটি টাকা খরচ করে মেঘের বীজ বোপন করেও লাভ হল না। শ্বাসরুদ্ধকর দূষণে দিল্লিবাসী বেহাল। দেশের রাজধানী শহরের আকাশ আজও ধোঁয়াশায় ঢেকে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। দিল্লির বায়ুদূষণের হাল খারাপ থাকল। জাঁকিয়ে শীত পড়ার আগেই দিল্লির বায়ুর এই খারাপ হাল দেখে শহরবাসী আঁতকে উঠেছে। আজ, শনিবার সকালে দিল্লির বেশ কিছু জায়গায় বায়ুদূষণের মাত্রা (Delhi AQI) ৩০০-র কাছাকাছি থাকল। দূষণের এই মাত্রাকে 'পুওর'ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়। দিল্লির ৩৮টি দূষণ নজরদারি কেন্দ্রে মধ্যে ৩২টিই জানাচ্ছে রাজধানী শহরে বায়ুর মান খারাপ। স্থানীয়রা বলছেন, দূষণ যন্ত্র যাই বলুক, গত কয়েক বছরের থেকে এবার বায়ুদূষণ কমার লক্ষ্মণই দেখা যাচ্ছে না। দিওয়ালির পর দেশের রাজধানী শহরে বায়ুর মান আরও খারাপ হয়েছে তা পরিষ্কার। দিল্লিতে দীপাবলি বা দিওয়ালির পর থেকেই টানা দশদিন শ্বাসকষ্ট, কাশি, চোখ-নাক জ্বালার সমস্যা বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও দারুণ বাড়া লক্ষ্য করা গেছে।

কেন ক্লাউড সিডিংয়ের পরেও দিল্লিতে বৃষ্টি হল না, দূষণ কমল না

ক্লাউড সিডিংয়ের জন্য দিল্লির তাপমাত্রা অনুপযুক্ত, আইআইটি গবেষণায় এমন কথা সামনে আসার পর দূষণ কমা নিয়ে হতাশা বাড়ছে। গত মঙ্গলবার দিল্লি সরকার ও IIT কানপুর মিলে ৫০ বছর পর ক্লাউড সিডিংয়ের চেষ্টা করে কৃত্রিম বৃষ্টি নামাতে চাইলেও তা সফল হয়নি। কারণ মেঘে আর্দ্রতা ছিল মাত্র ১০-১৫ শতাংশ, সফলতার জন্য লাগত ৫০-৬০ শতাংশ। ফলে বৃষ্টি নামেনি। বায়ুদূষণে লাগাম টানতে GRAP-II বিধি কার্যকর হয়েছে। রাজ্যে নির্মাণ কর্ম বন্ধ। আজ, শনিবার থেকে BS-VI মানহীন যানবাহনের দিল্লিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

শ্বাসকষ্ট থাকলে ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি ছাড়া উচিত

দিল্লি-এনসিআরের ভয়াবহ দূষণ পরিস্থিতিতে কড়া সতর্কতা বিশেষজ্ঞদের। দেশের খ্যাতনামা ফুসফুস বিশেষজ্ঞ এবং PSRI ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ডঃ গোপী চাঁদ খিলনানি জানিয়েছেন, যাঁদের দীর্ঘদিনের শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসজনিত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের এখনই ৬-৮ সপ্তাহের জন্য দিল্লি ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। বাড়তি দূষণের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব প্রাণহানির আশঙ্কা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

দূষণের ভয়াবহ প্রভাব

ষণের কারণে নাক দিয়ে জল পড়া, গলা ব্যথা, কাশি, বুক জ্বালা ও চাপ বাড়ে। ভাইরাল/ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়ার জটিলতাও বাড়ে। উত্তর ইতালির মতো দূষিত অঞ্চলে কোভিডে মৃত্যু বেশি হয়েছে, প্রমাণ মেলে সেখান থেকেই। দীর্ঘমেয়াদে দূষণ শিশুদের ফুসফুসের বৃদ্ধি থামিয়ে দেয়; বড়দের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। আগে যেখানে COPD-এর ৯০ শতাংশ কারণ ছিল ধূমপান, এখন তার অর্ধেকই দূষণজনিত। তবে শুধু ফুসফুস নয়, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, কিডনি ক্ষতি, অন্ত্রের সমস্যা, হরমোন বিঘ্ন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস। দূষণ বাড়াচ্ছে নানান জটিল অসুখ। ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস আরও খারাপ হচ্ছে দূষণে।