নয়াদিল্লি, ০২ অগাস্ট: দেশের রাজধানীতে বিভিন্ন প্রান্তে চুড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি সামনে আসছে। কখনও কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে পড়ুয়াদের মৃত্যু হচ্ছে, এবার নোংরা পানীয় জলের কারণে একটি শেল্টার হোমে কমপক্ষে ২৫ জন বিশেষভাবে সক্ষম শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে গত জুলাই মাসে। এরমধ্যে ৮ জন নাবালিকা ও ৬ জন নাবালক। ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লি রোহিনীতে অবস্থিত আশা কিরণ শেল্টার হোমে (Asha Kiran Shelter Home)। এই হোমটি দিল্লি সরকারের পরিচালিত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। অপরিচ্ছন্ন জলের পাশাপাশি পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হত না, ঘরগুলিও অপরিস্কার ও টয়লেটের কোনও সুবিধা ছিল না বলেও অভিযোগ উঠছে। জানা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রতিমাসে গড়ে একজন শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। তবে জুলাই মাসে ১৪ জন শিশুর মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই টনক নড়েছে দিল্লির আপ সরকারের। রাজ্যের মন্ত্রী আতিশি মারেলনা আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু করেছে বিজেপি। তাঁদের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছে। অন্যদিকে বেলা গড়াতেই ঘটনাস্থলে পৌছেছে জাতীয় মহিলা কমিশন (National Commission for Women)। যার নেতৃত্বে ছিলেন কমিশনার রেখা শর্মা (Rekha Sharma)। তিনি বলেন, ২৫০ জনের শেল্টারে ৪৫০ জন বাচ্চাকে রাখা হত। এদের দেখাশোনা করার মতো কেউ ছিল না। এই শেল্টারের দায়িত্বে যে ইনচার্জ রয়েছেন সে কীভাবে এটি চালাতে হয় সেটাই জানেন না। যে মহিলা কর্মীরা বাচ্চাদের জন্য কাজ করতেন তাঁদের কাজে নেওয়ার পর ট্রেনিং দেওয়া হত। এমনকী তাঁরা প্রতিদিন আসতো না। চুড়ান্ত অবহেলার মধ্যে রাখা হত শিশুদের। পানীয় জলের জন্য কোনও ফিল্টার ব্যবস্থা ছিল না, যে বাসনে খাবার রান্না করা হত সেগুলিও নোংরা ছিল। বাথরুমের জন্য কোনও স্থায়ী জায়গা নেই।
মহিলা কমিশনার আরও বলেন, একাধিক শিশু ডায়েরিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে। অনেকে অসুস্থ রয়েছে। তাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মাসখানেক আগে ইস্তফা দিয়েছেন। মূলত এই হোমগুলি দেখা ওই বিভাগের কর্তব্য। ফলে সেই বিভাগে মন্ত্রী না থাকায় তাহলে এগুলি কোন মন্ত্রী দেখছেন। যদি মুখ্যমন্ত্রী এর দায়িত্বে থাকেন তাহলে তাঁকে জবাব দিতে হবে যে এই ঘটনাগুলি কেন ঘটল। এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেন্দ্র সরকারের উচিত এই শেল্টার হোমগুলি দায়িত্ব যেন তাঁরা নেয়, কারণ আপ সরকার এগুলির দায়িত্ব নিতে পারছে না।