খড়গপুর, ৯ ডিসেম্বর: এনআরসি (NRC) আর সিএবি-র (CAB) মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। একেবারে মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ আসলে একই। বিল পেশের দিনই খড়গপুরের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (CM Mamata Banerjee)। এদিন তিনি বলেন, “একদম ভয় পাবেন না। আসুন জোট বাঁধি। একটা লোককেও দেশ থেকে তাড়ানো চলবে না। নো এনআরসি। কোনও বিভাজন হবে না, নো ডিভাইড অ্যান্ড রুল। যার যতই রাজনৈতিক স্লোগান থাক, মনে রাখবেন দেশের থেকে বড় কিছু নয়। রুটি কাপড়া মকান দিন দেশে ভাগাভাগি করবেন না।’’ ধর্মের ভিত্তিতে দেশে বিভাজন করছে বিজেপি, খড়গপুরের (Kharagpur)সভা থেকে গর্জে উঠলেন তৃণমূল নেত্রী।
সম্প্রতি রাজ্যের তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জিতেছে তৃণমূল। জয়ের খবর পেয়েই মা মাটি মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একে একে খড়গপুর, কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরে আসবেন। জয়ের সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই তিনি খড়গপুরে চলে এসেছেন। আর আজই লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে শিবসেনা থেকে শুরু করে কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূলের তরফে বিরোধিতা চরমে উঠেছে। আসাদউদ্দিন ওয়েসি তো অমিত শাহকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে ফেলেছেন। শশী থারুর সমর্থন করেননি। সংসদে আওয়াজ তুলেছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরি। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিলের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরাও। শিবসেনার মুখপত্র সামনা-য় বলা হয়েছে। এই বিলের মাধ্যে দেশের হিন্দু মুসলিমের মাঝে এক অদৃশ্য বিভেদের প্রাচীর তুলছে কেন্দ্র। এই বিল পেশ হলে দেশে ধর্মযুদ্ধের রাস্তা একেবারে পরিষ্কার হয়ে যাবে। ওয়েসি বলেছেন, এই বিল কার্যকরী হলেই দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ফের দেশভাগের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠবে। যেমনটা পাকিস্তানের ক্ষেত্রে হয়েছিল। থারুর বলেছেন, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব পাকিস্তানে সম্ভব। ভারতে নয়, কেননা তা সংবিধান বিরোধী। আরও পড়ুন-Citizenship Amendment Bill Debate:নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বলবৎ হলে ইতিহাস হিটলার গুরিয়নের সঙ্গে অমিত শাহকেও স্মরণ করবে, তোপ দাগলেন আসাদউদ্দিন ওয়েসি
West Bengal CM Mamata Banerjee in Kharagpur: Don't be scared of CAB (Citizenship Amendment Bill). We are with you. As long as we are here nobody can impose anything on you. pic.twitter.com/MORl6xwL9o
— ANI (@ANI) December 9, 2019
এই বিরোধিতার মুখে পড়ে কংগ্রেসকে একহাত নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা নই, ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ করেছে কংগ্রেস। বিভিন্ন দেশে হিন্দুরা অত্যাচারিত। ভারতে সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তা পেলেও বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে তা সম্ভব হয়নি। একটা সময় ইন্দিরা গান্ধী ছিন্নমূল পূর্ব পাকিস্তানিদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। উগান্ডার অধিবাসীরাও নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তবে এখনই বা তা কেন হবে না।