মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁচে থাকতে বাংলা থেকে বাঙালি খেদানো সম্ভব নয়, বিজেপিকে হুঁশিয়ার করলেন মুখ্যমন্ত্রী
বাংলাকে ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।
কলকাতা, ১১জুন : বাংলাকে অপমান করা হলে বা রাজ্য থেকে বাঙালি খেদানোর চেষ্টা হলে তা জীবন দিয়ে রোখার প্রতিশ্রুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerje )। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “তাতে আমি বাঁচি মরি, কিছু যায় আসে না। নিজের প্রতি আমার কোনও দয়া মায়া নেই। কিন্তু বাংলার সংস্কৃতিতে কোনও আঘাত বরদাস্ত করব না।” এখানেই তিনি থামেননি। এও বলেন, বাংলাকে গুজরাত হতে দেব না। গুজরাতকে আমি ভালবাসি। কিন্তু গুজরাত আর বাংলা এক নয়! মঙ্গলবার হেয়ার স্কুলে বিদ্যাসাগরের ( Vidyasagar Sculpture) আবক্ষ মূর্তি উন্মোচনের অনুষ্ঠান থেকে এই মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই অসমে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে যখন বাঙালি তাড়াতে উদ্যত হয়েছিলেন কেন্দ্র, সেই সময় থেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। অসম থেকে বাঙালি খেদানো যাবে না, এই দাবি তুলে কেন্দ্রের প্রকাশ্য বিরোধিতা করতেও ছাড়েননি তিনি। সেজন্য কড়াগন্ডায় তাঁকে হিসেব চোকাতে হয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে অমিত শাহ নরেন্দ্র মোদি বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে নির্বাচনী প্রচারে এসে লেই নাগরিকত্ব বিলকেই হাতিয়ার করেছেন। শুধু ঘুঁটির অবস্থান বদলে দিয়ে বলেছেন, হিন্দু শরনার্থীরা নাগরিকত্ব পাবে বাকিদের তিনি বাংলা দেশে ফেরত পাঠাবেন। এই হিন্দুত্বের তাসেই বাজিমাত কের বিজেপি বিরোধী দলের জায়গা নিয়েছে রাজ্যে।
লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোট গ্রহণের আগে কলকাতায় রোড শো করেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর রোড শো চলাকালীন ধুন্ধুমার হয়েছিল বিদ্যাসাগর কলেজে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের একটি মূর্তিও ভাঙা হয়েছিল ওই সংঘর্ষে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ওই ঘটনাকে বাংলার সংস্কৃতি ও চিন্তার উপর আঘাত বলে তার পর থেকেই জোরদার প্রচারে নেমে পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তিনি এও বলতে শুরু করেছিলেন, বাংলার বাইরে থেকে রোড শো-র জন্য লোক এনেছিল বিজেপি। তারাই ভেঙেছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি। এদিনের সভায় বিজেপিকে ফের হুঁশিয়ার করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ,“বাংলা ছেলের হাতের মোয়া নয়। এখানে যা ইচ্ছে তাই করা যায় না। বাংলাকে ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।”
তাৎপর্যপূর্ণ হল, ওই ঘটনার পর শেষ দফায় যে ৯টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছিল, তার সব কটিতেই জিতেছে তৃণমূল। তাতে শাসক দলের শীর্ষ স্তরে এই ধারনা এখন বদ্ধমূল হয়েছে যে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙারই খেসারত দিতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। ফলে এখন বাংলা ও বাঙালি লাইন আরও শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল।