টিতে ছোটাছুটি করবেন না তো কবে করবেন, তবে সেই ছোটাছুটি যদি হয় বেড়াতে যাওয়ার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সপ্তাহান্তে ছুটি মিলতেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়ুন দেখি মন এমনিই ভাল হয়ে যাবে। আমাদের বাংলায় দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই শুধু খুঁজেপেতে যাওয়ার উদ্যোগ করতে হবে এই যা। করে ফেললেই হল, তারপর শুধু হারিয়ে যাওয়ার পালা। টইটইয়ের ১১তম পর্বে আজ রইল চিল্কিগড়ের ইতিকথা।
ঝাড়গ্রাম, চিল্কিগড় ও শালবনি( Jhargram, Chilkigarh)
মনকে ছুটি দিতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন শাল মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা ঝাড়গ্রামে। কলকাতা থেকে মাত্র ১৮১ কিলোমিটার দূরেই ঝাড়গ্রাম(Jhargram)। প্রাচীন মন্দির, রাজ প্রাসাদ, আদিবাসী সংস্কৃতি, ধামসা মাদলের ধ্বনি, ঝাড়গ্রাম ঘিরে অনেক কিছু-কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব। শহরের উপকণ্ঠে রয়েছে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি। বিশেষ অনুমতিতে রাজবাড়ি দেখার ব্যবস্থা মেলে। ঝাড়গ্রাম ডিয়ার পার্ক একটা মিনি চিড়িয়াখানা। রয়েছে রঘুনাথপুরের পথে আদিবাসী সংস্কৃতি পরিষদ। ঝাড়গ্রামের মহারাজা বিক্রমজিৎ মল্ল উগাল দেব বাহাদুরের খনন করা রাধানগরে ১০০ একরের দিঘি অর্থাৎ কেচেন্দা বাঁধ তথা রাজবাঁধ(Rajbandh)। স্টেশন থেকে ১০ কিমি আর লোধাশুলি থেকে ৫ কিমি দূরে ২০ বিঘার জঙ্গলমহল। রঙবেরঙের শতাধিক প্রজাতির গোলাপের বাগিচায়(Rose Garden) ক্যাকটাস, অর্কিড, জীবজন্তু, ফুলফল, গাছগাছালির জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামের অন্যতম দ্রষ্টব্য।
ঝাড়গ্রাম থেকে ঘুরে আসুন চিল্কিগড়। প্রাচীনগাছে ঘেরা গড় ও কনকদুর্গা মন্দির (Kanak Durga Temple) যেন মনকে কোনও এক পুরাকালে টেনে নিয়ে যায়। মন্দিরে কিছু সময় কাটিয়ে নেমে আসুন বাঁদিকে। সোজা সিঁড়ি দেখতে পাবেন, পাথরকেটে বানানো সিঁডির ধাপ পেরিয়ে নিচে পৌঁছালেই দেখতে পাবেন কুল কুল ধ্বনিতে বয়ে চলেছে ডুলুং নদী(River Dulung)। ঝাড়গ্রামের কোলে সুন্দরী ডুলুং যেন ভালবাসার আর এক নাম।চড়ুইভাতির আদর্শ পরিবেশ চিল্কিগড়। এ বার যাওয়া যাক গড়শালবনি। ঝাড়গ্রাম স্টেশনে নেমে বাস নিলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে গড়শালবনি। সেখানকার ফার্ম হাউজে রাত কাটাতে পারলে মন্দ হয় না। এক কালে মল্ল রাজাদের সম্পত্তি ছিল এই বাড়িটা। জঙ্গলের মধ্যে গা-ছমছমে পরিবেশ, পুরনো মন্দির, নদী, আঁকাবাঁকা পথ, কী নেই গড়শালবনিতে! উদ্দেশ্য যদি হয় প্রকৃতির কোলে নিরালায় ছুটি কাটানো, তবে শাল-মহুয়ায় ঘেরা এই জায়গাটা একদম পারফেক্ট।