কাজলে ঢাকছে না চোখের তলার কালি? রইল ঘরোয়া উপায়
প্রতীকী ছবি(Photo credit: Wikimedia Commons)

এখন বিজ্ঞাপনের যুগ, তাই যতটা নিজেকে পারদর্শী করতে পারবেন ততই ভাল প্রোডাক্ট হিসেবে বিকিকিনির দুনিয়ায় আপনার কদর বাড়বে। শুনতে খারাপ লাগলেও এই বাস্তব সত্যকে অস্বীকার করার জায়গাই নেই। তাইতো প্রবাদ বাক্যকে মানতেই হয়, ‘প্যাহলে দর্শনধারী বাদ মে গুণ বিচারী।’ নিজেকে আগে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন তারপর না আপনার চারপাশে গুণমুগ্ধের ভিড় জমবে। সেজন্য মেকআপ জরুরি, আর নিজেকে মেনটেন করতে গিয়ে পার্লারে ছোটাছুটিরও অন্ত নেই। কিন্তু এতকিছু করেও অফিসের কাজের চাপ, পারিবারিক সম্পর্কের জেরে মেন্টাল স্ট্রেস এসবের আলগা ছাপ আপনার চেহারায় পড়বে, মুখে সেই ছাপের আনাগোনা প্রকট হলেই মন খারাপ হয়ে যায়। তখন ফাউন্ডেশন(Foundation) থেকে শুরু প্রাইমার, রুজ, শিমার, ব্ল্যাশার কত কিই না জরুরি হয়ে পড়ে। আই মেকআপে ক্লান্ত চোখকে দীঘল করলেও চোখের চারপাশের ত্বকের শুষ্কতা কিন্তু সহজে ঢাকা পড়ে না। তাইতো হাজার রকম মেকআপ কিট থাকলেও বাজারে আন্ডার আই ক্রিম হু হু করে বিকোয়। কিন্তু বাজারচলতি ক্রিম(Under eye cream) না কিনেও চোখের নিচের কালি দূর করতে পারবেন। আপনার কাছেই আছে এই সমস্যার সমাধান।

সারাদিনে ঠিক কতটা জল খাওয়া উচিত তা আমরা সকলেই কমবেশি জানি। কিন্তু মানি কজন, জলের থেকে বড় ওষুধ কিন্তু আর কিছু নেই। বেশি পরিমাণে জল খেলেই শরীরে ৫০ শতাংশ সমস্যা দূর হয়ে যাবে। অন্তত তিন লিটাল জল যদি সারাদিনে পান করা যায় তাহলে পেটের রোগ, ডিহাইড্রেশন(Dehydration) দূর হবে, ত্বকে(Skin)ও ফিরবে উজ্বলতা। আমরা সকলেই শরীরে সবথেকে নরম ত্বক চোখের চারপাশে রয়েছে। এই ত্বককে স্নিগ্ধতা দিতে গেলে জলের জুড়ি মেলা ভার।

রাতে অফিস কলিগের এনগেজমেন্ট পার্টি অথচ আপনি আজ পার্লারে যাওয়ার জন্য সময় পেলেন না। চোখের তলার কালি নিয়ে কীযে করবেন বুঝতে পারছেন না। একবার টুক করে রান্নাঘরে ঢুকে পড়ুন, হাতের কাছে মধুর শিশি খানি দেখতে পেলে জিতে গেলেন। মধু প্রকৃতির দেওয়া অন্যতম উপহার বলতে পারেন। মধু খেলে শরীর যেমন তরতাজা থাকে, তেমন মধু মাখলে ত্বকও তরতাজা চকচকে হয়ে ওঠে। মনে রাখবেন বয়স ঢাকতে বাজারের অ্যান্টিএজিং ক্রিমের থেকে শতগুনে ভাল এই মধু।

তেমনই চোখের তলার কালি দূর করতেও এর জুড়ি মেলাভার। শুধু নিয়ম করে মিনিট ২০ সময় মধু লাগিয়ে রাখুন চোখের চারপাশের নরম ত্বকে। নিয়মিত যদি মধুর ব্যবহার এভাবে করতে পারেন তাহলে ক্লান্তি, কালি, বয়সের ছাপ, কুঁচকে যাওয়া ভাব, শুষ্কতা, রুক্ষতা সব দূর হয়ে যাবে।

গোলাপ জল ফ্রিজে ঠান্ডা করে যদি নিয়মিত চোখের চারপাশে লাগাতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই, একেবারে হাতেগরম উপকার পাবেন। চোখ শান্তি পেলে মনও শান্তি পাবে। হালকা ফাউন্ডেশন লাগিয়েই পৌঁছে যেতে পারেন রাতের পার্টিতে, আফটার অল ঝকঝকে ত্বকের কাছে মেকআপ আজও কিছুই না।

গোলাপ জল না পেলে শশা দিয়েও চোখের ক্লান্তি দূর করুন। শশা গোল গোল করে কেটে ফ্রিজারে রাখুন, তারপর অবসরে সেই গোল টুকরা দুচোখের উপরে দিয়ে বিশ্রাম নিন। দেখবেন, কালি, শুষ্কতা, ক্লানির নামগন্ধ নেই।

যদি দেখেন শশা নেই কিন্তু অন্যান্য সবজি রয়েছে সেগুলিকে নেটের ব্যাগে পুরে ফ্রিজে রাখুন, ঠান্ডা হলে চোখের চারপাশে চক্রাকারে বোলাতে থাকুন। উপকার পাবেন। রান্নার সময় টমেটো গ্রেট করে এক চিমটে হলুদ ও হাফ চা চামচ লেবুর রসের মিশ্রন নিয়ে চোখের চারপাশে লাগিয়ে নিন। মিশ্রনটি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা জলে চোখ ধুলেই দেখবেন রূপের ছটা ঠিকরে পড়ছে।

এসমস্ত উপকরণের কোনওটাই যদি হাতের কাছে না থাকে তাহলে মেকআপ কিট থেকে দুটো তুলোর বল নিন। ভাল করে ভিজিয়ে ফ্রিজারে চালান করে দিন। ঘণ্টাখানেক পর সেই বলদুটিকেই চোখের উপরে রেখে বিশ্রাম করুন। চোখ ঠান্ডা হবে, কালি দূর হবে, কোঁচকানো ভাব কমে আসবে। ঘরে বসেই দেখবেন কেমন সুন্দর চোখের অধিকারিণী হয়ে উঠেছেন।