কলকাতা, ১২মে: সাত দফার লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election) একেবারে শেষের দিকে চলে এসেছে। দেশের মসনদে কে বসতে চলেছেন, তার পূর্বাভাস বিভিন্ন সমীক্ষার মাধ্যমে আসতে চলেছে। ভোট শুরুর আগে বেশিরভাগ নির্বাচনী সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছিল, বিজেপি (BJP)-র আসন সংখ্যা কমলেও নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) ই ফের ক্ষমতায় আসছেন। কিন্তু ভোট যত গড়িয়েছে, সমীক্ষার ফলগুলোতে তত অনিশ্চয়তা ধরা পড়ছে। গতবার বিজেপি মোট ২৭টি দলকে নিয়ে ভোটে লড়েছিল। তাতে বিজেপি একাই পেয়েছিল ২৮২টি আসন, আর এনডিএ পেয়েছিল ৩৩৬টি আসন। তবে এবার মোদী হওয়ায় এককভাবে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরবে এমন কথা বিজেপি নেতারাও জোরের সঙ্গে বলছেন না।
আসলে ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের পর সমীক্ষাগুলোতে দেখা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) বিজেপি-র আসনসংখ্যা গতবারের থেকে এক ঝটকায় অনেকটা কমে যেতে পারে, যা ভোট শুরুর আগে সমীক্ষাতে আঁচ করা যায়নি। ২০১৪ লোকসভা আসনে উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ৭১টি আসন, এনডিএ-৭৩টি। সেখানে ভোট শুরুর আগে সমীক্ষা ছিল অখিলেশ যাদব-মায়াবতী মহাগটবন্ধন গড়ায় বিজেপি-র আসন কমে ৫০-এ নেমে আসতে পারে। কিন্তু ভোটের পর দেখা যাচ্ছে ৫০ নয়, বিজেপি-র আসন তিরিশেও নেমে যেতে পারে। বিহার, মধ্যপ্রদেশে, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ডেও প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ধাক্কা লাগতে পারে বিজেপি-র। হিন্দি বলয়ে পদ্মে ক্ষত এতটাই লাগতে পারে যে বাংলা, ওডিশা সহ পূর্ব ভারতে ভাল ফল করলেও সেই ক্ষতে প্রলেপ লাগবে না। বিজেপি-র হিসেব অবশ্য অন্যরকম। বিজেপি-র হিসেব গতবারের মত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না মিললেও এনডিএ-র ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত। তবে ২৩ মে যত কাছে আসছে সব দলের মধ্যে তৎপরতা বাড়ছে।
বিজেপি নেতারা নিশ্চিত, যদি এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতার খুব কাছে গিয়ে আটকে যায় তাহলে ওডিশা থেকে বিজেডি, তেলেঙ্গানা থেকে টিআরএস আর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ওয়াইএস আর কংগ্রেসের সমর্থন মিলে যাবে। ফণী ঝড়ে ওডিশায় ব্যাপক ক্ষতির পর নরেন্দ্র মোদী যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তাতে প্রধানমন্ত্রী-র সঙ্গে ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সম্পর্ক মেরামত হয়েছে। তেলেঙ্গানায় কেসিআর-এর সঙ্গে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যোগাযোগ রাখছে বলেও খবরে প্রকাশ, আর অন্ধ্রে চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে সাপে নেউলে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর শত্রুর শত্রু বন্ধু এই ফর্মুলায় মোদী- জগনমোহন রেড্ডি কাছাকাছি আসছেন। এই তিনটি দলের সমর্থন জোগাড় করলে মোদী অনায়াসে ক্ষমতায় ফিরবেন বলে বিজেপি নেতারা আশাপ্রকাশ করছেন। যদিও কোনও দলই এখন স্বাভাবিকভাবেই মুখ খুলতে চাইছে না। দিল্লির রাজনৈতিক পরিবেশ পুরো গুমোট। কী হলে কী হবে হিসেবে বসলে জট যত বাড়ছে পরিস্থিতি তত গুমোট হচ্ছে। ২৩ মে-র পর গুমোটভাব কাটবে। তারপর কোন শিবিরে রোদ ওঠে সেটাই দেখার।