জিতুভাই মোদি পথ কুকুরদের খাওয়াচ্ছেন

জুইনগর, ১ অক্টোবর: তাঁর মুখের দিকে চেয়ে থাকে লালু, ভুলু, কালু, ভোম্বল বা বান্টিরা। সন্ধে নামলেই তারা চেয়ে থাকে স্টেশনের সাবওয়ের দিকে। এই বুঝি এলেন তিনি। সন্ধে হলেই তিনি ট্রেন ধরেন। নামেন বাড়ির কাছের পরের বা আরও দূরের কোনও স্টেশনে। এরপর সেখানে নেমে রাস্তার কুকুরদের খাওয়ান দাঁড়িয়ে থেকে। নিয়ম করে ওদের জন্য দুধ, বিস্কুট অথবা রুটি ব্যাগে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। ওরা সবাই 'রাস্তার কুকুর' (street dogs)। শুধু কালু-ভোম্বলরাই নয়, তাঁর ব্যাগে রাস্তার অচেনা কুকুরদের জন্যও বিস্কুটের বন্দোবস্ত থাকে।ওদের খাওয়া হয়ে গেলেই ফের অভুক্ত অন্য কুকুরদের খোঁজে তিনি অন্য ট্রেন ধরেন। তিনি জিতুভাই শাহ (Jitubhai Shah)। আদতে গুজরাতের(Gujrat) বাসিন্দা এই ব্যক্তির প্রতিদিন রাতে কুকুরদের নিজের হাতে খাওয়ানোটা অবশ্যকর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। বর্তমানে মুম্বইয়ের(Mumbai) বাইকুল্লা (Byculla) এলাকায় যাকেন জিতুভাই। একটি মন্দিরে পুজো করেন। বিকেলের মধ্যে বাড়ির যাবতীয় কাজ সেরে তিনি বেরিয়ে পড়েন। কোনওদিন জুইনগর(Jiunagar), কোনওদিন ভাসি(Vashi) বা কোনও দিন কোপারখাইরানে(Koparkhairane) স্টেশন। এভাবেই প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি রাস্তার কুকুরদের খাওয়াচ্ছেন বছর আটান্নর জিতুভাই।

কীভাবে শুরু হল এই ভাবনার? তাঁর চেনা কুকুরদের খাওয়াতে খাওয়াতে জিতুভাই বললেন, "বাবার দোকান ছিল। ছোটোবেলায় আমিও দোকানে আসতাম। এক পরিচিত কাকা আমাদের দোকানে একটা কুকুরছানা রেখে যায়। আমি যখনই দোকানে আসতাম দোকানে রাখা বিস্কুট, দুধ বা রুটি খাওয়াতাম। বাবা কিছু বলতো না। সেই থেকেই শুরু। সেই থেকেই গড়ে উঠেছিল স্নেহ-বন্ধন। এরপর অন্য কুকুরদের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নিই। আমারা বাবা বলতেন যা উপায় করবি তার কিছুটা কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য রাখবি। সেই থেকেই এই সফর শুরু। এভাবেই চলে যাচ্ছে।" আরও পড়ুন: অমিত শাহ সাফ জানালেন, কোনও শরণার্থীকে দেশ ছাড়তে হবে না, তবে অনুপ্রবেশকারীকে ভারতে থাকতে দেওয়া হবে না

তবে শুধু খাওয়ানই না, রাস্তার আহত কুকুরদের নি়জের খরচে চিকিৎসাও করান জিতুভাই। এসব খরচের অর্থ আসে কোথা থেকে? তিনি জানালেন, পুজো ছাড়া আরও কোনও উপার্জন নেই। প্রতিদিন প্রায় ২০০-২৫০ টাকা খরচ হয়। সংসার খরচ বাঁচিয়ে চলে যায়। মধ্যবিত্ত পরিবার। কোনওরকমে চলে যাচ্ছে।

নভি মুম্বই পৌরনিগম (Navi Mumbai Municipal Corporation) বা পুলিশের তরফে কোনও সাহায্য পান কি না জানতে চাইলে জিতুভাই জানান পান না। সরকারের প্রতি তাঁর নানা অভিযোগও আছে। তিনি বলেন, নির্বীজকরণের জন্য রাস্তার কুকুরদের পৌরনিগমের লোকজন ধরে নিয়ে যায়। এতে সমস্যা। কেউ খাবার দেয় না কুকুরদের। আবার তাদের নিয়ে এত নাকি সমস্য়া।