কলকাতা, ২০ মে: গতকাল, সপ্তম দফার লোকসভা ভোট (Lok Sabha Elections 2019) শেষে দেশের বিভিন্ন চ্যানেলে দেখানো বুথফেরত সমীক্ষা (Exit Poll)-য় স্পষ্ট ইঙ্গিত ফের কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসছে NDA- সরকার। যেটা ভোটের আগেও ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু যা ভোটের আগে ইঙ্গিত ছিল না, সেটাই বুথফেরত সমীক্ষায় দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)-এ। বাংলায় যে বিজেপি (BJP) দু অঙ্কের সংখ্যার সাংসাদ পেতে চলেছে সেটা প্রায় সব বুথফেরত সমীক্ষাতেই সাফ বলা হয়েছে। 'ইন্ডিয়া টুডে'-তে আবার একধাপ এগিয়ে বুথফেরত সমীক্ষায় বলা হয়েছে, রাজ্যে তৃণমূলের চেয়ে বিজেপি বেশি আসন জিততে পারে। ABP-নিয়লসেন এর সমীক্ষায় বলা হয়েছে বাংলায় ৪২টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেতে চলেছে ১৬টি লোকসভা আসন। আসুন দেখে নেওয়া যাক এবিপি-র সমীক্ষা অনুযায়ী রাজ্যে ৪২টি কেন্দ্রের ফলাফল কী হতে চলেছে--
এবিপি- নিয়লসেন-এর বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী
যে ১৬টি কেন্দ্রে বিজেপি জিততে পারে
কোচবিহার (Cooch Behar), আলিপুরদুয়ার (Alipurduar), দার্জিলিং (Darjeeling), বালুরঘাট (Balurghat), পুরুলিয়া (Purulia), মালদা উত্তর (Malda North), মুর্শিদাবাদ (Murshidabad), বাঁকুড়া (Bankura),বিষ্ণুপুর (Bishnupur), বর্ধমান পূর্ব (Burdwan Purba), হাওড়া (Howrah), হুগলি (Hoogly), আরামবাগ (Arambagh), ঝাড়গ্রাম (Jhargram), মেদিনীপুর (Midnapore),বাঁকুড়া (Bankura)।
যে কেন্দ্রে জিততে পারে কংগ্রেস
বহরমপুর, মালদা দক্ষিণ।।
বিজেপি হারতে পারে
আসানসোল, কৃষ্ণনগর, উত্তর কলকাতা, দমদম-এর মত আসন যা তারা জিততে পারে বলে মনে করেছিল। এর বুথফেরত সমীক্ষা
যে ১৬টি কেন্দ্রে বিজেপি জিততে পারে
কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, বালুরঘাট, পুরুলিয়া, মালদা উত্তর, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া,বিষ্ণুপুর, বর্ধমান পূর্ব, হাওড়া, হুগলি, আরামবাগ, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর,বাঁকুড়া।
যে কেন্দ্রে জিততে পারে কংগ্রেস
বহরমপুর, মালদা দক্ষিণ।।
বিজেপি হারতে পারে
আসানসোল, কৃষ্ণনগর, উত্তর কলকাতা, দমদম-এর মত আসন। যা তারা জিততে পারে বলে মনে করেছিল।
বামেরা শূন্য হতে পারে
রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ-এই দুটি লোকসভা আসনেই সিপিএম সাংসদরা হারবেন। রায়গঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী কানাইলাল আগরওয়াল হারাবেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিমকে। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদে সিপিএম প্রার্থীকে হারাবেন বিজেপি প্রার্থী।
এই বুথফেরত সমীক্ষায় সবচেয়ে বড় চমকপ্রদ দিক হল আসানসোলের মত কেন্দ্রে, যেখানে বিজেপি গতবার জিতেছিল, সেখানে গেরুয়া ঝড় থামিয়ে তৃণমূল জিতলেও, হুগলী, বর্ধমান জেলায় বিজেপি আসন পেতে চলেছে। হাওড়াতে তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জিকে গোল দিয়ে জিততে চলেছেন বিজেপি-র রন্তিদেব সেনগুপ্ত। যে হাওড়ায় বিজেপি গত লোকসভায় জর্জ বেকারের মত প্রার্থী দিয়েও তৃতীয় স্থানে ছিল। এই সমীক্ষায় সবচেয়ে চমকপ্রদ খবর হল, আরামাবাগ কেন্দ্রে নাকি জিততে চলেছে বিজেপি। যে আরামবাগে বিজেপি-র সাংগঠিনক শক্তি একেবারে মজবুত নয়। যেখানে গতবার লোকসভায় বিজেপি মাত্র ১১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
পশ্চিম মেদিনীপুরেও চমক আছে। ঘাটালে দেবের কাছে ভারতী ঘোষ হারলেও, মেদিনীপুর কেন্দ্রে মানস ভুইয়াকে নাকি হারিয়ে দেবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আবার জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে নাকি বিজেপি হারিয়ে দেবে তৃণমূলকে। বাঁকুড়ায় সুব্রত মুখার্জির মত প্রার্থীকে হারিয়ে বিজেপি-র জিততে চলার বুথফেরত সমীক্ষার খবরটাও কম চমকের নয়। একই রকম চমক বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে বিজেপি-র জেতার অনুমান দেওয়ার খবর। আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাটে বিজেপির জেতার সম্ভাবনার কথা আগেও শোনা গিয়েছিল এই সমীক্ষাতেও সেটাও দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোচবিহারে বিজেপি-জিততে চলেছে এমন খুব একটা শোনা যায়নি। সমীক্ষকদের দাবি, তারাও বুঝতে পারেননি তলায় তলায় এতটা গেরুয়া ঝড় বয়েছে রাজ্যজুড়ে। আসলে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ক মোটের ওপর অটুট থাকলেও বামফ্রন্ট- কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কের ধসের কারণেই নাকি বিজেপি ১৬টি আসনে জিততে চলেছে বলে ওই বুথফেরত সমীক্ষায় প্রকাশ। তবে এক্সিট পোল কখনই ধ্রুব সত্য নয়। অনেক সময়ই তা মেলে না। আসল ফলের অপেক্ষা ২৩ মে, বৃহস্পতিবার।