Photo Credits: ANI

সিমলা, ২৭ ফেব্রুয়ারি: রাজ্যসভা নির্বাচনে দল ভাঙানোর খেলায় মহাসাফল্য পেল বিজেপি। উত্তরপ্রদেশ অখিলেশ যাদবকে ধাক্কা দিয়ে ১০টির মধ্যে ৮টি-তে জেতার পর কংগ্রেস শাসিত হিমাচলপ্রদেশে অপ্রত্যাশিত জয় পেল বিজেপি। হিমাচলপ্রদেশে কংগ্রেসের ৪০ জন বিধায়ক আছে, সেখানে বিজেপির আছে ২৮টি। ফলে সেখানের একমাত্র রাজ্যসভা আসনে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভি (Abhishek Singhvi)-র জয় নিশ্চিত দেখাচ্ছিল। কিন্তু এসব পরিস্থিতিতে বিজেপি 'খেলা' দেখায়। এদিনও দেখাল। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার রাজ্যে কংগ্রেসের ৬জন বিধায়ক ক্রস ভোটিং করে বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজনকে জিতিয়ে দিলেন। ৬টা ভোট এদিক ওদিক হলেই আগে বাংলা থেকে রাজ্যসভায় যাওয়া অভিষেক মনু সিংভি হেরে যেতেন, ঠিক সেটাই হল। রাজ্যসভা ভোটে এভাবে হারের পর এবার হিমাচলে কংগ্রেস সরকার পতনের সম্ভাবনা। সেখানে সরকার গড়ার দাবি জানাতে রাজ্যপালের কাছে আগামিকাল, বুধবার যাচ্ছে বিজেপি।

হিমাচল বিধানসভায় রাজ্যসভার ভোটাভুটিতে ৬৮টি ভোটের মধ্যে কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিংভি ও বিজেপির হর্ষ মহাজন দুজনেই ৩৪টি করে ভোট পান। এরপর টসে জিতে রাজ্যসভার সাংসদ হলেন কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া প্রার্থী হর্ষ মহাজন। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দার সিং সুখু-র বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন হর্ষ মহাজন।

হারের পর বিজেপির দল ভাঙানোর রাজনীতিতে ফেটে পড়েন কংগ্রেস নেতারা। আরও একবার কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতা প্রকট। অপ্রত্যাশিত জয়ের পর বিজেপি নেতারা হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দার সিং সুখুর পদত্যাগ দাবি করেছেন। গত বছরই বিজেপিকে সরিয়ে হিমাচলে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। ৩৬ বছর কংগ্রেসে থাকার পর ২০২২ সালে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন হর্ষ মহাজন।

হিমাচলে রাজ্যসভার আসন হাতছাড়া হলেও কর্ণাটকে দারুণভাবে কংগ্রেসের গড় সামলালেন সিদ্দারামাইয়া ও ডি কে শিবকুমার। কর্ণাটকের ৩টি রাজ্যসভা আসনে জিতল কংগ্রেস, একটিতে বিজেপি। রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে বিহারের দুই ও আরজেডি-র এক বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিলেন। উত্তরপ্রদেশে রাজ্যসভা নির্বাচনে অন্তত পাঁচজন সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক ক্রস ভোটিং করেন। তার মধ্যে অখিলেশ যাদবের শিবিরের চারজন বিধায়কের বিজেপিতে যোগদান সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। দল ছাড়তে চলা বিধায়কদরে মধ্যে আছেন এসপি-র চিফ হুইপ মনোজ পান্ডেও।

আমেথি, রায়বারেলি থেকে কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা গতকাল, মহারাষ্ট্রেও বেশ কয়েকজন কংগ্রেস কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। লোকসভা ভোটের আগে দলবদলের রাজনীতিতে ক্রমশ একতরফা জয় পাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতাদের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর কর্মযজ্ঞে সামিল হয়ে তাঁকে ৪০০ আসনে জেতাতে একে একে প্রায় সব রাজনীতিবিদ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। বিরোধীদের দাবি, এসবই প্রমাণ করছে বিজেপি অর্থ আর ইডি-সিবিআইয়ের জোরে দেশটাকে একনায়কতন্ত্রে পরিণত করছে।