আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী পড়ুয়া চিকিৎসকের খুন এবং ধর্ষণের ঘটনা সমাজ থেকে নতুন করে নারী নিগ্রহের এক অদেখা পর্দা সরিয়ে দিয়েছে। তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যু স্বাস্থ্য দফতর এবং টলিউড ইন্ডাস্ট্রি দুটিকেই বেআব্রু করেছে। টলিউডের এক কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার অভিযোগ নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে। কাজ হারিয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন টলিউডের ওই কেশসজ্জা শিল্পী। তবে কোনক্রমে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। রক্ষা পেয়েছে প্রাণ।
শনিবার গায়ে আগুন নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই শিল্পী। খবর পেয়ে রবিবার তাঁকে হাসপাতালে দেখতে ছোটেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, চৈতি ঘোষাল সহ আরও অন্যান্য অভিনেতা, শিল্পীরা।
জানা যাচ্ছে, টলিপাড়ার 'থ্রেট কালচারের' শিকার হয়েছিলেন ওই কেশসজ্জা শিল্পী। অন্যায়ভাবে তাঁকে সাসপেন্ড করার অভিযোগ উঠেছে হেয়ার ড্রেসার গিল্ড ও ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। সাসপেনশনের মেয়াদ শেষে তিনি যখন কাজে ফেরেন তখনও অন্যায় ভাবে তাঁর থেকে কেড়ে নেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হাত ছাড়া হতে থাকে একের পর এক কাজ। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁকে একঘরে করে দেওয়া হয়। একদিকে কাজ হারা, অন্যদিকে এক গলা দেনায় ডুবে থাকা। সব মিলিয়ে দিশেহারা হয়ে শনিবার রাতে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন হেয়ার ড্রেসার, অভিযোগ পরিবারের।
এই ঘটনার পরেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে টুইটের বন্যা। গিল্ডের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে প্রতিবাদে সোচ্চার হয় টলিপাড়া। অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় লেখেন, 'কর্মক্ষেত্রে আর কোনরকমের হেনস্থা বরদাস্ত করা হবে না। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে জমিদারি প্রথা বিলোপ হওয়ার সময়ে এসে গিয়েছে'।
নির্যাতিতার পাশে থাকার আশ্বাস দেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। বলেন, 'সহ্যের সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে'।
অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রের অভিযোগ, 'ইন্ডাস্ট্রিতে এমন আরও অনেকে রয়েছেন, যারা একইভাবে কাজ পাচ্ছেন না'।
সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী বলেন, 'এইসব কী শুরু হয়েছে। এটা চলতে দেওয়া যেতে পারে না। কোনরকমে একজনকে বাঁচানো গিয়েছে। এই অন্যায় চলতে থাকলে পরে আর আটকানো যাবে না'।