জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে যোগ দিচ্ছে সিআইডি, 'ঘটনায় রাজনীতির কোনও যোগ নেই', প্রাথমিক তদন্তের পর জানাল পুলিশ
মুর্শিদাবাদের (Murshodabad) জিয়াগঞ্জে (Jiaganj) একই পরিবারের তিনজনের খুনের তদন্তে পুলিশের পাশাপাশি নামছে সিআইডি (CID)। আজ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের (West Bengal Police) তরফে একথা জানানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, সিআইডি-কে তদন্তে যুক্ত হতে বলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এটিকে ব্যক্তিগত শত্রুর ঘটনা বলে মনে হচ্ছে এবং রাজনীতির সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগসূত্র নেই। এচাড়া তদন্তে নেমে ২ জনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
কলকাতা, ১১ অক্টোবর: মুর্শিদাবাদের (Murshodabad) জিয়াগঞ্জে (Jiaganj) একই পরিবারের তিনজনের খুনের তদন্তে পুলিশের পাশাপাশি নামছে সিআইডি (CID)। আজ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের (West Bengal Police) তরফে একথা জানানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, সিআইডি-কে তদন্তে যুক্ত হতে বলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এটিকে ব্যক্তিগত শত্রুর ঘটনা বলে মনে হচ্ছে এবং রাজনীতির সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগসূত্র নেই। এচাড়া তদন্তে নেমে ২ জনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
দশমীতে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে খুন হয়েছেন একই পরিবারের তিন জন। বন্ধুপ্রকাশ পাল (৪০), তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল (৩০) ও পুত্র অঙ্গন (৫)। বন্ধুপ্রকাশ তাদের সংগঠনের সদস্য ছিলেন বলে দাবি করেছে RSS। তবে শুধু জিয়াগঞ্জ নয়, নদিয়ায় সুপ্রিয় ব্যানার্জি নামে এক বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন বলে সোশাল মিডিয়ায় অভিযোগ তুলে ধরেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের আরও, কয়েকদিনে রাজ্য তাদের আটজন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশ কার্যত হাত গুটিয়ে বসে। BJP নেতাদের বক্তব্য, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাই কার্যত ভেঙে পড়েছে। জিয়াগঞ্জের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরও। তিনি বলেন, "যে পরিস্থিতির মধ্যে সবাই জীবনযাপন করছে এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।" তিনি সরাসরি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পাল্টা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, "আমরা তৃণমূলের পক্ষ থেকে সব লক্ষ্য রাখছি । রাজ্যপালকে বলব, তিনি যেন সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন না করেন।" আরও পড়ুন: Kolkata: 'আপনি সবার মুখ্যমন্ত্রী, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন', জিয়াগঞ্জে খুন নিয়ে টুইট অপর্ণা সেনের
আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, জিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, "একের পর এক রাজনৈতিক খুন হচ্ছে। তা রুখতে পুলিশ-প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। কিন্তু পুলিশ বারবারই নিজের দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছে। খুন হলেই পুলিশ আগেভাগে বলে সম্পত্তি বা পারিবারিক বা টাকাপয়সা ধার নিয়েছিল। এগুলি সবই ভিত্তিহীন। পরে আদালতে গিয়ে ধোপে টেকে না। কিন্তু পুলিশ এ রাজ্যে বার বার এই ভিত্তিহীন কথাগুলিই বলে চলে।" তিনি আরও বলেন, "এ ভাবে চলতে পারে না। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছি। সে জন্যই রাষ্ট্রপতি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব।" পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্গেও দেখা করবে বিজেপির এক প্রতিনিধি দল।
জিয়াগঞ্জ কাণ্ডে নিহত শিক্ষকের দাদার দাবি নস্যাৎ করলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একই সঙ্গে এই নিয়ে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে কটাক্ষ করে বললেন, 'এই রাজ্য সরকারের এক্সপায়ারি হয়ে গিয়েছে।' ২৪ ঘণ্টার খবর অনুযায়ী, শুক্রবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে এক বিজেপি নেতার বাড়িতে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই ফের জিয়াগঞ্জ কাণ্ড নিয়ে সরব হন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "নিহত শিক্ষকের দাদা বলেছেন, বন্ধুপ্রকাশবাবু RSS-এর কর্মী ছিলেন না তবে চাঁদা দিতেন। ভাই কোন সংগঠন করতেন তা দাদা জানবেন কী করে। তাছাড়া দু'জনে আলাদা জায়গায় থাকতেন।" নিজের অবস্থানে অনড় থেকে দিলীপবাবু বলেন, 'নিহত শিক্ষক ছোটোবেলা থেকেই RSS-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিজেপির সমর্থক ছিলেন।" জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। এই ঘটনায় প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিজেপির দাবি, আসল অপরাধীদের বাঁচাতে তদন্তপ্রক্রিয়া স্লথ গতিতে চালাচ্ছে পুলিশ। শুক্রবার জিয়াগঞ্জ থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।