অপর্ণা সেন (Photo: instagram)

কলকাতা, ১১ অক্টোবর: মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) জিয়াগঞ্জে একই পরিবারের তিনজনকে খুনের ঘটনায় মুখ খুললেন চিত্র পরিচালক ও অভিনেত্রী অপর্ণা সেন (Aparna Sen)। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা নিয়ে তিনি টুইট করেন। তাতে লিখেছেন, "আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গে RSS কর্মীর গর্ভবতী স্ত্রী ও সন্তানকে নৃশংস ভাবে খুন করা হল! যে কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটুক না কেন নিজেদের জন্য লজ্জা হচ্ছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী দয়া করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন। রাজনৈতিক ভেদাভেদ রেখে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নাগরিকের দায় আপনার। আপনি সবারই মুখ্যমন্ত্রী।"

বিজয়া দশমীতে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad district) জিয়াগঞ্জে বাড়ির ভিতরে ঢুকে স্কুল শিক্ষক, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও ছেলেকে খুন করার অভিযোগ অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মৃত স্কুল শিক্ষকের নাম বন্ধুপ্রকাশ পাল (৩৫), স্ত্রী বিউটি মণ্ডল পাল (৩০) ও তাঁদের বছর আটের ছেলে বন্ধুঅঙ্গন পাল। জিয়াগঞ্জ থানার কানাইগঞ্জ লেবুবাগান এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। দশমীর দিন বেলা ১২টা নাগাদ তিনজনের ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয় বাড়ির ভিতর থেকে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এদিকে বন্ধুপ্রকাশ পালকে তাদের সংগঠনের সদস্য বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) পশ্চিমবঙ্গের সেক্রেটারি জিষ্ণু বসু। খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে রাজ্য বিজেপি। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরও। তিনি বলেন, যে পরিস্থিতির মধ্যে সবাই জীবনযাপন করছে এই ঘটনা তারই প্রতিফলন। তিনি সরাসরি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ওদিকে RSS-এর দাবি নিহত স্কুল শিক্ষক তাঁদের সংগঠনের সদস্য ছিলেন। সেদিনই বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এই হত্যার ঘটনায় নিয়ে রাজ্যের বিশিষ্টদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, "একজন গর্ভবতী মহিলা, একটা ৬ বছরের শিশু নৃশংসভাবে খুন হলেন। তাও কেন বিশিষ্টদের বিবেক জাগে না?" এরপর অপর্ণা সেনের টুইট বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন:  Kolkata: 'যে পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছি, এটি তারই গুরুতর প্রতিফলন", জিয়াগঞ্জের ঘটনায় মন্তব্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরের

খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তীব্র সমালোচনা করে রাষ্ট্রীয় স্বংয়সেবক সংঘ (RSS)। পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) রাষ্ট্রপতি শাসন (President Rule) জারি করার সময় এসেছে কি না তাও কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে তারা জানিয়েছে। RSS নেতা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (VHP) আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি অলোক কুমার (Alok Kumar) বলেন, "এটা দেখা যাচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই। শাসকদল তৃণমূল বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের উপরে অত্যাচার করছে। ভাঙচুর, লুট, ধর্ষণ, খুন করছে।" তিনি আরও বলেন, "আমি আবাক হচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনা করা উচিত যে ভারতের সংবিধান মেনে পশ্চিমবঙ্গে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারবে কি না। না হলে রাষ্ট্রপতি শাসন লাগুর সময় এসেছে কি না তার বিষয়ে বিবেচনা করুক তারা।" অলোক কুমারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা কেরালার (Kerela) চেয়েও খারাপ। এখনও পর্যন্ত কেরালায় সবচেয়ে বেশি RSS কর্মী খুন হয়েছে।