Durga Pujo 2023: দশমীতে নয়, অষ্টমীতে সিঁদুর খেলে সাঁকরাইলের পালবাড়ি! এই আজব রীতি কেন হাওড়ার পালবাড়ির পুজোয়?

দশমী আনে বিষাদ। আর এমন বিষাদের দিনে সিঁদুর খেলার রীতি নেই সাঁকরাইলের পালবাড়ির পুজোয়। এখানে সিঁদুর খেলা হয় অষ্টমীতে। প্রায় দু’শো বছর ধরেই এমন রেওয়াজ এই পুজোর।

Howrah Palbari Durgapujo baran

আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ, রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি, কাশের বনে দোলা—জানান দিচ্ছে পুজো আসছে। বারোয়ারি পুজোর মত তৈরি হচ্ছে বনেদী বাড়ির পুজোও। এরকমই পুরোনো একটি পুজো হাওড়ার সাকরাইলের রাজগঞ্জে পাল বাড়ির পুজো।  প্রায় ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এই পুজো।আনুমানিক ১৮২০ সালে এই বাড়িতে শুরু হয় বৈষ্ণব মতে দেবী দুর্গার আরাধনা।এই বাড়ির প্রাণ পুরুষ রাজারাম পাল।তিনি হাওড়ার আন্দুলের রাজবাড়ীর দেওয়ান ছিলেন।ভালো কাজের জন্য রাজার থেকে ওই এলাকায় জমিদারী পান।সেই সময় রাজগঞ্জে গঙ্গার পাড়ে বাড়ি করেন।কিন্তু হঠাৎ আসা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে যায় সেই বাড়ি। এরপর প্রায় ১৯০ বছর আগে  আন্দুল রাজাদের দেওয়ান ও রাজারাম পালের নাতি চূড়ামণি পাল, রাজগঞ্জে গঙ্গার ধারে তৈরি করেছিলেন অট্টালিকা। সেখানে এক ধারে দুর্গামণ্ডপ, মণ্ডপের সামনে প্রসস্থ উঠোন এবং তিন দিক ঘেরা বারান্দা।নিজের ছেলে ললিত নারায়ণ পালের নামে তৈরি হওয়া বাড়ির নাম দেন ললিত লজ।সেই সময় থেকেই পাল বাড়িতে প্রতিমা পুজো শুরু হয় দুর্গা পুজোতে।যা আজো সমান ঐতিহ্য বহন করে আসছে।এই বংশের কৃতী সন্তান নফরচন্দ্র (এন সি) পালশিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কারিগরি শিক্ষা লাভ করে গঙ্গার পাড়ে ইটভাটা গড়ে তুলেছিলেন । সে সময়ে এন সি পালের ইটের সুনাম ছিল। ব্যবহার করত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও। ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল পুজোর বহরে।দুর্গাপুজোও জমজমাট হতে থাকে।

পারিবারিক প্রথা মেনে জন্মাষ্টমীর দিন দেবীর কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ।মহালয়া থেকে শুরু হয় চন্ডীপাঠ ও ষষ্ঠীতে প্রতিমার বোধন। পুজোর ব্রাহ্মণ থেকে ঢাকি— সকলেই বংশ পরম্পরায় এই বাড়ির পুজোর সঙ্গে যুক্ত। তবে বছর পঁচিশ আগে প্রথম তাল কাটে। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রতিমা শিল্পীর। তার পরবর্তী প্রজন্মের কেউ আর প্রতিমা তৈরিতে আগ্রহী ছিলেন না। তাই এখন ওই বাড়ির প্রতিমা বানান অন্য পটুয়া।

বাড়ির মহিলারা পুজোর সমস্ত কাজে হাত লাগান।অষ্টমীতে তৈরি হয় বিশেষ ভোগ।এই বাড়ির একচালার দুর্গা প্রতিমা ঠাকুর দালানে তৈরি হয়।কোনো বলি প্রথা এখানে নেই। তবে এখানকার এক অদ্ভুত রীতি তাক লাগাবে। পালবাড়িতে দশমীতে নয় অষ্টমীর দিন হয় সিঁদুর খেলা।দশমীর দিন দেবী দুর্গাকে কাঁধে করে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয় গঙ্গায়।

আন্দুলে এই পরিবারের বড় দেবোত্তর সম্পত্তি রয়েছে। তার আয়েই পুজো, রথযাত্রা প্রভৃতি উৎসবের ব্যয় নির্বাহ হয়। পুজোর দিনগুলিতে বাড়ি হয়ে ওঠে মিলন মেলা। দেশবিদেশে থাকা আত্মীয় স্বজনরা আসেন এই বাড়িতে।নিজেরা আনন্দ করার পাশাপাশি সামিল করে নেন এলাকার দুস্থ পরিবারগুলোকে।একসাথে চলে খাওয়া দাওয়া।দেওয়া হয় জামাকাপড়।পুজোর সময় আগামী দিনেও এভাবেই সবাইকে নিয়ে আনন্দে সামিল হয়ে যান পারিবারিক সদস্যরা।

(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)

Share Now

Share Now