Netaji Subhash Chandra Bose: নেতাজির জন্মদিনের আগে জেনে নিন তাঁর অজানা কাহিনী

তরুণ সুভাষের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ হাত ধরে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই কংগ্রেস কমিটির প্রচার সচিবের পদ পান তিনি

২৩ জানুয়ারি দেশের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhash Chandra Bose) জন্মবার্ষিকী। ১৮৯৭ সালে ওড়িশার কটকে জন্ম হয়েছিল এই মহান বিল্পবী বাঙালির। ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। বিবেকানন্দের বই পড়তে পছন্দ করতেন ছোট্ট সুভাষ। বিবেকানন্দের আদর্শই ধীরে ধীরে স্বাধীনতা সংগ্রামী হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল তাঁকে।

তরুণ সুভাষের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ হাত ধরে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই কংগ্রেস কমিটির প্রচার সচিবের পদ পান তিনি। এরপর ইংল্যান্ডের যুবরাজের ভারতে আসার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে দেখা যায় তাঁকে। যার ফলস্বরূপ পুলিশি হেফাজতে থাকতে হয়েছিল সুভাষকে। কারামুক্তির পর বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক করা হয় তাঁকে। পরবর্তীকালে কলকাতা পুরসভার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে নিযুক্ত করা হয় সুভাষচন্দ্র বসুকে।

মহাত্মা গান্ধি ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, দুজনেরই লক্ষ্য ছিল দেশের স্বাধীনতা। তবে দুজনের চিন্তাভাবনা ছিল একদম বিপরীত।গান্ধীজি বিশ্বাস করতেন অহিংস আন্দোলনে। অন্যদিকে অহিংস আন্দোলনে স্বাধীনতা পাওয়া সম্ভব নয়, এমনটাই মনে করতেন সুভাষচন্দ্র বসু। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি দেশাবাসীদের একজোট করা শুরু করেন। এমনকি অস্ত্রবলের উদ্দেশ্যে বিদেশে যাওয়ার কথাও ভাবেন তিনি। কিন্তু সুভাষচন্দ্র বসুর এই মতের বিরোধিতা করেন মহাত্মা গান্ধি ও জওহরলাল নেহেরু।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে কলকাতায় গৃহবন্দী করে ব্রিটিশরা। কিন্তু সকলের চোখ এড়িয়ে ছদ্মবেশে দেশ ত্যাগ করেন তিনি। প্রথমে কাবুল, তারপর রাশিয়ার মস্কো হয়ে জার্মানির বার্লিনে পৌঁছান তিনি। এমনসময় দেশে খবর রটে যায় নেতাজি নিরুদ্দেশ। অন্যদিকে তিনি প্রস্তুতি শুরু করেন স্বাধীনতা সংগ্রামের।

১৯৪৩ সালে রাসবিহারী বসুর অনুরাধে ডুবো জাহাজে করে জার্মানি থেকে জাপানে পৌঁছান সুভাষচন্দ্র বসু । সেখানে গিয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আজাদ হিন্দ বাহিনীর সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনার দায়িত্ব নেন তিনি। আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈন্যরাই সুভাষচন্দ্র বসুকে নামকরণ করেন নেতাজি । এরপর নেতাজির 'দিল্লি চলো'-র ডাকে একজোট হয় সেনাবাহিনী। ভারতের স্বাধীনতার পিছনে অন্যতম এবং সবচেয়ে বড় অবদান রয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন আজাদ হিন্দ বাহিনীর। ১৯৪৩ সালে ইংরেজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আজাদ হিন্দ ফৌজ। ১৯৪৪ সালে ভারতের মাটি ইম্ফলে স্বাধীন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে তাঁরা। এরপর ধীরে ধীরে আজাদ হিন্দ বাহিনী দুর্বল হতে শুরু করে।

স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্যে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট একটি বিমান দুর্ঘটনার পরই আর খোঁজ পাওয়া যায়নি নেতাজির। এই দুর্ঘটনা ঘিরে আজও মানুষের মনে রয়েছে হাজারো প্রশ্ন, যার উত্তর হয়ত কেউ দিতে পারবে না।