Hasan Azizul Huq Dies: প্রয়াত হাসান আজিজুল হক, দুই বাংলায় শোকের ছায়া
প্রয়াত দুই বাংলার জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। সোমবার রাত নটা নাগাদ রাজশাহীর বাড়িতেই সাহিত্যিকের মৃত্যু হয়েছে।
রাজশাহী, ১৬ নভেম্বর: প্রয়াত দুই বাংলার জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক (Hasan Azizul Huq)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। সোমবার রাত নটা নাগাদ রাজশাহীর বাড়িতেই সাহিত্যিকের মৃত্যু হয়েছে। অখণ্ড ভারতবর্ষের বর্ধমানের যবগ্রামে ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি হাসান আজিজুল হকের জন্ম হয়। দেশভাগের পর সাহিত্যিকের পরিবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীতে চলে যায় পাকাপাকি ভাবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পর সেখানেই দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ছাত্রাবস্থাতেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে পাকিস্তান সেনার হাতে নির্যাতিতও হতে হয় তাঁকে। আরও পড়ন-Punjab: iPhone নিয়ে বচসার জের, ছুরিকাহত যুবক
অধ্যাপনার অবসরে লেখালিখি শুরু। ১৯৬০ সাল নাগাদ লেখক হিসেবে পরিচিতি পেতে থাকলেন। ২০০৬ সালে অবিভক্ত বঙ্গের রাঢ় অঞ্চলের সামাজিক, ব্যবহারিক, প্রাকৃতিক, লৌকিক জীবন, মহামারী, অনাহার, সাম্প্রদায়িক বিভাজন, দেশভাগ, সবকিছুই তাঁর উপন্যাস “আগুন পাখি”-তে বর্ণিত হয়েছে। এই উপন্যাসের জন্যই ২০০৮ সালে আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত হন সাহিত্যিক। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস-কে নিয়ে লিখলেন ‘সক্রেটিস’। এই প্রবন্ধকে বাংলা সাহিত্যের আখার বলা যেতে পারে। এছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য লেখনির মধ্যে রয়েছে ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’, ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ‘নামহীন গোত্রহীন’ প্রভৃতি গল্পগ্রন্থ। রয়েছে ‘কথাসাহিত্যের কথকতা’, ‘অতলের পাখি’-র মতো প্রবন্ধ।
প্রিয় সাহিত্যিকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দুই বাংলার সাহিত্যিক সমাজ ও পাঠক সমাজ। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁর সঙ্গে যে হাসান আজিজুল হকের দারুণ সম্পর্ক ছিল, তা মনে করাতে ভোলেননি প্রবীণ সাহিত্যিক। তসলিমা নাসরিন এক ফেসবুক বার্তায় হাসান আজিজুল হককে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ১৯৯২-বা ৯৯ সাল নাগাদ হাসান আজিজুল হকের আমন্ত্রণে তাঁকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয়েছিল। সেখানে তসলিমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের যে কয়েকজন সাহিত্যিকের লেখার অনুরাগী তসলিমা নাসরিন, তার মধ্যে অন্যতম হাসান আজিজুল হক। তবে একে একে নিভিছে দেউটি। সাহিত্যের দিকপালদের আসন ধীরে ধীরে খালি হচ্ছে। যা আদৌ কখনও পূরণ হওয়ার নয়। গত আগস্টে বার্ধ্যকজনিত অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন হাসান আজিজুল হক। তবে তাঁর এই ফেরা যে স্বল্প সমের জন্য হতে চলেছে, তা বোঝেননি প্রিয়জন, পাঠক, অনুরাগী মহল।