West Bengal: বাজি বিপর্যয়ে সরকারের কাছেই ক্ষতিপূরণের দাবি পরিবেশকর্মীদের
রাজ্যের বেশিরভাগ বাজি কারখানাই (Firework Factory) চলছে বেআইনিভাবে (Illigal)। তাই কাজ করতে গিয়ে আহত কিংবা মৃত কোনও শ্রমিক (Labour) বা শ্রমিকের পরিবারই শ্রম আইনের (Labour Law) আওতায় পড়েন না। যার কারণেই ক্ষতিপূরণও (Compensation) মেলে না। তাই এহেন পরিস্থিতিতে বাজি কারখানায় মৃত প্রতিটি শ্রমিকের পরিবারের জন্যই বাধ্যতামূলক ক্ষতিপূরণের দাবি তুললেন পরিবেশকর্মীরা (Environmentalist)। একই সঙ্গে বেআইনি বাজি কারখানাগুলিকে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে অনুমোদন দেওয়ারও দাবি উঠছে।
কলকাতা, ১১ অক্টোবর: রাজ্যের বেশিরভাগ বাজি কারখানাই (Firework Factory) চলছে বেআইনিভাবে (Illigal)। তাই কাজ করতে গিয়ে আহত কিংবা মৃত কোনও শ্রমিক (Labour) বা শ্রমিকের পরিবারই শ্রম আইনের (Labour Law) আওতায় পড়েন না। যার কারণেই ক্ষতিপূরণও (Compensation) মেলে না। কিন্তু উৎসবের মরশুমে এর চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তাই এহেন পরিস্থিতিতে বাজি কারখানায় মৃত প্রতিটি শ্রমিকের পরিবারের জন্যই বাধ্যতামূলক ক্ষতিপূরণের দাবি তুললেন পরিবেশকর্মীরা (Environmentalist)। একই সঙ্গে বেআইনি বাজি কারখানাগুলিকে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে অনুমোদন দেওয়ারও দাবি উঠছে। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন ল’অফিসার তথা পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখার্জির (Biswajit Mukherjee) কথা অনুযায়ী, " ২০০৯ থেকে রাজ্যে বাজি বানাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫৩ জনের। জখম একশোরও বেশি শ্রমিক। যাদের মধ্যে অনেকেই অপ্রাপ্তবয়স্ক। অথচ, এঁদের ক্ষতিপূরণের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের।"
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের (West BengalPollusion Control Board) হিসেবে, এ রাজ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত (License) বাজি কারখানার সংখ্যা মাত্র ৪৮টি। তারমধ্যে পর্ষদের আলিপুর আঞ্চলিক অফিস এলাকাতে কারখানার সংখ্যা সর্বাধিক। এই এলাকায় অনুমোদনপ্রাপ্ত বাজি কারখানার সংখ্যা ৩৩টি। রাজ্যের অন্যান্য জেলায় ছোট-মাঝারি-বড় মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার বাজি কারখানা চলছে রমরমিয়ে। যেখানে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় কয়েক লক্ষ। অন্যদিকে, পরিবেশ সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’(Sabuj Mancha)-র সদস্য নব দত্তের বক্তব্য, রাজ্যের বাজি কারখানার খুব সামান্য অংশের উপরেই সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এই কারখানাগুলির কোনও বৈধতা না থাকায় এর সঙ্গে যুক্ত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক একটি বিপজ্জনক পেশার সঙ্গে যুক্ত থেকেও উপযুক্ত নিরাপত্তা এবং ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি অবশ্যই মানবিক দৃষ্টিতে দেখা দরকার। কারণ যে শ্রমিকেরা এই কাজে যুক্ত। তাঁরা জানেন না, কোন কারখানার লাইসেন্স আছে আর কার নেই। নব দত্ত এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, "অনুমোদন দিতে হবে শর্তসাপেক্ষে। তারপর বেআইনি কারখানাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ, এই বাজি কারখানাগুলিতে আতসবাজি ছাড়াও আরও কিছু বিস্ফোরক তৈরি হয় যা অন্য কাজেও ব্যবহার করা হয়। এই পর্যবেক্ষণ খোদ জাতীয় পরিবেশ আদালতেরই।" আরও পড়ুন: Durga Puja 2019: জোরকদমে চলছে কার্নিভালের প্রস্তুতি, পুজো শেষে জমজমাট রেড রোড
জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই বেআইনি বাজি কারখানা নিয়ে বৈঠক করেছে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। যে বৈঠকে বেআইনি কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান (Campaign) চালানোরও সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ-পরিবেশ দপ্তর-শ্রম দপ্তর এবং পুলিশের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত করা কার্যত অসম্ভব। আতসবাজি উৎপাদক সংগঠনের মতে, এখন শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়াই নয়, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুরেও গ্রামে গ্রামে প্রায় কুটির শিল্পের মতো গড়ে উঠেছে বাজি কারখানা। দিন তিনেক আগেই ডায়মন্ড হারবারের রামনগর থানা এলাকায় আতসবাজি বানাতে গিয়ে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত এক দশকের হিসেবে, বাজি বানাতে গিয়ে এ রাজ্যে মারা গিয়েছেন অন্তত ৫৩ জন মানুষ।
(এই সময় পত্রিকার খবর অনুযায়ী)