Professor Sanjida Quader: অধ্যাপিকা মাথায় স্কার্ফ পরার অনুমতি পাওয়া স্বত্বেও পুনরায় যোগদানে 'না', কেন?

'আমি কখনও কোথাও বলিনি আমি চাকরি ফিরে পেতে লড়ছি। আমি বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়েছি, এটা মৌলিক অধিকার রক্ষার লড়াই।'

professor Sanjida Quader (Photo Credit: Instagram)

কলকাতা:  কর্ণাটকের ঘটনার আঁচ এবার খোদ কলকাতা শহরে। হিজাব পরা নিয়ে কলকাতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ৷  শাড়ি বা সালওয়ার কামিজের সঙ্গে হিজাবে মাথা ঢাকার জন্য কলকাতার একটি বেসরকারি আইন কলেজ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন অধ্যাপিকা সানজিদা কাদের (Professor Sanjida Quader) ।

সূত্রে খবর, রমজান মাস থেকে কলেজে হিজাব পরা শুরু করেন অধ্যাপিকা। গত ৩১ মে হঠাৎই কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজের পোশাক-বিধি তৈরি করেন। তাঁকে হিজাব পরতে নিষেধ করেন। বলা হয় ড্রেস কোডে ধর্মীয় কিছু পরা যাবে না। এরপর অধ্যাপিকা ইস্তফা দিলেও, নিজের অধিকারের দাবিতে রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের দ্বারস্থ হন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন। অধ্যাপিকা বলেন, এ দেশের সাংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ। সবার নিজস্ব ধর্মীয় বিধি পালন করার ও পোশাক পরার অধিকার রয়েছে। তাহলে এক্ষেত্রে কেনও তাঁকে হিজাব খুলতে বাধ্য হতে হবে!

এরপর  সমস্যা মেটাতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে যুক্তিতর্কের শেষে অধ্যাপিকাকে বলা হয় অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের জন্য নির্ধারিত পোশাকই তাঁকে পরতে হবে, তবে তিনি চাইলে তাঁর ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকতে পারেন। এরপর অধ্যাপিকা পুনরায় যোগ দেবেন কিনা তা জানাতে কিছুদিন সময় চেয়ে নেন।

অধ্যাপিকা আজ জানিয়েছেন তিনি ওই কলেজে পুনরায় যোগদান করবেন না। মাথা ঢেকে কলেজে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া স্বত্বেও কেন তিনি পুনরায় যোগদান করছেন না, সে বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'এই লড়াইটা কখনওই আমার চাকরি ফিরে পাওয়ার লড়াই ছিল না, লড়াইটা ছিল ধর্মনিরপেক্ষ দেশে নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতার লড়াই। আমি কখনও কোথাও বলিনি আমি চাকরি ফিরে পেতে লড়ছি। আমি বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়েছি, এটা আসলে মৌলিক অধিকার রক্ষার লড়াই।'

অধ্যাপিকা আরও বলেন, 'আমার যে শিক্ষার্থীরা ওখানে পড়াশুনা করছেন এবং আমার সহকর্মীদের যাতে এরকম কোনও বৈষম্যের শিকার না হতে হয় তার জন্য এই লড়াইটা আমার খুব জরুরি বলে মনে হয়েছে। আর তা খানিকটা হলেও সুনিশ্চিত করতে পেরে আমি খুশি। পাশাপাশি তিনি বলেন, আমি মনে করি রাতারাতি মানুষের মানসিকতা পাল্টে যায়না, তাই অন্য কোথাও চাকরি করলে আমি অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো। কারণ ভালো কাজ করার জন্য ইতিবাচক পরিবেশের খুব প্রয়োজন।'