Chandrayaan 2: চাঁদে নামার ২.১ কিমি আগে বিক্রম ল্যান্ডার-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, জানালেন ইসরো কর্তা শিবন
হৃদয়ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের কয়েক মুহূর্তে আগে বিপত্তির জেরে চন্দ্রযান ২ মিশন নিয়ে উদ্বেগ থাকল। অভিযান একেবারে শেষ মুহূর্তে বিপত্তি হওয়ায় ইসরো-র বিজ্ঞানী-রা চরম উৎকণ্ঠায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চন্দ্রযান-২-র শেষ আপডেট উদ্বেগের সঙ্গে দিলেন ইসরো চেয়ারম্যান কে শিবন। অথচ আজ একেবারে সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল।
Chandrayaan-2: হৃদয়ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের কয়েক মুহূর্তে আগে বিপত্তির জেরে চন্দ্রযান ২ মিশন নিয়ে উদ্বেগ থাকল। চন্দ্রপৃষ্ঠের ২.১ কিমি আগে বিক্রম ল্যান্ডার-এর সঙ্গে গ্রাউন্ড স্টেশনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এমন কথাই জানাল ইসরো (ISRO)। অভিযানের একেবারে শেষ মুহূর্তে বিপত্তি হওয়ায় ইসরো-র বিজ্ঞানী-রা চরম উৎকণ্ঠায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)-কে চন্দ্রযান-২-র শেষ আপডেট বেশ উদ্বিগ্ন মুখেই দেন ইসরো চেয়ারম্যান কে শিবন।
কঠিন সময়ে ইসরো বিজ্ঞানীদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, ''জীবনে ওঠা নামা থাকেই। এটাও মোটেই কম প্রাপ্তি নয়। গোটা দেশে আপনাদের জন্য গর্বিত। ভাল কিছু আশা করছি। আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমারা দেশ, বিজ্ঞান ও মানবকল্যাণের জন্য বড় সেবা করেছেন। সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলুন, আমি সব সময় আপনাদের পাশে আছি।''
অথচ আজ একেবারে সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। রাফ ব্রেকিং প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার উচ্চতা থেকে শুরু হয় ফাইন ব্রেকিং প্রক্রিয়া। ইতিহাসের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকে গোটা দেশ।
ভারত তখন সময় রাত দুটো ছুঁই ছুই। শুরু হয় কাউন্টাউাউন। কিন্তু ল্যান্ডিংয়ের একেবারে শেষের দিকে হয় বিপত্তি। চন্দ্রপৃষ্ঠের ২.১ কিমি আগে বিক্রম ল্যান্ডার-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা দেওয়ার কথা ভারতের চন্দ্রযান-২। অন্ধ্র প্রদেশে শ্রী হরিকোটায় রাতে ইসরো-র দফতরে বসে বিজ্ঞানী, ৭০ জন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ঐতিহাসিক চন্দ্রযান ২-র চাঁদে পা রাখার ঐতিহাসিক মুহূর্ত দেখছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ৭০.৯° অক্ষাংশে 'মানজিনাস-সি' এবং 'সিম্পেলিয়াস-এন' গহ্বরের মাঝামাঝি জায়গায় নামার কথা চন্দ্রযান ২-র। চাঁদের দক্ষিণাংশেই মিলতে পারে জল ও জীবাশ্মের সন্ধান। ইসরোর এই অভিযানে মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলল। কারণ চাঁদে বিশ্বের ২৯তম এই অভিযানে সেখানকার দক্ষিণ মেরুর রহস্য উন্মোচন হওয়ার অপেক্ষা। আরও পড়ুন-নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ৭০ ছাত্রছাত্রী সাক্ষী থাকবে চন্দ্রযান ২ -র চাঁদে পা রাখার ঐতিহাসিক মুহূর্তে
Watch Live : Landing of Chandrayaan2 on Lunar Surface https://t.co/zooxv9IBe2
চন্দ্রযান টু চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করার পর ২২ আগস্ট প্রথম গহ্বরগুলির ছবি পাঠায়। ২, ৬৫০ কি.মি দূরত্ব থেকে ওই ছবি তোলা হয়েছিল। এরপর চাঁদের আরও কাছাকাছি পৌঁছে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায় চন্দ্রযান ২। ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) ও অরবিটার দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বুধবার ভোররাতে দ্বিতীয় ডি- অরবিটিংয়ের মাধ্যমে চাঁদের একদম কাছাকাছি পৌঁছে যায় চন্দ্রযান- ২ এর ল্যান্ডার।
এতদিন ধরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যাওয়ার সাহস কেউ দেখায়নি। কারণ চির অন্ধকারে ঢাকা চাঁদের দক্ষিণ মেরু যেমন ঠান্ডা, তেমন বিপদসঙ্কুল। ইসরো-র সাহসী ও ঐতিহাসিক এই অভিযানের পর বোঝা যাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ঠিক কী আছে! চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কি আরও বড় জলের ভাণ্ডার রয়েছে? সেটা জানার অপেক্ষায় সবাই।
গত ২২ জুলাই দুপুর ২.৪৩ মিনিটে সফল উত্ৎক্ষেপণ হয় 'চন্দ্রযান ২'-এর। সেদিন বাহুবলী নামের রকেট ৩ হাজার ৮৫০ কিলোগ্রামের চন্দ্রযানকে নিয়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে উড়ে গিয়েছিল। বাহুবলী রকেট উৎক্ষেপণের পর ১৬ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে চন্দ্রযান-২-কে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেয়। চন্দ্রযান-২-এর অভিযানে খরচ হয়েছে প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা। গত ২০ অগস্ট পৃথিবী ছেড়ে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে যায় চন্দ্রযান-২।