ভরা পূর্ণিমায় চাঁদের আলোয় উপভোগ করুন মুকুটমণিপুরের মাধুর্য

মুকুটমণিপুর, এটুকু কানে এলেই পাহাড় জঙ্গলের নির্জনতা ছাপিয়ে কুল কুল বয়ে যাওয়া নদী তার উপস্থিতি জানান দেয়। ছুটি কাটানোর পক্ষে মুকুটমণিপুরের সঙ্গে তুলনীয় পর্যটনস্থল দক্ষিণবঙ্গে খুব কমই আছে। কংসাবতী(Kansabati river) ও কুমারী নদীর(Kumari river) সঙ্গমে উইক-এন্ড ছুটি কাটানোর দারুণ স্পট মুকুটমণিপুর

মুকুটমণিপুর(Photo Credit: Wikimedia Commons)

ছুটিতে ছোটাছুটি করবেন না তো কবে করবেন, তবে সেই ছোটাছুটি যদি হয় বেড়াতে যাওয়ার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সপ্তাহান্তে ছুটি মিলতেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়ুন দেখি মন এমনিই ভাল হয়ে যাবে। আমাদের বাংলায় দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই শুধু খুঁজেপেতে যাওয়ার উদ্যোগ করতে হবে এই যা। করে ফেললেই হল, তারপর শুধু হারিয়ে যাওয়ার পালা। টইটইয়ের ১৫ পর্বে রইল মকুটমণিপুরের কথা।

মুকুটমণিপুর(Mukutmanipur)

মুকুটমণিপুর, এটুকু কানে এলেই পাহাড় জঙ্গলের নির্জনতা ছাপিয়ে কুল কুল বয়ে যাওয়া নদী তার উপস্থিতি জানান দেয়। ছুটি কাটানোর পক্ষে মুকুটমণিপুরের সঙ্গে তুলনীয় পর্যটনস্থল দক্ষিণবঙ্গে খুব কমই আছে। কংসাবতী(Kansabati river) ও কুমারী নদীর(Kumari river) সঙ্গমে উইক-এন্ড ছুটি কাটানোর দারুণ স্পট মুকুটমণিপুর। কুমারী আর কংসাবতীর জলে পুষ্ট ৮৬ বর্গ কিলোমিটারের জলাধার। টলটলে নীল জলে ছোট ছোট ঢেউ, তারই মাঝে ভেসে বেড়ায় নয়নলোভন বাহারি নৌকা। দিকচক্রবাল ঢাকা পড়েছে অনুচ্চ পাহাড়ি টিলায়। আঁকাবাঁকা পায়ে চলা পথ পাহাড়ের গা বেয়ে উধাও। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দুই-ই মনোরম। আরও অপরূপ জ্যোৎস্না রাত। লেকের জলে বোটিংয়ের ব্যবস্থাও আছে।নিরালা নিভৃতে টিলার ঢালে টুরিস্ট লজটির পরিবেশটিও সুন্দর। লজের সামনে কেয়ারি করা প্রশস্ত লন, তারই সামনে কুমারী ও কংসাবতীর বাঁধ। বনবাংলোর অবস্থানটি যেন আরও মুগ্ধ করে। পাহাড় শীর্ষের বনবাংলোয় পৌঁছে ঘোরানো পেঁচানো পাহাড়ি পথ। তাতে অবশ্য গাড়ি ওঠে। শীতের দিনে মিষ্টি রোদে গা এলিয়ে বা ভরা পূর্ণিমায় চাঁদের আলোয় শরীর ভিজিয়ে আকণ্ঠ পান করে নাও মুকুটমণিপুরের মাধুর্য।

বাঁকুড়ার(Bankura) এই মোহময়ী জায়গায় আসতে মন যেমন উতলা তেমনও পা-ও। তাই দেরি না করে এই উইকএন্ডেই বেরিয়ে পড়ুন। কলকাতা ছাড়াও দুর্গাপুর, বাঁকুড়া, আসানসোল, বিষ্ণুপুর থেকে সোজা মুকুটমণিপুর আসার বাস পেয়ে যাবেন। থাকার জন্য টুরিস্ট লজ, বনবাংলো ছাড়াও রয়েছে সেচ ও জল দপ্তরের কংসাবতী ভবন। বিভিন্ন মানের বিভিন্ন দামের বেসরকারি হোটেলও রয়েছে মুকুটমণিপুরে।

মুকুটমণিপুরের বাঁধ ধরে ৬ কিমি যেতেই পাহাড়ি টিলা পরেশনাথ, সেখানেই হিন্দু দেবতা শিব ও জৈন দেবতা পার্শ্বনাথ স্বামীর মন্দির। ফেরিতে নদী পেরিয়ে ওপারে আরও দেড় কিমি গিয়ে জলাধারে বেষ্টিত মহুয়া-কেন্দু-পলাশ-আমলকীতে ছাওয়া ছোট্ট সবুজ দ্বীপ বনপুকুরিয়ার ডিয়ারপার্কে ঘুরতে যেতে পারেন। আর ৪ কিমি দূরে গোরাবাড়ি পেরোলেই অম্বিকানগর। অতীতের কীর্তিখ্যাত রাজা অনন্তধবল দেও-র রাজধানী আজ বিধ্বস্ত হলেও মন্দিরে দেবী অম্বিকাকে(Devi Ambika) দর্শন করে আসা যায়।