IPL Auction 2025 Live

Sleep Divorce: স্বামী -স্ত্রী কেন বাধ্য হন আলাদা বিছানায় ঘুমাতে? স্লিপ ডিভোর্স এর দিকে কেন ঝুঁকে জেনারেশন ওয়াই?

Sleep Divorce Photo Credit: X@timesofindia

জীবনসঙ্গীর নাকডাকা, নড়াচড়া, উঠে বারবার ওয়াশরুমে যাওয়া অথবা ফ্যান বা এসি চলবে কি চলবে না—সেই সিদ্ধান্তে একমত হতে না পারা, ভিন্ন ঘুমের অভ্যাস এইসবে কি আপনি  বিরক্ত? দেরী না করে তাহলে এখনই নিয়ে নিন স্লিপ ডিভোর্স। ডিভোর্স শব্দটা শুনে চমকে গেলেন? না এই শব্দের সঙ্গে বিচ্ছেদের কোন সম্পর্ক নেই। বরং এই ডিভোর্স আপনার সম্পর্ককে মজবুত করে।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকলিন হাসপাতালের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ স্টেফানি কলিয়ার জানান, স্লিপ ডিভোর্স হলো এমন একটা বিষয়, যেটি প্রাথমিকভাবে সাময়িক সময়ের জন্য করা হয়। কিন্তু যখন দম্পতিরা বুঝতে পারেন একা ঘুমালে তাদের ভালো ঘুম হয় তখন বিষয়টি আর সাময়িক থাকে না।

স্লিপ ডিভোর্সের সঙ্গে স্বাস্থ্যগত কারণ জড়িত। কারণ অনেকেই ঘুমের মধ্যে  নাক ডাকেন, ঘুমের মাঝে কেও  পা নাড়ান। কারওর স্লিপ ওয়াকিং, অর্থাৎ ঘুমের ঘোরে হাঁটার অভ্যাস থাকতে পারে। অথবা, শারীরিক সমস্যার কারণে তারা ঘনঘন বাথরুমেও যেতে পারে। অনেকে বিছানায় বেশি নড়াচড়া করে, গড়াগড়ি খায়- এইসবগুলিই তাদের সঙ্গীকে বিরক্ত করে। যার ফলে স্লিপ ডিভোর্স নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

ওয়াই জেনারেশনের মাঝে বাড়ছে স্লিপ ডিভোর্সঃ- 

গত বছরের শেষের দিকে জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেত্রী ক্যামেরন ডিয়াজ ‘লিপ্সটিক অন দ্য রিম পডকাস্ট’কে বলেন যে তিনি এবং তার স্বামী একই ঘরে ঘুমান না।তিনি বলেন- “আমি মনে করি যে আলাদা ঘরে ঘুমানোর বিষয়টিকে আমাদের স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা উচিৎ”। যদিও এই বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে এবং গণমাধ্যমেও নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তবে হলিউড তারকার এই বিষয়টি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।অ্যামেরিকান অ্যাকাডেমি অব স্লিপ মেডিসিনের ২০২৩ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি উত্তরদাতা জানিয়েছেন যে ভালোভাবে ঘুমানোর জন্য তারা মাঝে মাঝে বা প্রায় প্রতিদিনিই সঙ্গী থেকে আলাদা রুমে ঘুমায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২৮ থেকে ৪২ বছর বয়সী (এরা মিলেনিয়াল বা ওয়াই জেনারেশন, এদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মাঝে) উত্তরদাতাদের ৪৩ শতাংশ জানিয়েছে যে তারা তাদের সঙ্গীর সাথে ঘুমায় না।যাদের জন্ম ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি, অর্থাৎ যারা জেনারেশন এক্সের মানুষ, তাদের ৩৩ শতাংশ; জেনারেশন জেড (১৯৯৭ সাল থেকে ২০১২ সালের মাঝে যাদের জন্ম)-এর ২৮ শতাংশ এবং বেবি বুমার্সদের (১৯৪৬ এবং ১৯৬৪ সালের মাঝে যারা জন্মগ্রহণ করেছে) ২২ শতাংশও একই কথা জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. কলিয়ার আলাদা ঘুমানোর ট্রেন্ডটিকে ব্যাখ্যা করে বলেন- “তরুণ প্রজন্মের মাঝে স্লিপ ডিভোর্সের প্রবণতা বেশি কেনো এর কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা যেতে পারে যে আলাদা ঘুমানোর বিষয়টিকে তারা ততটা অসম্মানজনক মনে করে না। এটি একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তন। তারা ভাবে: যদি আমি ভালো ঘুমাই, ভালো বোধ করি, তবে কেন নয়?”

তবে ঐতিহাসিকদের মতে, অতীতে দম্পতিদের কাছে আলাদা রুমে ঘুমানোটা খুব সাধারণ একটি বিষয় ছিল। কিন্তু ইতিহাসের পরিবর্তনের সাথে সাথে সেই ধারণাতেও পরিবর্তন এসেছে।

 

আলাদা ঘুমানোর সুবিধা কী কী

বিশেষজ্ঞরা একটা বিষয়ে একমত যে যেসব দম্পতি আলাদা রুমে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাদের জন্য কিছু সুবিধা আছে।

 

পা লমোনোলজিস্ট এবং এএএসএম-এর মুখপাত্র সীমা খোসলা এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।তিনি বলেন- “আমরা জানি যে ঘুম না হলে আপনার মেজাজ খারাপ হতে পারে। যারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারে না, সঙ্গীর সঙ্গে সাথে তর্কে জড়ানোর সম্ভাবনা তাদের বেশি থাকে। কেউ আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, তার প্রতি আপনার বিরক্তি জন্মাতে পারে এবং এটি সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে”। “রাতে ভালো ঘুম হওয়া শরীরের সুস্থতা ও খুশি থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই, কিছু দম্পতি নিজেদের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই”, তিনি যোগ করেন।

 

স্লিপ ডিভোর্সের অসুবিধাসমূহ