ক্যাপ্টেনের সঙ্গে বিবাদের জেরে পিচ ছাড়লেন সিধু, মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফার পর শেরির রাজনীতি ছাড়ার জল্পনা

চাপের মুখে অবশেষে পঞ্জাবের মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন কংগ্রেসের ক্রিকেটার-বিধায়ক নভোজত সিং সিধু। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে বিবাদের জেরে কোণঠাসা সিধু মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন।

ক্রিজ ছাড়লেন সিধু। (Photo Credits: IANS)

অমৃতসর, ১৪ জুলাই:  সুতোর ওপর হাঁটছিলেন কংগ্রেসের ক্রিকেটার-মন্ত্রী নভজোত সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu)। সুতো ছেড়ার আগে বাধ্য হয়েই নিজে থেকেই নেমে পড়লেন সিধু। চাপের মুখে অবশেষে পঞ্জাবের মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন নভোজত সিং সিধু। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং (Amrinder Singh)-য়ের সঙ্গে বিবাদের জেরে কোণঠাসা সিধু মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন।

বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে সিধু-র রাজনীতির ইনিংস ভালই চলছিল, কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী-কে টিকিট না দেওয়ার ক্ষোভে অমরিন্দর সিংকে দায়ি করার পর থেকেই সিধু দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। আরও পড়ুন-নেপালের ভয়াবহ বন্যায় প্রাণহানি বেড়ে ৪৩

লোকসভা নির্বাচনের কিছু দিন আগে থেকেই সুতোর ওপর হাঁটা রাজনীতি করছিলেন সিধু। দুঁদে রাজনীতিবিদরা যেভাবে সব সময় এস্কেপ রুট বা পালানোর জায়গা রাখেন, তেমন কিছুই রাখছিলেন না সিধু। অনেকেই বলছিলেন, সিধু অনেকটা টি টোয়েন্টি-র মত ঝুঁকি নিয়ে ইনিংস গড়ছে। হয় আউট, না হয় ছক্কা। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেসের সবচেয়ে চাহিদার পাত্র সিধু শেষ অবধি আউটই হলেন।

লোকসভা নির্বাচনের আগে সিধু বলেছিলেন, আমেথিতে রাহুল গান্ধী হেরে গেলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। রাহুলের জয়ে সিধু এতটাই নিশ্চিত ছিলেন। কিন্তু আমেথিতে বিজেপি-র স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান রাহুল। তারপর থেকেই জল্পনা ছিল সিধুর রাজনীতি ছাড়ার।

My letter to the Congress President Shri. Rahul Gandhi Ji, submitted on 10 June 2019. pic.twitter.com/WS3yYwmnPl

পঞ্জাবে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পিছনে সিধুকে দায়ি করেন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। বালাকোট হামলার পর সিধুর ইমরানের খানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাটা পঞ্জাবের মানুষ ভালভাবে নেয়নি বলে জানান অমরিন্দর। সিধু এই অভিযোগের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। সিধুকে ছাড়াই ক্য়াবিনেট বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেসের জনপ্রিয় নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর। এরপর সিধু পদত্যাগ করলেন। একটা সময় বিজেপি-র হয়ে সাংসদ-বিধায়ক হওয়া সিধুর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি ছিলেন কংগ্রেসের সেনাপতি। নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নিয়ম করে রোজ জনসভা, সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য সহকারে তোপ দাগতেন। বালাকোট হামলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসা, মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের নেতৃত্বকে অস্বীকারের মত ঘটনা থেকে বেরিয়ে আসতে রাহুল গান্ধীর কাছের লোক হওয়ার চেষ্টা করে দেশের রাজনীতিতে বড় ভূমিকায় আসতে চেয়েছিলেন সিধু। কিন্তু রাহুলের ইস্তফার পর সিধু বুঝতে পারেন তাঁর আর কোনও রাস্তা খোলা নেই। দেশজুড়ে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পর পদত্যাগের হিড়িক নয়া মাত্রা পেল সিধুর মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা। পঞ্জাবকেই মনে করা হয় কংগ্রেসের শেষ গড়। সিধুর পদত্যাগ সেখানেও কি হাতছাড়া হওয়ার অপেক্ষা?