TMC vs BJP: মুকুল রায়ের কাছে ধাক্কার পর ধাক্কা খেয়ে, এখন যে কারণে তৃণমূলের মুখে হাসি ফিরছে
লোকসভা নির্বাচন শুরুর আগেই দলত্যাগী নেতা মুকুল রায়ের কাছে মাঝারি মাপের ধাক্কা খাচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু লোকসভা ভোটে দারুণ ফলের পর একের পর এক বড় ধাক্কা দিয়ে মুকুল রায় তাঁর পুরনো দলের জাহাজ ডোবানোর দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
কলকাতা, ২৬ জুন: লোকসভা নির্বাচন শুরুর আগেই দলত্যাগী নেতা মুকুল রায় (Mukul Roy)-র কাছে মাঝারি মাপের ধাক্কা খাচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। কিন্তু লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Elections 2019) দারুণ ফলের পর একের পর এক বড় ধাক্কা দিয়ে মুকুল রায় তাঁর পুরনো দলের জাহাজ ডোবানোর দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। বিধায়ক থেকে কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের প্রধান থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি-একের পর পর ছোটবড় নেতা বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন। বলা ভাল রাজ্যে ফুলবদলের হিড়িক পড়েছে।
বালুরঘাটে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র, কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রামারি বিজেপিতে যোগদানের পর উত্তরবঙ্গে বড় ভাঙনের মুখে তৃণমূল। মুকুল রায়ের চাল আর রাজ্যে বিজেপি-র ক্রমবর্ধমান শক্তিবৃদ্ধির ফলে একেবারে কোণঠাসা রাজ্যের শাসক দল। শোনা যাচ্ছে আগামী ক দিনের মধ্যে তৃণমূল ছেড়ে আরও তিন বিধায়ক বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন। পাশাপাশি বালুরঘাটের পর আরও একটা জেলা পরিষদ নাকি তৃণমূল নিশ্চিতভাবেই হারাতে চলেছে। এতসবের মাঝে তৃণমূলের মুখের হাসি চওড়া হচ্ছে একটা বিশেষ কারণে। আরও পড়ুন- নামাজের পাল্টা, GT রোড আটকে হনুমান চল্লিশা পাঠ বিজেপি যুব মোর্চার
২০১১ বিধানসভা ভোট জিতে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল নিজেদের শক্তি এমনভাবে বাড়িয়ে নেয় যে রাজ্যে বিরোধীদের দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়। দলে ভাঙন ধরানোর খেলায় কংগ্রেসকে দক্ষিণ বঙ্গে কার্যত সাইনবোর্ডে পরিণত করে দেয় তৃণমূল। কংগ্রেসের একের পর এক বিধায়ক, কাউন্সিলাররা যোগ দিতে থাকেন তৃণমূল। সেই সময় কংগ্রেসের ঘর ভাঙার নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের নম্বর টু মুকুল রায়। কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ ছিল মুকুল রায়ের নেতৃত্বে নানা রকম প্রলোভন দিয়ে তাদের দলের নেতাদের টেনে নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। ঠিকই একই রকম অভিযোগ এখন বিজেপি-র বিরুদ্ধে তুলছে তৃণমূল।
২০১১ থেকে ২০১৯। এই আট বছরে তৃণমূল ধারেভারে এতটা বেড়ে গিয়েছিল, যে এমন উদারপন্থী দলে দলের সব স্তরে ক্ষোভ চরমে ওঠার কথা। চেয়ার একটা, প্রার্থী হতে পারেন একজনই, কিন্তু তৃণমূলে আদি-নব নেতাদের রেষারেষাতি গোষ্ঠীদ্বন্দেব চরমে উঠেছিল। তৃণমূলের অন্দরের ক্ষোভের আগ্নেয়গিরিতে থেকে বিস্ফোরণের সুফলই পাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু এখানেই অতীতের কথা ভেবে হাসছেন তৃণমূল নেতারা।
আসলে এখন বিজেপিতে যেভাবে যোগদানের হিড়িক পড়েছে তাতে পদ্মশিবির এত নেতাদের জায়গা কীভাবে দেন সেটাই দেখার। তৃণমূলের মতো 'নব্য বনাম আদি'-এর লড়াই শুরু হয়েছে বিজেপিতেও। গতকাল কোচবিহারের অসম সীমান্ত লাগোয়া তুফানগঞ্জে নব্য বিজেপি কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন RSS কর্মী। আহত দীপক বর্মনের তুফানগঞ্জ হাসপাতালে চিকিত্সা চলছে। এমন ঘটনাকে মোটেও বিচ্ছিনভাবে দেখছে না তৃণমূল। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার দাবি, জেলায় জেলায় বিজেপি-র অন্দরে তুমুল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে যাওয়া নেতারা বিজেপির অবস্থা দেখে ফের জোড়া ফুল শিবিরে ফিরতে চাইছেন। এমনকি বহু দিনের পুরনো বিজেপি নেতারাও ভিতরে ভিতরে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে দাবি। সব মিলিয়ে কলবরে অনেকটা বেড়ে যাওয়া রাজ্যে বিজেপি-র অন্দরের ক্ষোভই এখন অক্সিজেন জোগাচ্ছে তৃণমূলকে।