Euro Cup Final 2024 : ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে ১২ বছর পর ইউরোপ সেরার মুকুট, চতুর্থ বার ইউরো জয়ের রেকর্ড করল স্পেন
ইউরো কাপের প্রথম থেকেই আহামরি খেলেননি বেলিংহ্যামরা। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ছাড়া কোনও ম্যাচেই মন মাতাতে পারেনি সাউথগেটের ছেলেরা। অন্যদিকে টানা ছয় ম্যাচ জিতে ফাইনালে এসেছিল স্পেন।
ইংল্যান্ডের ৫৮ বছরের অপেক্ষা আরও বাড়িয়ে বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে ইউরোর ফাইনাল(Euro Cup Final 2024) জিতে ১২ বছর পর আবার ইউরোপ সেরার মুকুট ফিরে পেল স্পেন(Spain Football Team)। চতুর্থ বার ইউরো (Euro Cup 2024) কাপ জয়ের রেকর্ড গড়ল লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল। যে কৃতিত্ব আর কোনও দেশের নেই। একমাত্র দল হিসেবে টানা সাত ম্যাচ জিতে ইউরোর মুকুট মাথায় পড়ল স্পেন।
ইউরো কাপের প্রথম থেকেই আহামরি খেলেননি বেলিংহ্যামরা। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ছাড়া কোনও ম্যাচেই মন মাতাতে পারেনি সাউথগেটের ছেলেরা। অন্যদিকে টানা ছয় ম্যাচ জিতে ফাইনালে এসেছিল স্পেন। একদিকে অতিরিক্ত ডিফেন্স ছিল ইংল্যান্ডের (England Football Team) মাস্টারপ্ল্যান অন্যদিকে স্পেনের পাসিং ফুটবলের ঝলক। দুই উইংয়ে নিকো আর ইয়ামালের গতিকে রুখতে তৈরি ছিলেন ইংল্যান্ডের শক্তিশালী দুই সাইডব্যাক লুক শ আর কাইল ওয়াকার। নিচে নেমে সাহায্য করছিলেন সাকা আর বেলিংহ্যামও। আর মাঝমাঠে ফাবিয়ান রুইজ- দানি ওলমোকে রোখার দায়িত্বে ছিলেন ১৯ বছরের তরুণ কোবি মেইনু। তাঁর ফলে ম্যাচের প্রথমার্ধ এত ম্যাড়ম্যাড়ে কেটেছে যে, মনে হচ্ছিল এই ম্যাচ বুঝি দুই দলই টাইব্রেকারে নিতে খেলছে। স্পেনের বলের দখল ৭০ ভাগ, কিন্তু গোলের দিকে শট মাত্র একটা। ইংল্যান্ডের বলের দখল ৩০ ভাগ, তাদেরও শট একটা। কোনোটাই ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড বা স্পেনের উনাই সিমনকে কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি।এমনকি স্পেনের সেই ‘বিস্ময়বালক’ লামিয়ে ইয়ামাল বিস্ময়করভাবে অদৃশ্য ম্যাচের প্রথমার্ধে।
বিরতি হয় গোলশূণ্য অবস্থাতেই। খেলার ধরন দেখে মনে করা হচ্ছিল দ্বিতীয়ার্ধেও এমনই ফুটবল দেখতে হতে পারে পুরোটা সময়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আঘাত সেই নিকো-ইয়ামাল জুটির। প্রথমার্ধের পুরোটা সময় ইয়ামালকে চোখে চোখে রেখেছিলেন লুক শ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটু জন্য চোখের আড়াল করলেন। সেই সুযোগে বাঁদিক থেকে বল নিয়ে ঢুকে নিকোকে সাজিয়ে দেন ইয়ামাল। সেই সময় জায়গাতেই ছিলেন না কাইল ওয়াকার। নিকোর জোরালো শট পিকফোর্ডকে পরাস্ত করে জালে জড়িয়ে যায়। স্পেন এগিয়ে যায়, ১-০ গোলে। গোলের পরই যেন চেনা ছন্দে ফিরল স্পেন। চোট পাওয়া রড্রির জায়গায় নামলেন জুবিমেন্দি। গোলের দু মিনিটের মাথায় উইলিয়ামসের পাস পেয়ে বক্সের মাঝামাঝি জায়গা থেকে শট নেন দানি ওলমো। কিন্তু সেটা চলে যায় বাইরে দিয়ে। তিনি সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে, তখনই দুই গোলে এগিয়ে যেত স্পেন। গোল মিস করেন মোরাতাও।
৬০ মিনিটে কাইল ওয়াকারের হাতে অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়ে মাঠ ছাড়েন হ্যারি কেন। তাঁর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জয়ের নায়ক ওলি ওয়াটকিন্স। কিছুক্ষণ পরেই কোল পালমারকে মাঠে নামান সাউথগেট।যার ফলে আক্রমণে কিছুটা ছন্দে ফেরে ইংল্যান্ড। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে ডান পাশ থেকে সাকা বল বাড়ান বক্সের ভেতর থাকা জুড বেলিংহামের দিকে। বল পেয়েই বেলিংহাম দুর্দান্তভাবে পাঠিয়ে দেন পেছনে থাকা পালমারের দিকে। চেলসি মিডফিল্ডারের দুর্দান্ত শট ঝাপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি উনাই সিমন। স্কোরলাইন সমান হলেও শেষ রক্ষা হলনা।ম্যাচের ৮৬ মিনিটে জয়ের গোল করলেন বদলি হিসেবে নামা ওয়ারজাবাল। কুকুরেয়ার থেকে বল পেয়ে দারুণ ফিনিশ করে গেলেন তিনি। তবের ম্যাচের ৯০ মিনিটে একটা শেষ সুযোগ এসেছিল পালমারদের কাছে। পালমারের কর্নার থেকে আসা বলে ডেক্লান রাইসের দারুণ হেড ফিরিয়ে দেন উনাই সিমন। ফিরতি বলে হেড করেন মার্ক গুয়েহি। এবার একেবারে গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন দানি ওলমো। বেঁচে যায় স্পেন আর রুদ্ধশ্বাস ফাইনালের পর এবারও হারের যন্ত্রণা মাথায় নিয়েই ইউরো শেষ হয় ইংল্যান্ডের।