Navratri 2022: হিন্দু পুরাণ অনুসারে দেবী পার্বতীর নয়টি রূপ, এই নয়টি রূপকেই দেবীপক্ষে করা হয় পূজা

হিন্দু পুরাণ অনুসারে দেবী পার্বতীর নয়টি রূপ হল শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী

Photo Credit_Twitter

হিন্দুদের দ্বারা পালিত সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসবগুলির মধ্যে একটি নবরাত্রি। দেবী দুর্গা, ভগবান শিবের সহধর্মিণী, যিনি শক্তির প্রতীক এবং তার নয়টি রূপ এই সময়কালে পূজা করা হয়, ঐতিহ্যগতভাবে এই সময়কাল দেবীপক্ষ নামে পরিচিত।

হিন্দু পুরাণ অনুসারে দেবী পার্বতীর নয়টি রূপ হল শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রী ৷ আজ জেনে নেব  দেবীর নয় রূপের মহিমা-

দিন – ১  প্রতিপদে পূজিত হন শৈলপুত্রী –

নবরাত্রির প্রথম দিনে মা শৈলপুত্রীর আরাধনা করা হয় । শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা হবার জন্য দেবীর এক নাম শৈলপুত্রী । শৈলপুত্রী ছিলেন রাজা দক্ষিণের কন্যা সতীর অবতার। দেবী একটি ষাঁড়ের উপরে অধিষ্ঠান করেন। তাঁর ডান হাতে একটি ত্রিশূল এবং বাম হাতে একটি পদ্ম। একটি অর্ধচন্দ্র তার কপালে শোভা পায়।এঁনার দক্ষিণ হস্তে ত্রিশূল আর বাম হস্তে কমল আছে তাই দেবীর অপর নাম শুলধারিণী।

দিন – ২  দ্বিতীয়ায় পূজিত হন ব্রহ্মচারিণী –

মা পার্বতীর নবশক্তির দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণী। এখানে ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ হল তপস্যা। ব্রহ্মচারিণী অর্থাৎ তপশ্চারিণী বা তপ আচরণকারী। একটি সাদা শাড়ি পরিহিতা, ব্রহ্মচারিণী এক হাতে একটি কমন্ডল এবং অন্য হাতে একটি জপমালা ধারণ করেন।

দিন – ৩  তৃতীয়ায় পূজিত হন চন্দ্রঘন্টা –

ভক্তরা ৩য় দিনে চন্দ্রঘন্টার পূজা করেন। ঘণ্টার মতো একটি অর্ধচন্দ্র তাঁর মাথায় শোভা পায় এবং তাই তাঁর নাম চন্দ্রঘন্টা। দেবীর এই স্বরূপ পরম কল্যাণকারী। দেবীর শরীরের রং স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল। এই দেবী দশভুজা । তিনি একটি বাঘের উপরে অধিষ্ঠান করেন। দশ হাতে তিনি ত্রিশূল, গদা, তলোয়ার, কমন্ডল,পদ্ম, ধনুক, তীর, জপমালা এবং দুই হাতে অভয়া মুদ্রা ধারণ করেন। ঘণ্টার ন্যায় প্রচন্ড চন্ড ধ্বনিতে দেবী দুরাচারী রাক্ষস , দানব , দৈত্যদের বধ করেন ।

দিন – ৪ চতুর্থীতে পূজিত কুষ্মাণ্ডা –

দেবী পার্বতী তার চতুর্থ স্বরূপে “কুষ্মাণ্ডা” নামে পরিচিতা। নবরাত্রের চতুর্থদিনে, অর্থাৎ চতুর্থী তিথিতে মাতৃপ্রাণ ভক্তগণ এই কুষ্মাণ্ডারূপেই আদ্যাশক্তিকে আহ্বান করে থাকেন।  বাঘের উপর অধিষ্ঠাত্রী দেবী আটটি হাতে পদ্ম, ধনুক, তীর, কমন্ডল, চক্র, গদা, জপমালা ধারণ করেন। মায়ের বামহস্তে একটি অমৃতপূর্ণ কলসও রয়েছে।

দিন – ৫ পঞ্চমীতে পূজিত হন স্কন্দমাতা –

মা দুর্গার পঞ্চম শক্তি হল স্কন্দমাতা। স্কন্দের জননী হওয়ায় তাঁকে স্কন্দমাতা বলা হয়। নবরাত্রির পঞ্চম দিনে সিংহের উপরে স্কন্দমাতার পূজা করা হয়। চার হাত বিশিষ্ট স্কন্দমাতা দুই হাতে পদ্ম ধারণ করেন, একটি হাত আশীর্বাদ মুদ্রা প্রদর্শন করেন এবং অন্যটি শিশু স্কন্দকে ধারণ করে।

দিন – ৬ ষষ্ঠীতে পূজিত হন কাত্যায়নী –

নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে কাত্যায়নী আরাধিতা হন ভক্তদের কাছে।এই নাম এবং রূপের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক পৌরাণিক কাহিনি । বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন । এক পুত্রের পিতা কাত্যায়নের ইচ্ছে হয় একটি কন্যসন্তান লাভের ।তিনি দেবী পার্বতীর তপস্যা করে অভীষ্ট পূর্ণ করেন। তাঁর স্তবে তুষ্ট হয়ে স্বয়ং দেবী পার্বতী জন্ম নেন মহাঋষি কাত্যায়নের কন্যা রূপে। তখন তাঁর নাম হয় কাত্যায়নী।কথিত আছে, দেবী পার্বতী এই রূপ নিয়ে মহিষাসুর বধ করেছিলেন।

দিন – ৭ সপ্তমীতে পূজিত হন কালরাত্রি –

কালরাত্রি মা দেবী দুর্গার উগ্রতম রূপ। এই প্রচন্ড রূপেও দেবী ভক্তের শুভ করেন। তাই অন্যদিকে তিনি শুভঙ্করী। ভক্তরা তাঁর পুজো করেন নবরাত্রির সপ্তম রাতে।দেবী কৃষ্ণবর্ণা। আলুলায়িত কেশে তিনি ধাবিত শত্রুর দিকে। ত্রিনয়নী দেবীর শ্বাস প্রশ্বাসে বেরিয়ে আসে আগুনের হলকা। দেবীর দুই হাতে অস্ত্র , ডানদিকে অভয়া এবং বামদিকে বরদা মুদ্রা প্রদর্শন করেন। দুর্গার এই রূপ শুম্ভ ও নিশুম্ভ রাক্ষসকে নির্মূল করেছে বলে কথিত আছে। দেবীর বাহন গর্দভ ।

দিন – ৮ অষ্টমীতে পূজিত হন মহাগৌরী –

হিমায়লকন্যা ছিলেন গৌর বর্ণা। শিবের তপস্যা করে রৌদ্রে তিনি কৃষ্ণা হন । মহাদেব যখন গঙ্গাজল দিয়ে তাকে স্নান করান, তখন তিনি হয়ে ওঠেন ফর্সা। তাঁর এই রূপের নাম হয় মহাগৌরী।প্রচলিত বিশ্বাস, নবরাত্রির অষ্টম রাতে তাঁর পুজো করলে সব পাপ নাকি ধুয়ে যায়।

মহাগৌরী, দেবী দুর্গার সবচেয়ে করুণাময়ী অবতার। একটি ষাঁড়ের উপর অধিষ্ঠাত্রী দেবী উপরের ডান এবং বাম হাতে যথাক্রমে একটি ত্রিশূল ও ডমরু এবং নীচের হাতে অভয়া এবং বরাভয় মুদ্রায় ভক্তদের আশীর্বাদ করেন।

দিন – ৯ নবমীতে পূজিত হন সিদ্ধিধাত্রী –

নবদুর্গার নবম তথা শেষ রূপ হল সিদ্ধিদাত্রী। সিংহবাহিনী দেবীর চার হাতে আশীর্বাদী মুদ্রা। তিনি সিদ্ধি দান করেন। সবাইকে বরাভয় দেন এই মাতৃকামূর্তি । পদ্মের উপর উপবিষ্ট, মা সিদ্ধিধাত্রী সৃষ্টির প্রতিনিধিত্ব করেন। নবরাত্রির শেষ দিনে ভক্তরা তাঁর পূজা করেন। সিদ্ধিদাত্রী হলেন নিরাকার আদিশক্তির প্রকাশ, যাকে স্বয়ং ভগবান শিব পূজা করেন।যদিও বিভিন্ন পুরাণে দেবীর ভিন্ন রূপ বর্ণিত, কোথাও তিনি অষ্টভুজা, তো কোথাও তিনি অষ্টাদশভুজা আবার কোথাও দেবী ‘সিদ্ধিদাত্রী’ চতুর্ভুজা রূপেও পূজিত।

(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)

Share Now

Share Now