পাহাড় ঘেরা ছোট্ট গ্রাম বড়ন্তি যেন এক টুকরো ভাললাগা
গ্রাম ছাড়াতেই পড়বে লাল মাটির পথ। পাহাড়গুলো সঙ্গী হবে অচিরেই। পিছিয়ে থাকবে না হ্রদ। সে-ও ধরা দেবে পিছুপিছু। আর তখনই হ্রদের ও-পার থেকে হাতছানি দেবে বড়ন্তি। ছোট একটি গ্রাম প্রকৃতির নিয়মে হয়ে উঠেছে মোহময়ী সৌন্দর্যের লীলাভূমি।
ছুটিতে ছোটাছুটি করবেন না তো কবে করবেন, তবে সেই ছোটাছুটি যদি হয় বেড়াতে যাওয়ার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সপ্তাহান্তে ছুটি মিলতেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়ুন দেখি মন এমনিই ভাল হয়ে যাবে। আমাদের বাংলায় দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই শুধু খুঁজেপেতে যাওয়ার উদ্যোগ করতে হবে এই যা। করে ফেললেই হল, তারপর শুধু হারিয়ে যাওয়ার পালা। আজ টইটইয়ের দশম পর্বে রইল বড়ন্তির ইতিকথা।
বড়ন্তি(Baranti)
কলকাতা থেকে মাত্র ২৫০ কিলোমিটার দূরে পুরুলিয়ার একটি ছোট্ট গ্রাম বড়ন্তি। শাল, সেগুন, মহয়া গাছের ছায়ায় ঘেরা নিবিড় অরণ্যের বুকে জনা বিশেক পরিবার নিয়ে এই গ্রাম।বড়ন্তি লাগোয়া ছোট ছোট টিলাকে সঙ্গী করে দাঁড়িয়ে এক আশ্চর্য হ্রদ মুরাডি। প্রচুর পাখি আর প্রজাপতির আনাগোনা এখানে। পূর্ণিমার রাতে চাঁদ যখন লুটোপুটি খায় হ্রদের জলে, মোহময়ী হয়ে ওঠে বড়ন্তি। প্রকৃতির এই রূপ ভোলার নয়।
গ্রামের বর্ণনা শুনেই আসার জন্য মনটা ছটফট করছে নিশ্চই, বেশিকিছু ভাবার দরকার নেই দুদিন হাতে সময় থাকলেই হল। ব্যাগ গুছিয়ে রাতে হাওড়া চক্রঝরপুর প্যাসেঞ্জারে উঠে পড়ুন। সকালেই নেমে যাবেন আদ্রা, সেখান থেকে আসানসোল প্যাসেঞ্জারে মুরাডি।ছোট্ট স্টেশন থেকে রিকশা বা গাড়ি করে গ্রাম মুরাডির ব্যস্ততা কাটিয়ে নির্জনতার সঙ্গী হতে সময় লাগবে না। গ্রাম ছাড়াতেই পড়বে লাল মাটির পথ। পাহাড়গুলো সঙ্গী হবে অচিরেই। পিছিয়ে থাকবে না হ্রদ। সে-ও ধরা দেবে পিছুপিছু। আর তখনই হ্রদের ও-পার থেকে হাতছানি দেবে বড়ন্তি। ছোট একটি গ্রাম প্রকৃতির নিয়মে হয়ে উঠেছে মোহময়ী সৌন্দর্যের লীলাভূমি। লাল মোরামের রাস্তাটা উঠে গেছে বাঁধের উপর। তার পর সেই রাস্তা সুবিশাল হ্রদ পেরিয়ে ডান দিকে বাঁক নিয়েছে। ওই বাঁকের পরেই গাছপালার আড়ালে বড়ন্তি।রাত্রিবাসের জন্য পেয়ে যাবেন বেসরকারি ট্যুরিস্ট লজ। কাজের ফাঁকে দুটো দিনের এই আনন্দ কিন্তু ভাগ হওয়ার নয়।
চুপির চর(Chupi Char Purbasthali)
পূর্ব বর্ধমানের(East Burdwan) পূর্বস্থলীতে একটি অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটনস্থল।এই হ্রদ এখন চুপির চর হিসেবেই সুপরিচিত। সেই চরকে ঘিরে পরিযায়ী পাখিদের ভিড় পূর্বস্থলীকে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে জনপ্রিয় করে তুলেছে। কলকাতা থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরের পূর্বস্থলীতে যেতে হলে প্রথমে পৌঁছতে হবে কৃষ্ণনগর। সেখান থেকে চৈতন্য সেতু দিয়ে ভাগীরথী পেরোনো। ও পারে নবদ্বীপ। সেই রাস্তাই চলে গেছে পূর্বস্থলী বাজার হয়ে স্টেশন সেখান থেকে ডান দিকে ঘুরে স্টেশনের পিছন দিক দিয়ে খানিকটা গেলে সেই হ্রদ। নৌকা নিয়ে মাঝিরা অপেক্ষায়। ট্রেনেও আসা যায় এখানে। হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে কাটোয়াগামী লোকালে পূর্বস্থলী। সেখান থেকে রিকশায় চুপির চরে পৌঁছানো যায়। গঙ্গার প্রবাহপথ পরিবর্তনের ফলে তৈরি হয়েছে এই অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ। গঙ্গার মূল স্রোতের সঙ্গে এটি যুক্ত। নৌকাযাত্রা শুরু হয় গঙ্গা থেকে, তার পর হ্রদে প্রবেশ। শীতে দেখা যাবে বিচিত্র রকমের পরিযায়ী পাখির ঝাঁক। পাখি চিনতে পারলে ভালো, না পারলেও দুঃখ নেই। নৌকাভ্রমণই এক অনন্য অভিজ্ঞতা। মাঝিদের সঙ্গে একটু দরাদরি করতে হবে। মনোরম এবং শান্ত পরিবেশে এসে সকলেরই মন জুড়িয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য। সম্প্রতি রাত্রিবাসের জন্য কটেজও তৈরি হয়েছে। চুপির চরে একবার গেলে বার বার যেতে ইচ্ছে করবে, শহরের কোলাহল এড়িয়ে পূর্বস্থলীতে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য মনটা আকুল হয়ে থাকবে।
(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)