আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় নয়া মোড়, চিদম্বরমের গ্রেপ্তারির পরেই বদলি তদন্তকারী অফিসার
আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় (INX Media case) গতকালই গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম (P Chidambaram)। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে সিবিআইও ইডি-র আধিকারিকরা তাঁকে গতকাল বাড়ির পাঁচিল টপকে পাকড়াও করেন। তারপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দপ্তরে গোটা রাত নির্ঘুম কেটেছে চিদম্বরমের। আজ তাঁকে আদালতে তোলার কথা। চিদম্বরমের গ্রেপ্তারি এখনও হজম করতে পারেনি গোটা দেশ, এরমধ্যেই ইডির তদন্তকার অফিসারকে তড়িঘড়ি বদলি করে দেওয়া হল।
দিল্লি, ২২ আগস্ট: আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় (INX Media case) গতকালই গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম (P Chidambaram)। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে সিবিআইও ইডি-র আধিকারিকরা তাঁকে গতকাল বাড়ির পাঁচিল টপকে পাকড়াও করেন। তারপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দপ্তরে গোটা রাত নির্ঘুম কেটেছে চিদম্বরমের। আজ তাঁকে আদালতে তোলার কথা। চিদম্বরমের গ্রেপ্তারি এখনও হজম করতে পারেনি গোটা দেশ, এরমধ্যেই ইডির তদন্তকার অফিসারকে তড়িঘড়ি বদলি করে দেওয়া হল। ওই অফিসারে নাম রাকেশ আহুজা (Rakesh Ahuja), তিনি আইএনএক্স মিডিয়া মামলার তদন্তের ডিরেক্টরের পদে ছিলেন। চিদম্বরমের গ্রেপ্তারির পরে পরেই রাকেশ আহুজার বদলি নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়েছে। এমন কী ঘটল যে রাতারাতি এই মামালার তদন্তকারী অফিসারকেই বদলি করে দেওয়া হল।
ইডি(ED) সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগেই রাকেশ আহুজার বদলির সময় পেরিয়েছে। শুধুমাত্র আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় কোনওভাবেই পি চিদম্বরমকে বাগে পাওয়া যাচ্ছে না বলেই তাঁর বদলি আটকে ছিল। রাঘব বোয়াল জালে পড়তেই আহুজার কাজ শেষ। ২০০৭-এ ইউপিএ জমানায় পি চিদম্বরম কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকার সময় আইএনএক্স মিডিয়ায় ৩০৫ কোটির বিদেশি অনুদানের অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই সময় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রকের অধীন ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ডের (এফআইপিবি) (FIPB)অনুমোদন নিতে হত। অভিযোগ, এই সেই সময় আইএনএক্স মিডিয়ায় ৩০৫ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগে বেআইনি ভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এরপরই তদন্তে নেমে ইডি জানতে পারে ওই ৩০৫ কোটি টাকা যে সংস্থায় ট্রান্সফার হয়েছিল, সেটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন চিদম্বরমের ছেলে কার্তি চিদম্বরম। আইএনএক্স মিডিয়ার মালিক ইন্দ্রাণী ও পিটার মুখার্জি (Indrani & Pitar Mukherjee)বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র পেতে মোটা টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন। সালটা ২০০৭, সেই সময় পি চিদম্বরম ছিলেন দেশের অর্থমন্ত্রী। এদিকে এরপরেই ২০১৮-র ২৮ ফেব্রুয়ারি আইএনএক্স মিডিয়াকে বেআইনিভাবে বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন চিদম্বরমের ছেলে কার্তি। পরে অবশ্য জামিনে ছাড়াও পেয়ে যান তিনি। আরও পড়ুন- আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের জালে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে
উল্লেখ্য, আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় চিদম্বরমের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে তা চ্যালেঞ্জ করে আইনি রক্ষাকবচ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে মামলার শুনানিও চেয়েছিলেন তিনি। তবে চিদম্বরমের কথামতো কাজ হয়নি, সুপ্রিম কোর্ট আগামীকাল শুক্রবার ওই মামলার দিন ধার্য করেছে। এরপরেই আসরে নামে সিবিআই। তবে চেষ্টা করেও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর নাগাল পাচ্ছিল না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। কংগ্রেস কার্যালয়ে বৈঠকের পরও পি চিদম্বরম সিবিআইয়ের নাগালের বাইরে চলে যান। পরে তাঁকে ধাওয়া করে সিবিআই ও ইডি-র একাধিক টিম পৌঁছে যায় জোড়বাগে। সেখানে শুরু হয় নাটক। পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকতে দেখা যায় সিবিআই কর্তাদের। এর কিছুক্ষণ পরেই চিদম্বরমের গ্রেপ্তারির খবর প্রকাশ্যে আসে।