‘৩৭০ ধারা তুলতে কাশ্মীরিদের একমাস ধরে 'বন্দি' করে রেখেছে কেন্দ্র’, গুলাম নবি আজাদ

বীণ কংগ্রেস নেতা অভিযোগ করে বলেন, ৩৭০ ধারা (Article 370) রদ করে কাশ্মীররের বাসিন্দাদের (Kashmiri people) গত একমাস ধরে ‘বন্দি’ ('Held Captive') করে রেখেছে দিল্লির সরকার। যে পদ্ধতিতে ৩৭০ ধারা রদ হয়েছে তা অভাবনীয়। বিশ্বের কোনও গণতান্ত্রিক দেশেই এমন ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি।

গুলাম নবি আজাদ(File Photo)

শ্রীনগর, ৫ সেপ্টেম্বর: জম্মু ও কাশ্মীরের থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নিয়েছে দেশের সরকার, দেখতে দেখতে এই ঘটনার পর একটি মাস কেটে গেল। তবে এই একমাসে উপত্যকার জনগণের দৈনন্দিন জীবনে কোনও পরিবর্তন হয়নি। ৩৭০ ধারা রদ হলে প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্ররোচনায় কাশ্মীরিরা বিদ্রোহে যেতেপারে বুঝতে পেরে আগেভাগেই সেখানে বিপুল পরিমাণে সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করেছিল কেন্দ্র। গোটা উপত্যকা জুরে কার্ফিউ জারি করে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী দলের নেতা সহ সমস্ত বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে গৃহবন্দি করে ফেলে প্রশাসন। তারপর এক মাস কাটলেও  নেতাদের কেউই এখনও মুক্তি পাননি। বহুদিন পর শ্রীনগরের মাটি থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)।

এদিন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অভিযোগ করে বলেন, ৩৭০ ধারা (Article 370) রদ করে কাশ্মীররের বাসিন্দাদের (Kashmiri people) গত একমাস ধরে ‘বন্দি’ ('Held Captive') করে রেখেছে দিল্লির সরকার। যে পদ্ধতিতে ৩৭০ ধারা রদ হয়েছে তা অভাবনীয়। বিশ্বের কোনও গণতান্ত্রিক দেশেই এমন ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। তিনি বলেন, ‘শুধু ভারতের ইতিহাসেই নয়, সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে এমন নাটকীয় ঘটনা আগে কেউ দেখেনি। যেখানে একটি রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হল অথচ আগেভাগে কিছু জানতেই পারল না সেই রাজ্যের মানুষ। রাজ্যের বাসিন্দাদের অন্ধকারে রেখেই সরকার গোটা প্রক্রিয়াটা সারল। তাঁদের যোগাযোগের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হল। মুখ ফুটে কিছু বলার অধিকার থাকল না এমনকী, রাষ্ট্রের এহেন সিদ্ধান্তের বিরোধিতারও সুযোগ পেল না কাশ্মীরিরা। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকার যে কাজ করল তা ব্রিটিশ রাজের সময়কার ভারতেও ঘটেনি। এমনকী সেই সময়ও এমন মারণ কার্ফিউ আমাদের চোখে পড়েনি।’ আরও পড়ুন-কাশ্মীরে হামলা চালাতে পাক সীমানায় তৈরি ৫০ জন জঙ্গি, জেরায় জানাল ধৃত ২ জঙ্গি

ঠিক একমাস আগে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা রদ করা হয়ছে। এই রদকে কেন্দ্র করে অশান্তি বন্ধ করতে গোটা উপত্যকাকে সেনা পুলিশে মুড়ে দেওয়া হয়। সেখানকার সমস্ত রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে প্রথমে গৃহবন্দি ও পরে সতর্কতামূলক গ্রেপ্তার করা হয়। শুধু দিল্লিতে থাকায় এই গ্রেপ্তারির হাত থেকে সেসময় নিস্তার পেয়েছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। তবে তারপরে বার বার চেষ্টা করেও তিনি উপত্যকায় প্রবেশ করতে পারেননি। এই ৩৭০ ধারা উঠে যাওয়াতে অন্য রাজ্যের বাসিন্দারা এবার কাশ্মীরে জমি কিনতে পারবেন। সেখানে সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন, পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এই ৩৭০ ধারা রদ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, এবার কাশ্মীরের আর্থিক সার্বিক উন্নতি হবে। বাসিন্দাদের জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে।