ঋতুস্রাবের রক্ত নিংড়ে ফের ব্যবহার উপযোগী স্যানিটারি প্যাড, নয়া ডিভাইস আনলেন আইআইটি-র ছাত্রীরা

ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন থেকে ঋতুস্রাবের রক্ত নিংড়ে বের করে দেবে যন্ত্র। শুধু তাইই নয় ফের সেই ন্যাপকিনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যাকটেরিয়া মুক্তও করা যাবে। নন-বায়োডিগ্রেবেল বর্জ্য কমাতেই এমন যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেললেন দুই আইআইটি পড়ুয়া।

দেবযানী মালাডকার ও ঐশ্বর্যা আগরওয়াল(Photo Credit: Twitter)

মুম্বই ও গোয়া, ২৫ জুলাই:  ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন থেকে ঋতুস্রাবের রক্ত নিংড়ে বের করে দেবে যন্ত্র। শুধু তাইই নয় ফের সেই ন্যাপকিনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যাকটেরিয়া মুক্তও করা যাবে। নন-বায়োডিগ্রেবেল বর্জ্য কমাতেই এমন যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেললেন দুই আইআইটি পড়ুয়া। একজন আইআইটি গোয়ার দেবযানী মালাডকার (Devyani Maladkar)। অন্যজন আইআইটি বম্বের ঐশ্বর্য আগরওয়াল (Aishwarya Agarwal)।

সামান্য উপাদানে তৈরি এই যন্ত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ধুয়ে মুছে ফেলা যাবে ব্যবৃত স্যানিটারি প্যাড। এবং পুনরায় তা ব্যবহারও করা যাবে। যন্ত্রটি এমনভাবে প্যাড থেকে ঋতুস্রাবের রক্ত নিংড়ে নিয়ে ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীকে নির্মূল করবে যে পুনর্ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও ভয় থাকবে না। আরও পড়ুন-আয়কর জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়াল কেন্দ্র, চাকরিজীবী মহলে স্বস্তির হাওয়া

এই প্রসঙ্গে আইআইটি বম্বের ইলেট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী ঐশ্বর্য আগরওয়াল জানিয়েছেন, ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না অধিকাংশ মহিলারাই।গ্রাম বা আধা শহর বলে নয়, শহরের শিক্ষিত তরুণীদের মধ্যেও ঋতুকালীন সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। তাই ব্যবহার করা ন্যাপকিন যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সহমত হয়েছেন আইআইটি গোয়ার দেবযানী মালাডকার। তাঁদের মতে, বাজারচলতি স্যানিটারি প্যাডের অধিকাংশই তৈরি হয় নন-বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক দিয়ে। ফলে এক একটি ব্যবহার করা প্যাড মাটিতে মিশে যেতে ৫০০-৮০০ বছর লেগে যায়। হিসেব করলে দেখা যাবে, এক একজন মহিলা তাঁর ঋতুচক্রে মোট ১২৫ কেজি নন-বায়োডিগ্রেডেবল বর্জ্য জমা করেন। সেই হিসেবে ভারতের অন্তত সাড়ে ৩৫ কোটি মহিলা কতটা জৈবিক বর্জ্য জমা করছেন, সেই সংখ্যাটা আকাশছোঁয়া। এর থেকেই রোগ জীবাণু ছড়াচ্ছে অহরহ।

২০০৪ সালে তামিলনাড়ুর অরুণাচলম মুরুগনন্তম যখন প্রথম স্যানিটারি প্যাড তৈরির যন্ত্রটি  আবিষ্কার করেন তখন তাঁর উপর প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সংস্কারপন্থী সমাজ। মহিলাদের ঋতুস্রাব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন একজন পুরুষ, প্রকাশ্যে তৈরি করছেন প্যাড, এ কি রকম অনাসৃষ্টি কাণ্ড! তখন অসম্মান তাঁর সঙ্গী হলেও তিনি জানতেন একদিন এবিষয়ে মহিলারাও এগিয়ে আসবেন। তাইতো যুগান্তকারী আবিষ্কার নিয়ে তাঁর সঙ্গী হলেন দেবযানী ও ঐশ্বর্য। তাঁদের তৈরি যন্ত্রের দাম ১৫০০ টাকা। এখন আইআইটি-র ছাত্রীরা আগ্রহভরে সেই য্ন্ত্র তৈরি করে চলেছেন। খুব শিগির বাজারে চলে আসবে যন্ত্রটি তবে শুধু স্যানিটারি প্যাডই নয়, বাচ্চাদের জামাকাপড়ও পরিষ্কার করে দেবে এই যন্ত্র।