Lok Sabha: লোকসভায় বদলের হাওয়া! স্পিকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ শাহ-র! রাহুলকে বাধা মোদীর, দেখুন ভিডিয়ো
সংসদে এখন শাসক ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে সংখ্যার ফারাক খুবই কম। এবার আর একক সংখ্য়াগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। তার প্রভাব সরাসরি দেখা যাচ্ছে লোকসভা অধিবেশনে। সংসদের নিম্নকক্ষের অধিবেশনে এবার আর শুধু একপক্ষের দাপট নয়, লড়াই শুরু হল সমানে সমানে।
নতুন দিল্লি, ১ জুলাই: সংসদে এখন শাসক ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে সংখ্যার ফারাক খুবই কম। এবার আর একক সংখ্য়াগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। তার প্রভাব সরাসরি দেখা যাচ্ছে লোকসভা অধিবেশনে। সংসদের নিম্নকক্ষের অধিবেশনে এবার আর শুধু একপক্ষের দাপট নয়, লড়াই শুরু হল সমানে সমানে। গত দুটি লোকসভার মত নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ-রা খালি জমি পাচ্ছেন না। লোকসভা অধিবেশন এবার যেন 'কাঁটে কা টক্কর'। নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ছে না বিরোধীরা। রাহুল গান্ধী লোকসভার বিরোধী দলনেতা হয়ে আসার পর ইন্ডিয়া জোটকে যেন আরও শক্তিশালী দেখাচ্ছে। সরকারের সমালোচনায় আর সংখ্যার অভাবে ভুগে গলার স্বর নামিয়ে নয়, এবার সশব্দে একসঙ্গে ঝাঁপাচ্ছেন বিরোধী নেতারা।
সোমবার সকাল থেকে লোকসভা অধিবেশনে যা চলছে, তা দেখলে কে বলবে ক মাস আগেও কী একতরফাভাবে সব কিছু চলছিল, বিরোধীরা একেবারে ছন্নছাড়া ছিল। ৩০৩ জন সাংসদ থাকা বিজেপি তখন লোকসভা অধিবেশনে প্রচন্ড আক্রমণাত্মক। মোদী- শাহ-রা কিছু বললেই, বিজেপির সাংসদরা একসঙ্গে এমন সমর্থন জানাতেন, ৩০৩-র শব্দে বিরোধীরা স্বর সেভাবে শোনা যেত না।
দেখুন আজ লোকসভার ভিডিয়ো
সেখানে আজ অধিবেশনে এমনও একটা সময় এল যখন চরম বিরক্ত মুখে উঠে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বলে বসলেন, "এটা কেমন করে চলছে অধিবেশন? স্পিকার মহাশয় আপনি একতরফাভাবে নিয়মের বাইরে গিয়ে বিরোধীদের অন্যায়ভাবে সুযোগ দিয়েই চলেছেন।" অনেকেই অবাক শাহ-র মুখে এই কথা শুনে। শাহ-র মুখে যেন বিরোধী সাংসদদের বক্তব্য। বিরোধী সাংসদরা লোকসভার স্পিকার ওম বিড়ালর বিরুদ্ধে বারবার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন। কিন্তু এবার যারা ওম বিড়লাকে ফের স্পিকারের পদ বসালেন, তাদের অন্যতম প্রধান নেতা অমিত শাহই স্পিকার-কে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করলেন। লোকসভায় এখানেই গত দশ বছরের চেনা ছবিটা পুরোপুরি অচেনা দেখাচ্ছে।
দেখুন অমিত শাহ-র আপত্তি জানানোর ভিডিয়ো
গত দশ বছর ধরে যা দেখা যায়নি, এবার সেটাই লোকসভায় দেখা যাচ্ছে। বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী যখন বিজেপি সাংসদ-দের দিকে আঙুল দেখিয়ে বলছেন, এরা হিন্দুত্বের নামে হিংসা ছড়ায়। তখন খোদ নরেন্দ্র মোদী উঠে দাঁড়িয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, পুরো হিন্দু সমাজকে এভাবে বলাটা অপমানের। সেটা দেখে রাহুল জোরে বলে ওঠেন, "না, না। নরেন্দ্র মোদীজি পুরো হিন্দু সমাজ নন, বিজেপি পুরো হিন্দু সমাজ নয়, আরএসএস পুরো হিন্দু সমাজ নয়।" সেটা শুনে বসে পড়েন মোদী।
দেখুন ভিডিয়ো
এরপরেও রাহুল গান্ধী লাগাতার মোদী সরকারের ওপর আক্রমণ চালিয়ে যান। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও সংসদে তাঁর বক্তব্যে বিজেপি, মোদী সরকারকে চরম আক্রমণ করেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, মহুয়া তাঁর কথায় রাহুল গান্ধীর তুলনা টানলেন। কংগ্রেস, তৃণমূল জোটের রসায়নটা ধরা পড়ল কৃষ্ণনগরের সাংসদের গলায়। গত লোকসভা অধিবেশনে মহুয়ার কথা বলার মাঝে বিজেপি সাংসদদের বাধা দিতে দেখা যেত। সেটা এবারও আছে, কিন্তু বিজেপির সাংসদ সংখ্যার জোর অনেকটা কম, আর ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি এককাট্টা হওয়ায় মহুয়া-রা আগের চেয়ে বাধা কম পাচ্ছেন।
মহুয়া মৈত্র-র বক্তব্যের ভিডিয়ো
প্রসঙ্গত, নির্দল ও কিছু ছোট দল ধরলে লোকসভায় এখন বিজেপি বিরোধী ২৪৪ জন সাংসদ রয়েছেন ( ইন্ডিয়া জোট ২৩৭)। সেখানে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা ২৪০। চন্দ্রবাবুর টিডিপি, নীতীশ কুমারের জেডি (ইউ) সহ এনডিএ-র ২৯৩ জন সাংসদ। যেখানে গত লোকসভায় মোদীর পক্ষে এনডিএ, বিজেডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস সহ সাড়ে তিনশো জনেরও বেশী সাংসদের সমর্থন ছিল।