Actor Chiranjait On Tapas Pal: ‘ভাই হারালাম মনটা ভেঙে গেল’, তাপস পালের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ চিরঞ্জিৎ, কেঁদে ফেললেন দেবশ্রী, কী বললেন অন্যরা?

৬১ বছর বয়সে বান্দ্রার একটি হাসপাতালে মঙ্গলবার ভোর তিনটের পরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেতা তাপস পাল(Tapas Pal)। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তাপসবাবু দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বান্দারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬ তারিখে ভেন্টিলেশন থেকে ওয়ার্ডে আনা হয়। তারপর থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন এই প্রবীণ অভিনেতা। আমেরিকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার তোরজোর শুরু করেছিল তাঁর পরিবার। এরমধ্যেই চলে গেলেন বাংলা ছবির সাহেব। তাপস পালের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা টলিউড। সহকর্মীকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন অভিনেত্রী সাংসদ দেবশ্রী রায়(Debashree Roy)।

দেবশ্রী , চিরঞ্জিৎ ও তাপস পাল(Photo Credit: Facebook)

কলকাতা, ১৮ ফেব্রুয়ারি: ৬১ বছর বয়সে বান্দ্রার একটি হাসপাতালে মঙ্গলবার ভোর তিনটের পরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেতা তাপস পাল(Tapas Pal)। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তাপসবাবু দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বান্দারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬ তারিখে ভেন্টিলেশন থেকে ওয়ার্ডে আনা হয়। তারপর থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন এই প্রবীণ অভিনেতা। আমেরিকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার তোরজোর শুরু করেছিল তাঁর পরিবার। এরমধ্যেই চলে গেলেন বাংলা ছবির সাহেব। তাপস পালের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা টলিউড। সহকর্মীকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন অভিনেত্রী সাংসদ দেবশ্রী রায়(Debashree Roy)।

কাঁদতে কাঁদতেই জানালেন, “আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। একটার পর একটা ছবি করেছি আমরা। কী বলব বলুন। আর কিছু বলার নেই।” সাত কালে এমন খবর পেয়ে হতবাক অভিনেতা চিরঞ্জিত। তিনি বলেন, “ভীষণ সুন্দর স্মৃতি। আমাদের সময়টা বড় সুন্দর ছিল। সবাই মিলেমিশে হই হই করে কাজ করতাম। সেি সময় সব ছবিই হিট হত। আর ও তো সুপারস্টার ছিল। আমাকে যদি কেউ উত্তম কুমারের অভিনীত ছবি করতে বলেন, তবে ভেবে দেখব। কিন্তু তাপস পাল অভিনীত ‘দাদার কীর্তি’ বা ‘সাহেব’ কখনওই নয়। এই দুটি চরিত্রে তাপসের অভিনয় কোনওদিন ভুলব না। তরুণ মজুমাদারের ছবি দিয়ে ও অভিনয় জীবন শুরু করেছিল। আজ তো ভাই হারালাম। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। ওর জীবনের শেষটাই ভীষণ খারাপ গেল। খুব কষ্টের। এত উজ্জ্বল ছিল ছেলেটা, মনটা ভেঙে গেল।” সহঅভিনেত্রী ইন্দ্রাণী সেন ও তাপস পাল একই আবাসনের বাসিন্দা। প্রতিবেশীই বলতে পারেন। শুধু ছবিতে একসঙ্গে কাজ করা নয়। পাশাপাশি থাকার কারণে দুই পরিবারের মধ্যে নিত্য যাতায়াত ছিল। চলতে ফিরতে দেখা হত। কুশল বিনিময় চলত। পুজোর সময় একই সঙ্গে খাওয়া আড্ডা। ইন্দ্রাণীর বাড়িতে আসতেন তাপস পাল। ইন্দ্রাণীও যেতেন তাঁর বাড়িতে। এদিনের খবর শুনে হকচকিয়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, “১৫ বছর ধরে আমরা একই আবাসনের বাসিন্দা। উনি আমার সহ অভিনেতা শুধু নন, প্রতিবেশীও। সবসময় খোঁজখবর নিতাম। অসুস্ত ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। তাপসদা খুব ভুগতেন। তবে তিনি য়ে মুম্বইতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন, তা জানতাম না। এসব ভেবে খুব খারাপ লাগছে।” আরও পড়ুন-Mamata Banerjee On Tapas Pal: 'অভিনয় ও রাজনৈতিক জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হল, আমরা তাঁকে খুব মিস করব', তাপস পালের প্রয়াণে শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির

তাপস পালের প্রয়াণে টুইটারে শোকবার্তা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি লিখেছেন, “বিশিষ্ট অভিনেতা ও প্রাক্তন সাংসদ তাপস পালের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ ভোরে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র  দাদার কীর্তি, সাহেব, ভালোবাসা ভালোবাসা, অনুরাগের ছোঁয়া, অমর বন্ধন ইত্যাদি। তিনি হিন্দি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। তাপস পাল ২০১৪ সালে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের সাংসদ নির্বাচিত হন। পশ্চিমবঙ্গ  সরকার ২০১২ সালে তাঁকে বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে। এছাড়া তিনি ফিল্ম ফেয়ার ও কলাকার পুরস্কার পান। তাঁর প্রয়াণে অভিনয় ও রাজনৈতিক জগতে  অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি প্রয়াত তাপস পালের আত্মীয় পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”

রোজভ্যালি কাণ্ডের জেরে ভুবনেশ্বরের জেলে ১৩ মাস বন্দি থাকার পর গত ছরের শুরুতে জামিন পান তাপস পাল। গ্রেপ্তার পর্বের শেষের দিকে তিনি হাসপাতালেই ছিলেন। জামিনের সময়ও হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, “খুব ভাল নেই। দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছে, কোমরে ব্যথা। তিনটে নার্ভ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সমস্যা আছেই। আমি যদি বলি ভাল আছি, তাহলে তা ভুল উত্তর। কোমরে ব্যথার জন্য দাঁড়াতে পারছি না। ১৩ মাস একটা ঘরের মধ্যে রয়েছি, সেটার কষ্ট তো বুঝতেই পারছেন। বলব, যে কলকাতায় ফিরে যাচ্ছি। আনন্দ হচ্ছে। বাড়িতে যাচ্ছি ভাল লাগছে। ওড়িশার প্রত্যেকটা মানুষকে আমার নমস্কার, আন্তরিক ধন্যবাদ। তারা ভালবাসেন। ওড়িশায় ছবি করেছি। বিচার বিভাগকে আমার স্যালুট। বিচার ব্যবস্থা খুবই ভাল ছিল আছে থাকবে। বিচার ব্যবস্থাকে আমার শ্রদ্ধা। কাছের মানুষের কাছে ফিরছি। আনন্দ হচ্ছে, খুব ভাল লাগছে।”