Lynching: বাংলায় একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা! প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিয়ে
কখনও ছেলেধরা তো কখনও চোর সন্দেহে আবার কখনও অতি তুচ্ছ কারণে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
কলকাতা: বাংলার মানুষ মারমুখী হয়ে উঠেছে! লোকসভা ভোটের পর থেকে বাংলায় অনেকগুলো গণপিটুনির ঘটনা সামনে এসেছে। কখনও ছেলেধরা তো কখনও চোর সন্দেহে আবার কখনও অতি তুচ্ছ কারণে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগেই মানসিক ভারসাম্যহীন এক মাকে শিশু চুরির অভিযোগে চলন্ত ট্রেনের মধ্যে বেধড়ক মারধোর করা হয়। এখনও পর্যন্ত যে কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনা সামনে এসেছে তা সবগুলোই সন্দেহ ও অতি তুচ্ছ কারণে। গত কালকেই হুগিলতে ২৬ বছর বয়সী আশিস বাউল নামের যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এখানেও যুবককে মারার কারণ খুব তুচ্ছ, জোরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় যুবককে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে খুন করা হয়।
এদিকে চোপড়ার লক্ষ্মীপুর গ্রামে গতকাল এক যুগলকে বেধড়ক মারধোর করা হয়। যুগলের অপরাধ তাঁরা পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। দেশের আইনে পরকীয়া সম্পর্ক বৈধ হওয়া সত্ত্বেও গ্রামের লোক গোল হয়ে দাঁড়িয়ে তাঁদের উপর অত্যাচারের দৃশ্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন। অভিযুক্তদের হাতে মার খেতে খেতে তাঁরা দু'জন গুরুতর জখম হয়ে পড়েন, তবুও মানুষ নীরব হয়ে সবটা দেখেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঘটনার ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে।
দেখুন
গত ২৮ এবং ২৯ জুন কলকাতার বউবাজার ও সল্টলেকে শুধুমাত্র সন্দেহের জেরে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। বউবাজারের হস্টেলে মৃত্যু হয় টেলিভিশন মেকানিকের। হস্টেলের ভিতরই মোবাইল চোর সন্দেহে ইরশাদ আলম নামের মেকানিককে আবাসিক ছাত্ররা পিটিয়ে খুন করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গণধোলাই করে খুনের পর হস্টেলের এক ঘণ্টার ফুটেজ মুছে ফেলে অভিযুক্ত ছাত্ররা।
শনিবার সকালে প্রসেন মণ্ডল নামের এক যুবককে মোবাইল চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। মৃত প্রসেন মণ্ডলের ঠাকুমা ভাগ্যপতি মণ্ডল বলেন, বারাবার অনুরোধ করার পরও অভিযুক্তরা তাঁর নাতিকে রেহায় দিল না। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তদের তিনি বলেছিলেন প্রসেন চুরি করলে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে, কিন্তু কিছুতেই সে কথা কানে নেইনি অভিযুক্তরা। মারতে মারতে তাঁকে ফেরেই ফেলে।
এদিকে ঝাড়গ্রামে ঘুরতে গিয়ে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ২২ জুন একটি স্কুটি নিয়ে সৌরভ সাউ ও তাঁর বন্ধু অক্ষয় মাহাতো ঝাড়গ্রাম ঘুরে দেখতে বেরিয়েছিল। বিকেলে বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের দেখে এলাকার লোকজন চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিতে থাকে। তাঁরা যে চোর নয় সে কথায় কান দেয়নি লোকজন, পুলিশ গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের দুজনকে উদ্ধার করে হাপাতালে ভর্তি করে, গতকাল সৌরভ সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে, বন্ধু অক্ষয় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
এভাবে প্রায় প্রতিদিনি একটার পর একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে চলায় সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।