West Bengal BJP CM Face: মমতার ব্যক্তি ক্যারিশ্মাকে টেক্কা দিতে ২৬-র ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করবে বিজেপি, ফেভারিট মিঠুন চক্রবর্তী
বাংলায় এসেই সব গুলিয়ে যাচ্ছে পদ্ম শিবিরের। লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর, তারপর হওয়ায় রাজ্যের দশটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির।
কলকাতা, ২ ডিসেম্বর: West Bengal BJP CM Face: মহারাষ্ট্র থেকে হরিয়ানা। একের পর এক রাজ্যে বিপুল সংখ্যক আসনে জিতে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি (BJP)। উত্তর প্রদেশেও লোকসভায় হারের ক্ষত পূরণ করে বিধানসভা উপনির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু মানিকতলা, হাড়োয়া, সিতাইয়ের মত তৃণমূল গড়ে একেবারে পরাস্ত হয়েছে বিজেপি। আরজি কর আন্দোলনের পরে হওয়া উপনির্বাচনে নিজেদের শক্তিশালী দুর্গ মাদারিহাটও হাতছাড়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গাদের। তার আগে বাগদা, রায়গঞ্জেও নিজেদের আসন ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে পদ্ম শিবির।
একের পর এক ভোটে ভরাডুবির পর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলায় হতে চলা ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। অন্তত এমনটাই জল্পনা। নরেন্দ্র-অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা-র বিজেপিতে কোন রাজ্যে ভোটের আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয় না। অসম থেকে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ওডিশা থেকে কর্ণাটক, তেলাঙ্গানা। সব জায়গাতেই বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর নাম প্রজেক্ট না করে, মোদীকে মুখ করেই লড়ে বিজেপি। আরও পড়ুন-ভোট কমছে হু হু করে, বাংলায় ঘুরে দাঁড়াতে কী কৌশল বিজেপির!
২০২১ বঙ্গ বিধানসভা ভোটের আগেও তেমনটা হয়েছিল। কিন্তু বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মার কাছে কিছুতেই লড়তে না পারা বিজেপি এবার ২৬-র বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করে লড়তে পারে। অন্তত সূত্রের খবর তাই বলছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশে বাংলায় বিধানসভা ভোটের মাস ছয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেবে বিজেপি।
২০২৬-র বিধানসভা ভোটে বাংলায় মমতাকে টেক্কা দিয়ে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে তারকা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। যদিও বিষয়টি এখনও জল্পনার জায়গাতেই রয়েছে। ক'দিন আগেই কলকাতায় বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে মিঠুনের ভাষণ শুনে বেজায় খুশি পদ্ম শিবিরের নেতারা। দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত মিঠুনকে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব বাঙালীই ভালবাসেন। মমতার জনপ্রিয়তাকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা মিঠুনের আছে বলে মনে করছে বিজেপি শিবির। মিঠুন সরাসরি ভোটে লড়তে রাজিও হয়েছেন বলে দাবি। তবে মিঠুনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও কিছু জানানো হয়নি।
রাজ্যের ভোটপ্রাপ্তির হিসেবে তৃণমূলের থেকে বিজেপি গড়ে ৪-৫ শতাংশ পিছিয়ে থাকে। এই পিছিয়ে থাকার পিছনে মমতার ক্যারিশ্মাই প্রধান কারণ বলেই মনে করে পদ্ম শিবির। আর তাই মিঠুনকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রজেক্ট করে লড়লে খেলা ঘুরে যেতে পারে বলে মনে করছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডা-রা। যেহেতু মমতার সঙ্গে ১৫ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা থাকবে, আর মিঠুন কখনও ভোটে লড়েননি তাই ভোটারদের মধ্যে মিঠুনকে নিয়ে হতাশার চেয়ে আশা অনেক বেশী থাকবে। যদিও ২০২১ বিধানসভা, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে মিঠুন বিজেপির হয়ে কোমর বেঁধে নামলেও দল কিছুই করতে পারেননি। কিন্তু বিজেপি নেতারা মনে করছেন, প্রচার আর দলের মুখ, দুটো আলাদা জিনিস। বাংলার আইকন মিঠুনকে রাজ্যের সিংহাসনে দেখতে চাইবেন সবাই। এমনটাই আশা বিজেপির। তবে সেভাবে মাঠেঘাটে না লড়ে একেবারে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হলে মিঠুনকে বঙ্গ বিজেপি নেতা- কর্মীরা কীভাবে মেনে নেন সেটা দেখার। যতই হোক শুভেন্দু অধিকারী, সৌমিত্র খাঁ-দের মত মিঠুনও একটা সময় তৃণমূলেই ছিলেন। এবার দেখার শুভেন্দু, সৌমিত্র-রা মিঠুনকে মুখ করা নিয়ে কী বলেন। শুভেন্দু, সৌমিত্র-র কল্যাণেই ২০২৪ লোকসভায় দক্ষিণবঙ্গে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি বিজেপি।