'Jai Sri Ram' slogan: বঙ্গ সংস্কৃতিতে জয় শ্রী রামের জায়গা নেই, এটি বিজেপির আমদানি: অমর্ত্য সেন
জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে এখন লোকজনকে মারধর করা হচ্ছে। এই সংস্কৃতি বাংলায় ছিল না, ইদানিং কালে এটি আমদানি করা হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তৃতায় জয় শ্রী রাম স্লোগান প্রসঙ্গে মুখ খুলে একথাই বললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
কলকাতা, ৬ জুলাই: জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে এখন লোকজনকে মারধর করা হচ্ছে। এই সংস্কৃতি বাংলায় ছিল না, ইদানিং কালে এটি আমদানি করা হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তৃতায় জয় শ্রী রাম স্লোগান প্রসঙ্গে মুখ খুলে একথাই বললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen ) । আরও পড়ুন-তৃণমূল কাটমানির টাকা থেকে রাজ্যকে ঋণ দিক, মুখ্যমন্ত্রীকে টাকার সমস্যার সমাধান বাতলে দিলেন মুকুল রায়
‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তাঁর স্মৃতিতে কলকাতা’। শুক্রবার বিকেলে এই বিষয়েই বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ (Nobel laureate economist) , তখনই তিনি বলেন বঙ্গ সংস্কৃতিতে জয় শ্রী রামের কোনও উচ্চবাচ্চই কখনও ছিল না। এদিন শিশির মঞ্চে ফের একবার হিন্দুত্বের আস্ফালন নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, ‘যখন শুনি কাউকে রিকশো থেকে নামিয়ে কিছু একটা বুলি আওড়াতে বলা হচ্ছে এবং তিনি বলেননি বলে মাথায় লাঠি মারা হচ্ছে, তখন শঙ্কা হয়। বিভিন্ন জাত, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য আমরা রাখতে দিতে চাই না। ইদানীং এটা বেড়েছে।’’
এদিনের বক্তৃতায় পঞ্চাশের দশকে ‘এলিট’ প্রেসিডেন্সির পড়াশোনা, ছাত্র রাজনীতি থেকে কফি হাউস, কেমব্রিজ থেকে ফিরে এসে তরুণ বামমনস্ক ছাত্রের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পাওয়া এবং সেই সূত্রে অর্থনীতির পাঠ্যক্রম নিয়ে তাঁর ভাবনাচিন্তা— সব প্রসঙ্গই ছুঁয়ে যান অমর্ত্যবাবু। মনে করিয়ে দেন, কলেজ স্ট্রিট, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুরের বৌদ্ধিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল। বক্তৃতা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, জয় শ্রীরাম, রাম নবমী এসব কোনও কিছুর সঙ্গেই বাঙালির কোনও যোগ নেই। এখানে দুর্গাপুজো হয়। বস্তুত, নতুন এই সংস্কৃতি আমদানির পিছনে বিভেদের রাজনীতি কাজ করছে বলেও ইঙ্গিত দেন অমর্ত্যবাবু। তাঁর মতে, এক সময় হিন্দু মহাসভা এ ধরনের সংস্কৃতির আমদানি ঘটানোর চেষ্টা করেছিল বাংলায়। বিভেদের রাজনীতির বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। এখন বিজেপি ঠিক সেই একই উদ্দেশ্যে বাংলায় ‘জয় শ্রীরাম’ সংস্কৃতির আমদানি ঘটানোর চেষ্টা করছে।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের শান্তির বাতাবরণ যে নষ্ট হয়েছে, তা বার বার বিভিন্ন আলোচনায় মনে করিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি যে তলে তলে দেশের সম্প্রীতির পরিবেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন। পূর্বতন মোদি সরকারের কল্যাণই যে দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা তাও-বলতে ছাড়েননি। বার বার কেন্দ্রীয় সরকারের ভুলগুলিকে চিহ্নিত করে দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, তাইতো বিজেপির তরফে ছুটে এসেছে আক্রমণ, কটাক্ষ। দিলীপ ঘোষের মতো বিজেপি নেতা তাঁর সমালোচনায় মুখর। তবে তাতে কী, তিনি তো অমর্ত্য সেন। আজও তাংর কথা শুনতে যাদবপুরের প্রেক্ষাগৃহে ভিড় উপচে পড়ে। এটাই তো বাঙালির সার্থকতা, যেখানে আজ জয় শ্রী রাম শুনলেই অশান্তির ভয়ে লোকজন ঘরে দোর দেয়।