Mohun Bagan: বাঙালির শিল্ড জয় থেকে এটিকে মোহনবাগান, দীর্ঘ যাত্রাপথে ইতিহাসের সম্ভারে পরিপূর্ণ সবুজ মেরুন দল
মোহনবাগানকে ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ফুটবল ক্লাব হিসেবে গণ্য হয়। ১৯১১ সালের ২৯ জুলাই শিল্ড ফাইনালে ইংল্যান্ডের ইস্ট ইর্য়কশায়ার রেজিমেন্টকে ২-১ গোলে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান৷ ২৯ জুলাই মানেই মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে আবেগের দিন। অমর একাদশের বীরত্বকে স্মরণ করে গর্ব করার দিন। মোহনবাগান ফ্যানেরা নিজেদের মেরিনার্স বলে পরিচয় দেয়। রাজ্যজুড়ে মোহনবাগান ফ্যান বেসে মেরিনার্সদের প্রায় শ'খানেকেরও বেশি সমর্থনকারী গোষ্ঠী রয়েছে। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গীয়রা (যাদের কথ্যভাষায় ‘ঘটি’ বা ‘এদেশী’ বলা হয়) তারা হল মোহনবাগানের সমর্থক এবং পূর্ববঙ্গীয়রা হল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সমর্থক।
মোহনবাগানকে (Mohun Bagan) ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ফুটবল ক্লাব হিসেবে গণ্য হয়। ১৯১১ সালের ২৯ জুলাই শিল্ড ফাইনালে ইংল্যান্ডের ইস্ট ইর্য়কশায়ার রেজিমেন্টকে ২-১ গোলে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড (IFA Shield) জিতেছিল মোহনবাগান৷ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ১১ জন বাঙালির সেই খালি পায়ে জয়ের নিশান ওড়ানো শুধু অবিভক্ত বঙ্গদেশ নয়, গোটা ভারতের কাছেই স্বাধীনতার প্রাথমিক স্বাদ এনে দিয়েছিল। ২৯ জুলাই মানেই মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে আবেগের দিন। অমর একাদশের বীরত্বকে স্মরণ করে গর্ব করার দিন। মোহনবাগান ফ্যানেরা নিজেদের মেরিনার্স বলে পরিচয় দেয়। রাজ্যজুড়ে মোহনবাগান ফ্যান বেসে মেরিনার্সদের প্রায় শ'খানেকেরও বেশি সমর্থনকারী গোষ্ঠী রয়েছে।
পুরাতন এই মোহনবাগান ক্লাব এখনও পর্যন্ত সবুজ-মেরুন জার্সি আর সাদা হাফ প্যান্টের ঐতিহ্য বয়ে নিয়ে চলেছে। তাই তো তাদের গানের মধ্যেও উঠে আসে 'আমাদের সূর্য মেরুন'। মোট পাঁচবার এই দল ফুটবলে ভারতের সর্বোচ্চ লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে যা একটি যুগ্ম রেকর্ড। মোট ৩২বার এই দল পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ ক্রিকেট লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দল এশিয়ার প্রাচীনতম ফুটবল ক্লাবগুলির একটি। মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবকে ভারতের জাতীয় ক্লাব বলা হয়। আরও পড়ুন, পরাধীন ভারতে ১১ জন বাঙালির খালি পা এনেছিল প্রথম জয়ের স্বাদ, সবুজ-মেরুন আবেগের নাম মোহনবাগান
১৯১১ সালের ২৯ জুলাই শিল্ড ফাইনালের ওই ঐতিহ্যবাহী ম্যাচটিতে মোহনবাগানের পক্ষে অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ি ও অভিলাষ ঘোষ গোলদুটি করেন। আইএফএ শিল্ড শুরু হয়েছিল সেই ১৮৯৩ সালে। ১৯১১ সালে প্রথম কোনও ভারতীয় দল হিসেবে মোহন বাগান এই টুর্নামেন্ট জেতে। সেদিনের স্মরণেই প্রতিবছর ২৯শে জুলাই ক্লাব তাঁবুতে "মোহনবাগান দিবস" পালিত হয়৷
উত্তর কলকাতার মোহনবাগান অঞ্চলের মিত্র ও সেন পরিবারের সাহায্যে ভূপেন্দ্রনাথ বসু ১৮৮৯ সালের ১৫ আগস্ট ‘মোহনবাগান স্পোর্টিং ক্লাব' প্রতিষ্ঠা করেন। মোহনবাগান ভিলায় ইডেন হিন্দু হোস্টেলের বিরুদ্ধে এই দল প্রথম খেলেছিল। ১৯৭৭ সালে মোহনবাগান বিখ্যাত নর্থ আমেরিকান সকার লিগ দল নিউ ইয়র্ক কসমসের বিরুদ্ধে একটি মৈত্রী ফুটবল ম্যাচ খেলে। এই ম্যাচে পেলে নিউ ইয়র্ক কসমসের হয়ে খেলেছিলেন। ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ম্যাচে ৮০,০০০ দর্শক এসেছিলেন। ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয় এবং তারকাসমন্বিত কসমসের খেলোয়াড়েরা মোহনবাগান খেলোয়াড়দের বিস্তর প্রশংসা করেন।
সব খেলার থেকে প্রিয় বাঙালির কাছে ফুটবল, তা নিয়ে আবেগের অন্ত নেই। ফুটবলকে কেন্দ্র করে বাংলায় অনেক ছবি হয়েছে। তবে মোহনবাগানকে নিয়ে তৈরি হয়েছে দু'যুগে দুইটি চলচ্চিত্র। ১৯৭৫ সালে মনু সেনের পরিচালিত চলচ্চিত্র "আমি মোহনবাগানের মেয়ে", ২০১১ সালে অরুণ রায় পরিচালিত ছবি "এগারো"।
২০১৯ সালে বিভিন্ন দেশের প্রাচীনতম সক্রিয় ফুটবল ক্লাবের সম্মেলন ক্লাব অফ পাইয়োনিয়ারস-এর সদস্যপদ লাভ করে মোহনবাগান। মোহনবাগান চলতি বছরেই গাঁটছড়া বেঁধেছে এটিকের সঙ্গে। ক্লাবের নতুন নাম ‘এটিকে মোহনবাগান’। এই নামেই প্রথমবার আইএসএল খেলছে সবুজ মেরুন এই ক্লাব।