খরা কাটাতে জীবনকেই বাজি রাখলেন, ২০হাজার মহিলার প্রচেষ্টায় জলে ভরল এই নদী

বছরের পর বছর ধরে ভুগতে থাকা জলকষ্টের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে চেয়েছিলেন মহিলারা, তাই দশের লাঠি একের বোঝা নীতিকেই মান্যতা দিয়ে সবেমিলে সফল করলেন অসম্ভবকে, মৃতপ্রায় শুকিয়ে যাওয়া নদীকে যৌবনবতী করল প্রমীলা বাহিনী।

নাগানধি নদী।( ছবি: টুইটার)

ভেলোর, ১৯জুন:  বছরের পর বছর ধরে ভুগতে থাকা জলকষ্টের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে চেয়েছিলেন মহিলারা, তাই দশের লাঠি একের বোঝা নীতিকেই মান্যতা দিয়ে সবেমিলে সফল করলেন অসম্ভবকে, মৃতপ্রায় শুকিয়ে যাওয়া নদীকে যৌবনবতী করল প্রমীলা বাহিনী। এই ফুটিফাটা গরমেও তিরতিরে জল রেখায় বহতা নদী থেকে ফোকলা দাঁতে হাসেন ভারতীদেবী। সেদিন হাল না ধরলে এই দৃশ্য তো স্বপ্নেই থেকে যেত, তাই না। গল্পটা বাস্তবের মতোই কঠোর, তামিলনাড়ুর ভেলোর Tamilnadu - Vellore। মৃতপ্রায় একটা নদী, তাকে বাঁচাতে দীর্ঘ চার বছর ধরে ২০০০০ মহিলার নিরলস প্রচেষ্টা চলেছে।

তামিলনাড়ুর ভেলোরের নাগানধি নদী বেঁচে গেল অবশেষে। একই সঙ্গে জলকষ্টের হাত থেকে বাঁচল একটা বড় জনপদ। তামিলনাড়ুর যে ২৪টি জেলা খরাপ্রবণ, তার মধ্যে অন্যতম ভেলোর। এই ভেলোরের মানুষদের কাছে বেঁচে থাকার, জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় জলের উৎস ছিল একমাত্র এই নাগানধি  (Naganadhi river) । কিন্তু ১৫ বছর আগেই এই নদীটি শুকোতে শুকোতে মৃতপ্রায় হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে নাগানধি বাঁচাও প্রকল্পের ডিরেক্টর চন্দ্রশেখরণ কুপ্পান বলছেন, “কোনও নদীকে পুনরায় বাঁচিয়ে তোলার জন্য শুধু তার বহমানতার দিকে নজর দিতে হয়, তা তো নয়।  নদীর গভীরতাও যাতে ঠিক থাকে সেদিকেও নজর দিতে হয়। এক্ষেত্রে বৃষ্টির জলও যাতে মাটি শুষে নিয়ে জমিয়ে রাখে সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তো বটেই।  তাই বৃষ্টি হলে সেটা এজাতীয় নদীর ক্ষেত্রে খুব কাজে দেয়। ” ২০১৪ সালে এই প্রকল্পটি শুরু হয়। সাফল্য আসে ২০১৮তে।

ভেলোরের ক্ষেত্রে ২০ হাজার মহিলার চার বছরের প্রচেষ্টায় ১৫ বছর আগে শুকিয়ে যাওয়া নাগানধিকে ২০১৮ তে আবারও স্রোতস্বিনী করে তোলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৩৫০০ কুয়োর জল এবং প্রচুর নুড়ি পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে বর্ষার জল অগভীর খাতেও বয়ে চলতে পারে, এবং নদীটি বহমানতা পায়। আজ ভরাগরমেও নাগানধিতে জল, বিজয়ের অশ্রু সফল মহিলাদের চোখেও।