ইদ মুবারক: খুশির ইদে মাতোয়ারা মহাপ্রভুর স্মৃতিধন্য শান্তিপুরের শতাব্দী প্রাচীন মসজিদ
সম্প্রীতির ইদ।
কলকাতা, ৫ জুন: গোটা দেশের পাশাপাশি ধুমধামের সঙ্গে খুশির ইদ পালিত হচ্ছে এরাজ্যেও। ইদের আনন্দে মেতেছে মহাপ্রভুর স্মৃতিবিজড়িত শান্তিপুরের (Santipur) বাসিন্দারা। এখানেই রয়েছে মুঘল আমলের শতাব্দী প্রাচীন তোপখানা মসজিদ। প্রাচ ৪০০ বছরের এই মসজিদে ইদ-উল-ফিতরের (Eid-Ul-Fitr) নামাজে অংশ নিতে দূর দূর থেকে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এখানে আসেন। নামাজে শরিক হন। এই খুশির ইদে সেখানে জনতার ঢল নেমেছে। আরও পড়ুন-ইদের খুশি, মেনুতে থাক শির খুরমা-র লোভনীয় পুডিং
মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে তৈরি এই তোপখানা মসজিদ। বয়স আনুমানিক ৪০০ বছর। ইদের দিন তো বটেই নানা মুসলিম পরব যেমন ইদ-উল-ফিতর, ইদ-উদ-জোহা, ফতেয়া-দোয়াজ-দাহাম উপলক্ষ্যেও প্রার্থণার জন্য এই মসজিদে জমায়েত হয় বিপুল। বুধবার ইদের সকালে শান্তিপুরের তোপখানা মসজিদে (Topkhana Mosque) এক অন্য মেজাজ। নতুন ভাবে সেজে উঠেছে মসজিদ চত্বর। সকাল থেকে নমাজের জন্য মানুষ ঢল নেমেছে। চতুর্দিকেই উৎসবের আবহ।
দুঃখের বিষয় হল মসজিদের বেশিরভাগ অংশই এখন ভগ্নপ্রায়। মসজিদের বর্তমান ইমামের বক্তব্য তাঁরা অনেকবার আবেদন করেছেন, তবে প্রশাসনের তরফ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি। ভাঙা দেওয়াল নিয়েই বছরের পর বছর সকল ধর্মের কাছে সম্প্রীতির বার্তা বহন করছে এই মসজিদ, এমনটাই জানিয়েছেন মসজিদের সম্পাদক কালু শেখ। তাঁর কথায়, ‘‘অতীতে এখানে শুধু মুসলিমদের বাস ছিল। বর্তমানে এই মসজিদ ঘিরে গড়ে উঠেছে হিন্দুদের বসতি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি এই এলাকায়।’’
বলা বাহুল্য, তোপখানা মসজিদের নির্মাণকাল এবং নির্মাণপর্ব নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে। ইতিহাস বলে, তোপখানা মসজিদের নির্মাণের পরিকল্পনা হয়েছিল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালের শেষ দিকে। শান্তিপুরের তৎকালীন ফৌজদার গাজী মোহাম্মদ ইয়ার খান ১৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে এই সুদৃশ্য মসজিদটি নির্মাণ করেন। আবার এমনও শোনা গেছে, পাঠান আমলে এখানে সন্ত হজরত শাহ সৈয়দ মেহবুব আলম নামের একজন কাজী থাকতেন। জনশ্রুতি তাঁর অনেক রকমের ঐশ্বরিক ক্ষমতা ছিল, যার মাধ্যমে তিনি ধর্ম নির্বিশেষে সবার সেবা করতেন। এখানে তিনি এক মাজার তৈরি করেন। সেই মাজার থেকেই পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে এই মসজিদ। আবার পাঠান সৈন্যরা প্রার্থনার জন্য এমন মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন এমন কথাও শোনা যায়।