Rabindranath Tagore 159th Birth Anniversary: রবি ঠাকুরের ভাবনার ফসল ছিল রাখীবন্ধন থেকে শ্রীনিকেতন
১৯০৫-র ১৯ জুলাই, ব্রিটিশ শাসনাধীনে দেশ তখন উত্তাল। ততদিনে ইংরেজদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ঘাঁটি হয়ে উঠেছে বাংলা অর্থাৎ বাংলা, বিহার, অসম, শ্রীহট্ট। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবরে তৎকালীন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের লর্ড কার্জনের আদেশে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করা হয়। বাংলা বিভক্ত করে ফেলার ধারণাটি অবশ্য কার্জন থেকে শুরু হয়নি। ১৭৬৫ সালের পর থেকেই বিহার ও উড়িষ্যা বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে সরকারী প্রশাসনিক এলাকা হিসেবে বাংলা অতিরিক্ত বড় হয়ে যায় এবং ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে।
১৯০৫-র ১৯ জুলাই, ব্রিটিশ শাসনাধীনে দেশ তখন উত্তাল। ততদিনে ইংরেজদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ঘাঁটি হয়ে উঠেছে বাংলা অর্থাৎ বাংলা, বিহার, অসম, শ্রীহট্ট। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবরে তৎকালীন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের লর্ড কার্জনের আদেশে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করা হয়। বাংলা বিভক্ত করে ফেলার ধারণাটি অবশ্য কার্জন থেকে শুরু হয়নি। ১৭৬৫ সালের পর থেকেই বিহার ও উড়িষ্যা বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে সরকারী প্রশাসনিক এলাকা হিসেবে বাংলা অতিরিক্ত বড় হয়ে যায় এবং ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব ঘোষণা করেন। ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাকে দু’ভাগ করে কঠোরভাবে শাসন-শোষণ করার জন্য। হিন্দু জনসংখ্যার আধিক্য যেখানে সেই এলাকাগুলিকে আলাদা করা হবে মুসলিম অধ্যুষিত বাংলা থেকে।
ঘটনাচক্রে বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব দেওয়া হয় ১৬ আগস্ট, আর সেদিন ছিল রাখী পূর্ণিমা। হিন্দু ঘরে বোনেরা ভাইয়ের হাতে রাখি পরায়, সেসময় রবি ঠাকুরের মাথায় আসে অভিনব চিন্তা।হিন্দুদের উৎসব রাখীবন্ধন হয়ে উঠল হিন্দু-মুসলিমের সম্প্রীতির উৎসব। সেদিন ধর্ম মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছিল, এ ধর্মের মানুষ ওই ধর্মের মানুষের হাতে ভালবেসে পরিয়ে দিয়েছিল রাখি। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখী বন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন। তিনি কলকাতা, ঢাকা ও সিলেট থেকে হাজার হাজার হিন্দু ও মুসলিম ভাই ও বোন কে আহ্বান করেছিলেন একতার প্রতীক হিসাবে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করার জন্য। সেসময় দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা চরম পর্যায়ে ছিল। ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে হিন্দু ও মুসলিম এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা আনার জন্য রাখী বন্ধন উৎসব পালন করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, শান্তিনিকেতন শহরটা গড়ে তুলেছিলেন রবীন্দ্রনাথের বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। বীরভূমের বোলপুর জেলার ছোট্ট একটি শহর শান্তিনিকেতন। মেঠো গ্রামের রাস্তা দিয়ে তিনি যখন যেতেন। সেসময় এই জায়গাটি তাঁর ভীষণ পছন্দ হয়। ধ্যান এবং উপাসনার জন্য একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, নাম দিয়েছিলেন ‘শান্তিনিকেতন’। বাবার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই এখানে ঘুরতে যেতেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যখন তিনি ছোট ছিলেন। তখন থেকেই এই জায়গা তাঁর মনে ধরেছিল। পরবর্তীকালে ১৯০১ সালে সেখানে একটি স্কুল তৈরি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ব্রহ্মচর্যাশ্রম। এই স্কুল তৎকালীন ইংরেজি আদবকায়দার শিক্ষার চরম বিরোধী ছিল। চার দেওয়ালের ভিতরে থেকে শিক্ষার চরম বিরোধী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেখান থেকেই তৈরি হয় এই স্কুল। পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে গিয়ে প্রকৃতির সংস্পর্শে জ্ঞান অর্জন করতেন পড়ুয়ারা।
১৯২১ সালে স্কুলটিই আসতে আসতে কলেজ হিসেবে তৈরি হয়। রবীন্দ্রনাথ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেন বিশ্বভারতী। নোবেল পুরষ্কারের টাকা এই কলেজ তৈরিতে দান করেন রবি ঠাকুর। শ্রীনিকেতন তৈরির পিছনেও রয়েছে রবীন্দ্রনাথের বিশেষ ‘উপলব্ধি’। দেশের অর্থনীতি কৃষির উপরই নির্ভর, কৃষির উন্নতিতেই দেশের উন্নতি হবে। সেই উপলব্ধি থেকেই তৈরি শ্রীনিকেতন, যার ট্যাগলাইন ছিল- ‘ফিরে চল মাটির টানে’। শ্রীনিকেতন মারফত কৃষিকাজ আরও বাড়ানোর কাজ চলত। এছাড়াও পুকুর সংস্কার, রবিশস্য এবং শীতকালীন চাষে গ্রামবাসীকে উৎসাহিত করত।