Durga Puja 2023: প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয় রাত্রি ধরে দুর্গার নয়টি শক্তির পুজো, রইল তাঁদের পরিচয় ও নাম

আশ্বিনের শুক্লা প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নবরাত্রি ব্রত পালন করা হয়। অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয় রাত্রি ধরে দুর্গার নয়টি শক্তির যে পুজো হয় তাকেই নবরাত্রি বলে।

Navratri Image 2023 Photo Credit: Facebook

পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে, এই শারদ আনন্দে  বাঙালিরা যেমন মেতে ওঠেন দুর্গাপুজোয় তেমনি অবাঙালিরা নয় দিনের জন্য মেতে থাকেন নবরাত্রিতে। এই বছর ১৫ অক্টোবর রবিবার থেকে শুরু হবে নবরাত্রি (Navratri 2023)। চলবে ২৪  অক্টোবর দশমী পর্যন্ত।আশ্বিনের শুক্লা প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নবরাত্রি ব্রত পালন করা হয়। অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয় রাত্রি ধরে দুর্গার নয়টি শক্তির যে পুজো হয় তাকেই নবরাত্রি (navratri) বলে। শরৎ কালে এই উত্‍সব হয় বলে একে শারদ নবরাত্রিও বলা হয়ে থাকে। দশমীতে শেষ হয় এই পুজো।

রামায়ণ অনুসারে ত্রেতাযুগে শ্রীরামচন্দ্র শারদীয়া দুর্গাপূজার প্রচলন করেন। রাবণ বধ করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য রামচন্দ্র দুর্গতিনাশিনী দুর্গার অকালবোধন করে নবরাত্রির ব্রত পালন করেছিলেন। নবরাত্রি (navratri) ব্রত আশ্বিনের শুক্লা প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত। ব্রহ্মা দুর্গার এই নয়টি রূপের নামকরণ করেছিলেন। নয়টি নামের নয়টি বৈচিত্র্যময় রূপভেদ রয়েছে। এই নয়টি রূপের নাম হল- শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘন্টা, কুষ্মান্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী,সিদ্ধিদাত্রী।

শৈলপুত্রী- নবরাত্রির প্রথম দিনে মা শৈলপুত্রীর আরাধনা করা হয়। শৈলপুত্রীর বাহন বৃষ । তাঁর দক্ষিণ হাতে ত্রিশূল আর বাম হস্তে কোমল থাকে। তাই দেবীর অপর নাম শূল-ধরিনি। শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা হবার জন্য দেবীর এক নাম শৈলপুত্রী। এবং পরজন্মে তিনি দেবাদিদেব শিবকেই পতি-রূপে বরণ করেন।

ব্রহ্মচারিণী-দেবী পার্বতীর নবশক্তির দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণী। এখানে ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ হল তপস্যা। ব্রহ্মচারিণী অর্থাৎ তপশ্চারিণী বা তপ আচরণকারী। কথিত আছে যে,‘বেদস্তত্ত্বং তপো ব্রহ্ম’বেদ, তত্ত্ব এবং তপ হল ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ। দেবী ব্রহ্মচারিণীর রূপ- জ্যোতিতে পূর্ণ, অতি মহিমামণ্ডিত। তিনি ডান হাতে রুদ্রাক্ষের জপের মালা এবং বাঁ হাতে কমণ্ডলু ধারণ করে থাকেন।

চন্দ্রঘণ্টা- তৃতীয় রাতে পুজো হয় নবদুর্গার তৃতীয় রূপ চন্দ্রঘণ্টার। এখানেমস্তকে অর্ধচন্দ্র থাকে, তাই দেবীকে চন্দ্রঘণ্টা নামে ডাকা হয়। দেবীর এই স্বরূপ পরম কল্যাণকারী। এঁনার শরীরের রং স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল। এই দেবী দশভুজা। দেবীদুর্গার মহিষাসুর বধের জন্য দেবরাজ ইন্দ্রের প্রদত্ত ঘণ্টা যার মধ্যে গজরাজ ঐরাবতের মহাশক্তি নিহিত ছিল, চন্দ্রের চেয়েও সুন্দরী ইনি। তাঁর হাতে কমণ্ডলু, তরোয়াল, গদা, ত্রিশূল, ধনুর্বাণ, পদ্ম, জপমালা থাকে।

কুষ্মাণ্ডা- নবরাত্রের চতুর্থদিনে, অর্থাৎ চতুর্থী তিথিতে মাতৃপ্রাণ ভক্তগণ এই কুষ্মাণ্ডারূপেই আদ্যাশক্তিকে আহ্বান করে থাকেন। দেবী পার্বতী তাঁর চতুর্থ স্বরূপে “কুষ্মাণ্ডা” নামে পরিচিতা। উষ্মার অর্থ হল তাপ। দুর্বিষহ ত্রিতাপ হল কুষ্মা, যিনি এই ত্রিতাপ নিজের উদরে বা অন্ডে ধারণ করেন। দেবী সিংহবাহিনী, ত্রিনয়নী ও অষ্টভুজা। আটটি হাতে সুদর্শনচক্র, ধনুর্বাণ, রক্তপদ্ম, কমণ্ডলু, ইত্যাদি দৃষ্টিগোচর হয়। দেবীর বামহস্তে একটি অমৃতপূর্ণ কলসও রয়েছে। কথিত আছে, দেবী তাঁর এই রূপে মহাবিশ্বের সৃষ্টি করেছিলেন। তাই তিনি এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা হিসেবে পূজিতা হন। এখানে অমৃত ব্রহ্মের রূপক, দেবী ভগবতী পার্বতী অমৃতপূর্ণ কলস অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞানের আধার হাতে নিয়ে বসে থাকেন।

স্কন্দমাতা- পঞ্চম রাতে পুজো হয় নবদুর্গার পঞ্চম রূপ স্কন্দমাতার। মা দুর্গার পঞ্চম শক্তি হল স্কন্দমাতা। স্কন্দের জননী হওয়ায় তাঁকে স্কন্দমাতা বলা হয়। কার্তিকের আর এক নাম স্কন্দ। আর দেবী হলেন দেব সেনাপতি কার্তিকেয় বা স্কন্দের মা। হিন্দুদের বিশ্বাস, সূর্য মণ্ডলের প্রধান দেবতা হওয়ার কারণে, তাঁর সুন্দর চিত্রটি বিশ্বজুড়ে আলোকিত হয়েছে।

কাত্যায়নী- ষষ্ঠ রাতে পুজো হয় নবদুর্গার ষষ্ঠ রূপ কাত্যায়নীর। এই নাম এবং রূপের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক পৌরাণিক কাহিনি। বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন।এক পুত্রের পিতা কাত্যায়নের ইচ্ছে হয় একটি কন্যাসন্তান লাভের। দেবী পার্বতীর তপস্যা করে তিনি ইচ্ছে পূর্ণ করেন । তার স্তবে তুষ্ট হয়ে স্বয়ং দেবী পার্বতী জন্ম নেন মহারিশি কাত্যায়নের কন্যা রূপে। তখন তাঁর নাম হয় কাত্যায়নী। দেবী পার্বতী এই রূপ নিয়ে মহিষাসুরকে বধ করেন।

কালরাত্রি- সপ্তম রাতে পুজো হয় নবদুর্গার সপ্তম রূপ কালরাত্রির। এখানে দেবী কৃষ্ণবর্ণা । আলুলায়িত কেশে তিনি ধাবিত শত্রুর দিকে। তাঁর কণ্ঠে বিদ্যুতের মালিকা। ত্রিনয়নী দেবীর শ্বাস-প্রশ্বাসে বেরিয়ে আসে আগুনের হলকা। ভীষণদর্শনা দেবীর তিন হাতে অস্ত্র। এক হাতে ভক্তদের প্রতি বরাভয়। এই রূপই পুজো করা হয় কালীকে, তবে এই রূপেও দেবী ভক্তের শুভ করেন। তাই অন্যদিকে তিনি শুভঙ্করী । দেবীর বাহন গর্দভ।

মহাগৌরী- প্রচলিত বিশ্বাস, নবরাত্রির অষ্টম রাতে দেবীর পুজো করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। হিমায়লকন্যা ছিলেন গৌর-বর্ণা। শিবের তপস্যা করে রৌদ্রে তিনি কৃষ্ণা হন । মহাদেব যখন গঙ্গাজল দিয়ে তাঁকে স্নান করান, তখন তিনি হয়ে ওঠেন ফর্সা । তাঁর এই রূপের নাম হয় মহাগৌরী। সাদা পোশাক পরিহিতা, চার হাত বিশিষ্টা দেবীর বাহন ষাঁড় ।দেবীর এক হাতে রয়েছে শোভিত বরাভয় মুদ্রা। বাকি তিন হাতে থাকে পদ্ম, ত্রিশূল এবং ডমরু।

সিদ্ধিদাত্রী- নবদুর্গার নবম তথা শেষ রূপ হল সিদ্ধিদাত্রী। ‘মার্কণ্ডেয় পুরাণে’-এ ‘সিদ্ধিদাত্রী’অষ্টভুজা ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের শ্রীকৃষ্ণজন্ম খণ্ডে ‘সিদ্ধিদাত্রী’ অষ্টাদশভুজা। ‘সিদ্ধিদাত্রী’ চতুর্ভুজা রূপেও দেখা যায়। সেখানে তিনি শিবের আরাধ্য। সিংহবাহিনী দেবীর চার হাতে আশীর্বাদী মুদ্রা। তিনি সিদ্ধি দান করেন। অর্থাত্‍ তার উপাসনায় সংসারে আসে সুখ এবং সমৃদ্ধি। সবাইকে বরাভয় দেন এই মাতৃকামূর্তি। দেবী ভগবত্‍ পুরাণে আছে, স্বয়ং মহাদেব দেবী পার্বতী কে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করেছিলেন ও তার ফলে মহাদেব সকল সিদ্ধি লাভ করেন।

(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)

Share Now

Share Now