গুজরাট দাঙ্গায় গণ ধর্ষিতা বিলকিস বানোকে কেন এখন আর্থিক সাহায্য ও চাকরি দেওয়া হয়নি, গুজরাট সরকারকে তিরস্কার সুপ্রিম কোর্টের
২০০২সালে গোধরা কাণ্ডের দাঙ্গায় গণধর্ষণের সশিকার বিলকিস বানোর ক্ষতিপূরণ বাবদ আর্থিক সাহায্য ও অন্যান্য সুয়োগ সুবিধার কিছুই দেয়নি গুজরাট সরকার। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরেও বেশ কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। তারপরও কেন এই বিষয়ে নড়ে বসেনি গুজরাট এনিয়ে এদিন ক্ষোভ উগরে দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে গুজরাটের রাজ্যসরকারকে রীতিমতো তিরস্কার করে বলা হল, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে নির্যাতিতা বিলকিস বানোর হাতে ক্ষতিপূরণের ৫০ লক্ষ টাকা, চাকরি এবং বাসস্থান তুলে দিতে হবে।
নতুন দিল্লি, ৩০ সেপ্টেম্বর: ২০০২সালে গোধরা কাণ্ডের দাঙ্গায় গণধর্ষণের শিকার বিলকিস বানোর ক্ষতিপূরণ বাবদ আর্থিক সাহায্য ও অন্যান্য সুয়োগ সুবিধার কিছুই দেয়নি গুজরাট সরকার। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরেও বেশ কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। তারপরও কেন এই বিষয়ে নড়ে বসেনি গুজরাট এনিয়ে এদিন ক্ষোভ উগরে দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে গুজরাটের রাজ্যসরকারকে রীতিমতো তিরস্কার করে বলা হল, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে নির্যাতিতা বিলকিস বানোর হাতে ক্ষতিপূরণের ৫০ লক্ষ টাকা, চাকরি এবং বাসস্থান তুলে দিতে হবে। ২০০২ সালের ৩ মার্চ গুজরাতে গণধর্ষণের শিকার হন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস (Gujarat riots victim Bilkis Bano)। তাঁর চোখের সামনেই খুন করা হয় পরিবারের ১৪ জন সদস্যকে, যার মধ্যে ছিল তাঁর সাড়ে শিশুকন্যা সালেহাও।
ধর্ষণ করে খুন করা হয় ওই পরিবারের আরও কয়েক জন মহিলা সদস্যকে। সেই থেকে টানা ১৭ বছর আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন বিলকিস বানো। শেষমেশ এ বছর এপ্রিল মাসে বিলকিস বানোকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা, সরকারি চাকরি এবং বাসস্থান দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু এত দিনেও তা করে উঠতে পারেনি গুজরাট সরকার। বিলকিস বানো কাণ্ডে গুজরাট পুলিশের বিরুদ্ধে আগেই তদন্ত বিপথে চালিত করার অভিযোগ উঠেছিল। তাতে জড়িত অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধেও অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আরও পড়ুন-‘যোগীর রাজ্যে অপরাধী নিরাপদে থাকে আর নির্যাতিতার প্রতিবাদকে দমিয়ে দেয় বিজেপি সরকার’, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের নির্দেশিকা মানেনি গুজরাট সরকার। ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় সম্প্রতি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস বানো। এ দিন আদালতে তাঁর সেই আবেদনের শুনানি চলাকালীনই গুজরাত সরকারকে তিরস্কার করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ক্ষতিপূরণ দিতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চান। জবাবে তার গুজরাট সরকারের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, রাজ্য চায় ক্ষতিপূরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হোক। সেই মর্মে আবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু তাঁর আর্জি খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি (CJI) রঞ্জন গগৈ (Ranjan Gogoi) নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানায়, ‘‘পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখেই ক্ষতিপূরণ বাবদ নগদ টাকা, চাকরি এবং মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের বন্দোবস্ত করে দিতে বলা হয়েছিল। তাই নতুন করে তা পর্যালোচনা করে দেখার প্রশ্ন ওঠে না। আগামী দু’সপ্তাহ সময় দিলাম আপনাদের। তার মধ্যে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিতে হবে। যদিও এতটা সময়ও প্রয়োজন ছিল না আপনাদের।’’